April 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, August 29th, 2021, 1:16 pm

একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী আর নেই

একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী আর নেই। আজ সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকায় নিজ বাসায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গত ৬ মাস আগে তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএসইউ) অনকোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সারওয়ার আলমের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেন। কিন্তু ক্যানসার তার শ্বাসযন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তিনি কিছু খেতে পারছিলেন না। কেমো থেরাপি নেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থাও তার ছিল না। চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় চলছিল তার চিকিৎসা। সবশেষ ক্যানসারের কাছে তিনি পরাজিত হলেন।
সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২১ সালে বুলবুল চৌধুরী একুশে পদক লাভ করেন। বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান ২০১১ সালে। এছাড়া তিনি হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, জসীমউদদীন স্মৃতি পুরস্কার এবং ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।
বাংলা একাডেমির জনসংযোগ কর্মকর্তা পিয়াস মজিদ জানান, আগামীকাল বেলা ১১টায় বাংলা একাডেমিতে নেয়া হবে বুলবুল চৌধুরীর মরদেহ। তবে দাফনের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
অতি সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যন্ত বুলবুল চৌধুরী ১৯৪৮ সালের ১৬ আগস্ট গাজীপুরের দক্ষিণবাগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পড়ালেখা করেছেন তখনকার জগন্নাথ কলেজে। জগন্নাথ কলেজে গল্প লেখা প্রতিযোগিতায় ‘জোনাকি ও সন্নিকট কেন্দ্র’ গল্পের জন্য দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন।
তার প্রথম লেখা বের হয় ১৯৬৭ সালে। তার প্রথম প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ‘টুকা কাহিনী’। আত্মপ্রকাশের শুরুতেই এ গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি সাহিত্য জগতে সাড়া ফেলতে সক্ষম হন।
তিনি নিজের অধিকাংশ লেখায় গ্রামীণ জীবনকে নানা আঙ্গিকে উপস্থাপন করেছেন। এছাড়া নগরায়ণের জটাজালও তার লেখালেখিতে অনন্য বিচিত্রতায় উঠে আসে।
লেখালেখির বাইরে পেশাগত জীবনে বুলবুল চৌধুরী সাংবাদিকতার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বহুদিন। কাজ করেছেন দেশের প্রথম সারির বিভিন্ন দৈনিকে। তার প্রকাশিত ছোট গল্পগ্রন্থগুলো হলো- ‘টুকা কাহিনী’, ‘পরমানুষ’, ‘মাছের রাত’ ও ‘চৈতার বউ গো’। তার লেখা উপন্যাসের তালিকায় রয়েছে- ‘অপরূপ বিল ঝিল নদী’, ‘কহকামিনী’, ‘তিয়াসের লেখন’, ‘অচিনে আঁচড়ি’, ‘মরম বাখানি’, ‘এই ঘরে লক্ষ্মী থাকে’, ‘ইতু বৌদির ঘর’ এবং ‘দখিনা বাও’। তার আত্মজৈবনিক দুটি গ্রন্থের নাম ‘জীবনের আঁকিবুঁকি’ ও ‘অতলের কথকতা’। ‘গাঁওগেরামের গল্পগাথা’, ‘নেজাম ডাকাতের পালা’, ‘ভালো ভূত’ আর ‘প্রাচীন গীতিকার গল্প’ নামক কিশোর গ্রন্থের রচয়িতাও তিনি।
বুলবুল চৌধুরী’র মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী আজ এক শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শোকবার্তায় মন্ত্রী বলেন, কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী তার লেখনীর মাধ্যমে পাঠকের হৃদয়ে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবেন।
শোকবার্তায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বুলবুল চৌধুরীর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। শোকবার্তায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী তার লেখনীর মাধ্যমে পাঠকের হৃদয়ে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবেন।

—বাসস