April 26, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, May 15th, 2021, 12:10 pm

পৃথিবীর দুই মেরু অঞ্চলের অজানা যত তথ্য

নিউজ ডেক্স :

বরফ আচ্ছাদিত পৃথিবীর দুই মেরু অঞ্চল। একটি অ্যান্টার্কটিকা, অন্যটি আর্কটিক। পৃথিবীর জলবায়ু ও বাস্তুসংস্থান রক্ষায়, এ দুই অঞ্চল কি ভূমিকা রাখে, সে সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই। পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষায় বরফে ঘেরা এই দুই অঞ্চলের ভূমিকার শেষ নেই।

পৃথিবীর সর্বদক্ষিণের মেরু অঞ্চল অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ। পুরু বরফে ঘেরা এ মহাদেশের চারপাশে সমুদ্র। জনমানবশূন্য এ অঞ্চলে কোন সরকার নেই, আদিবাসীও নেই। বিজ্ঞানীদের জন্যই সংরক্ষিত এই অঞ্চল। এ অঞ্চলে গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীরা যেতে পারেন, কিন্তু কোনো দেশই এ মহাদেশের মালিক নয়।

অ্যান্টার্কটিকার জন্য আলাদা নীতি আছে অ্যান্টার্কটিক ট্রিটি সিস্টেম নামে, যেটি ১৯৫৯ সালে স্বাক্ষর করা। এতে এখন পর্যন্ত স্বাক্ষর করেছে ৩৮টি দেশ। অ্যান্টার্কটিক ট্রিটিতে স্বাক্ষর করা দেশগুলোর নাগরিকদের এ মহাদেশ ভ্রমণে কোনো অনুমতি লাগে না।

অ্যান্টার্কটিকায় দুই ধরনের উদ্ভিদ পাওয়া যায়। অ্যান্টার্কটিকা ভ্রমণে যেতে হলে জনপ্রতি গুনতে হয় ১০ হাজার ডলার। অ্যান্টার্কটিকার নিকটবর্তী দেশগুলো হলো দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, চিলি আর আর্জেন্টিনা।

অ্যান্টার্কটিকায় পেঙ্গুইনদের রাজত্ব চলে। সেখানে আছে সিল, তিমি আর অনেক ধরনের সামুদ্রিক পাখি। অ্যান্টার্কটিকা বিশ্বের ৯০ শতাংশ বরফ আর ৭০ শতাংশ বিশুদ্ধ পানির উৎস।

অ্যান্টার্কটিকার আয়তন এক কোটি ৪২ লাখ স্কয়ার কিলোমিটার, অস্ট্রেলিয়ার দ্বিগুণ। অ্যান্টার্কটিকায় কোনো বিমানের যাতায়াত নেই। শীত মৌসুমে তাপমাত্রা মাইনাস ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে। মৌসুম ভেদে এ অঞ্চলে ভ্রমণে আসেন এক হাজার থেকে ৫ হাজার মানুষ। ১৮২০ সালে আবিস্কৃত হয় পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম এ মহাদেশ।

পৃথিবীর উত্তরে অবস্থিত আরেক মেরু অঞ্চল আর্কটিক। আর্কটিক মূলত একটি সাগর। সাগরের উপরিভাগের পুরোটাই পুরু বরফে আচ্ছাদিত। আর্কটিক অঞ্চলের আশপাশে আছে কানাডা, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, রাশিয়া আর যুক্তরাষ্ট্র।

এই ৮টি দেশই সম্মিলিতভাবে আর্কটিক অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করে। আর্কটিক অঞ্চলের স্থায়ী বাসিন্দা পোলার বিয়ার। এ ছাড়া বিচিত্র কিছু প্রাণির বসবাস আছে এই অঞ্চলে। শীতে তাপমাত্রা সর্বনিম্ন মাইনাস ৬৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে। আর্কটিক অঞ্চলে অন্তত ৪০ লাখ মানুষ বাস করে।

বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে এই তুই অঞ্চলের ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিবছর আশঙ্কাজনকহারে কমছে এই দুই মেরু অঞ্চলের বরফ। বরফের স্বচ্ছ স্তর পৃথিবীতে আসা সূর্য রশ্মির ৫০ থেকে ৭০ শতাংশই মহাকাশে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু উপরিভাগের বরফ গলায় সমুদ্রের নিচে অন্ধকার অঞ্চলে পৌঁছে যাচ্ছে তাপমাত্রা।

এ অঞ্চল ৯০ শতাংশ সূর্যরশ্মি শোষণ করে নিচ্ছে। বরফ গলার কারণে সমুদ্রের স্রোতে পরিবর্তন আসছে। বিশ্বের তাপমাত্রা যদি এই হারেই বাড়তে থাকে, তাহলে ২১০০ সাল নাগাদ এই দুই অঞ্চলের বরফ প্রায় সম্পূর্ণই গলে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।