অনলাইন ডেস্ক :
রাজধানীর বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের তৃতীয়তলায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সকালে লাগা এই আগুন প্রায় চার ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে। দুপুর ১টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের ডিউটি কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানিয়েছেন। তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষয়তির কোনো তথ্য জানাতে পারেননি। এর আগে শনিবার (২১ আগষ্ট) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকার আনন্দ টিভির পাশের ওই ভবনের তৃতীয়তলায় আগুন লাগে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট পাঠানো হয়। পরে আরও পাঁচটি ইউনিট যোগ দেয় আগুন নেভানোর কাজে। তবে অগ্নিকা-ের কারণ ও হতাহতের কোনো তথ্য জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। জানা গেছে, ছয়তলা ভবনটির নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত দুর্বল। অনেকাংশেই কোনও নির্বাপণ ব্যবস্থাই ছিল না। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) অনুযায়ী নির্বাপণ ব্যবস্থার জন্য ভবনে যে বেসিক যে সরঞ্জাম থাকার কথা, ফায়ার এক্সিট রোড, ফ্লোরে ফ্লোরে ফাইজার সিস্টেম, যার মাধ্যমে মূলত পানিটা ভবনের ভেতরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে সে ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল ছিল। শনিবার (২১ আগষ্ট) বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি ৭৯ নম্বর ভবনের আগুন নেভানোর কার্যক্রম তদারকি করতে এসে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক অপারেশন লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টায়ও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এখানে যে ক্রেস্ট তৈরির প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাদের গুদামে বিপুল পরিমাণ মালামাল রয়েছে। এই ক্রেস্ট তৈরির সরঞ্জাম বেশিরভাগই কাঠের ও কাঠজাতীয়। সেগুলোতে পানি দেওয়া হলেও তা সমানভাবে পড়ে না। আর ভেতরে কাঠের জিনিসপত্র ছাড়াও বিভিন্ন কার্টন ছিল। যেগুলোতে আগুন লাগলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে আমাদের। গুদামে কাঠ ও কাঠজাতীয় সরঞ্জাম ছাড়াও আর কী কী সরঞ্জাম ছিল বা আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে, পরবর্তী সময়ে তদন্তের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে। তবে আগুনের উৎসস্থল ক্রেস্ট বানানোর প্রতিষ্ঠান এমিকন এখানে কী ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করতো, তাদের কারখানায় কী কী দ্রব্যাদি রয়েছে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি গ্রুপ ভেতরে প্রবেশ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভেতরে কেউ আটকা পড়েছেন কি না তা তল্লাশি করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে আমরা ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে তল্লাশি চালাবো। পর্যন্ত কোনও ধরনের হতাহত কিংবা ভবনে আটকে থাকার খবর পাওয়া যায়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় রয়েছে। তারপরও বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে তাড়াতাড়ির অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামাদি নিয়ে এসেছে। এগুলো আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভবনের বাইরে এবং ভেতর পাশে এখনও পানি দেওয়া হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসছে, আরও ঘণ্টা দুয়েকের মত সময় লাগতে পারে। এসময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়ার আতিকুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। পরে দুপুর ১টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
আরও পড়ুন
বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি
চুয়াডাঙ্গায় রাতে বৃষ্টি দিনে সূর্যের চোখ রাঙানি, রেকর্ড তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি
তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেই ২৮ এপ্রিল খুলছে মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ