নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের অটোরাইস মিলগুলো ইচ্ছেমতো চালের দাম নির্ধারণ করছে। ওসব প্রতিষ্ঠান চালের সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে বেশি দামে চাল বিক্রি করছে। ফলে আবারো নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে চালের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি চালের দাম ৫ টাকা থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তার মধ্যে মোটা চালের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা, আর চিকন চালের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা পর্যন্ত। ডলারের মূল্য বৃদ্ধির পর এবার জ¦ালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে ব্যবাসায়ীরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মিলাররা চাল মজুত করে সঙ্কট সৃষ্টি করছেন। আর তাতেই বাড়ছে চালের দাম। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষ। চাল বাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মূলত কিছু অটো রাইসমিল ও মজুদদার সিন্ডিকেট করে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। আর এখন চালের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিদ্যুতের লোড শেডিং, জ¦ালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় অটো রাইসমিলগুলো ঠিক মত চাল সরবরাহ করতে না পারার অজুহাত দেখানো হচ্ছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রায় ২০০ অটোরাইস মিল মালিক নিজেদের ইচ্ছেমত মজুদের পাহাড় গড়ে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। অটোরাইস মিলগুলো লাখ লাখ মণ ধানের মজুদ করে নিজেদের ইচ্ছেমত চালের দাম নির্ধারণ করছে। তাছাড়া কিছু মজুদদার ব্যবসায়ীও চাল মজুদ করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অটো রাইসমিলের মালিকরা চালের সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে বেশি দামে চাল বিক্রি করছে।
সূত্র জানায়, বন্যার কারণে এ বছর চালের উৎপাদন কম হয়েছে। আর সরকার চাল আমদানির উদ্যোগ নিলেও ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে চাল আনা হয়নি। এখন নতুন করে জ¦ালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ ও যাতায়াত খরচ বেড়েছে। ফলে চালের দামও বাড়ছে। চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও তাতে খুব বেশি সুফল মেলেনি। সরকার ১০ লাখ টনের বেশি চাল আমদানির অনুমতি দিলেও আমদানি হয়েছে খুবই কম।
এদিকে চাল ব্যবসায়ীদের মতে, চালের দাম বৃদ্ধির জন্য অটো রাইসমিলগুলো দায়ী। অটো রাইসমিল মালিকরা আগে থেকে ধানের মজুদ গড়ে তুলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে অটোরাইস মিলগুলোর সাথে পাল্লা দিতে না পেরে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা অসহায় হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে সম্প্রতি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, যারা অবৈধ মজুত করে চালের দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মিলাররা ধান ৩০ দিন ও চাল ১৫ দিনের বেশি মজুত করে রাখতে পারবে না। যারা অবৈধভাবে মজুত করে রাখবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশে চালের পর্যাপ্ত উৎপাদন আছে, সরবরাহ আছে অথচ দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধানের যদি ঘাটতি থাকতো তাহলে আমদানি করে তা পুষিয়ে নেওয়া হতো। কিন্তু আমদানির লাইসেন্স দেয়ার পরও তো আমদানি করা হচ্ছে না। ১৭ লাখ মেট্রিক টনের আমদানির অনুমতির জায়গায় মাত্র ৩ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ