October 7, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, February 9th, 2022, 8:11 pm

অনিশ্চয়তার মধ্যেও হজ ফ্লাইটের জন্য দুটি উড়োজাহাজ লিজ নেয়ার উদ্যোগ

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

হজ ফ্লাইট পরিচালনায় বৈমানিক ও ক্রুসহ দুটি বড় উড়োজাহাজ লিজ নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। যদিও করোনা মহামারীর মধ্যে সৌদি আরব টানা দুই বছর বিদেশীদের হজে যাওয়া বন্ধ রেখেছে। তবে গত বছর থেকে ওমরা পালনের সীমিত পরিসরে অনুমতি দেয়া হয়। আর করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এখনো চলতি বছর হজের জন্য প্রাক-নিবন্ধন শুরু করেনি ধর্ম মন্ত্রণালয়। ফলে বাংলাদেশীদের হজ যাত্রা এ বছরও অনিশ্চয়তা রয়েছে। অথচ রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস হজ ফ্লাইট পরিচালনার কারণ দেখিয়ে বৈমানিক ও ক্রুসহ দুটি বড় আকারের (ওয়াইড বডি) উড়োজাহাজ লিজ নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস দুটি উড়োজাহাজ লিজ নিতে গত ৩০ ডিসেম্বর দরপত্র আহ্বান করে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নীতিমালা অনুযায়ী বরাবরের মতোই দরপত্রে অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলোর জন্য উড়োজাহাজের বয়সের সীমা সর্বোচ্চ ২০ বছর বেঁধে দেয়া হয়। দরপত্রে উড়োজাহাজের জন্য অন্যান্য শর্তের মধ্যে রয়েছে উড়োজাহাজের আসন সংখ্যা হতে হবে ২৭০ থেকে ৩০০। ২০২২ সালের ২০ আগস্ট উড়োজাহাজের বয়স ২০ বছরের বেশি হওয়া যাবে না। এসিএমআই (ওয়েট লিজ) অংশীদারসহ উড়োজাহাজ লিজ নেয়া হবে। অর্থাৎ লিজদাতা প্রতিষ্ঠানকে উড়োজাহাজ পরিচালনায় বৈমানিক, কেবিন ক্রু সরবরাহ করতে হবে।
সূত্র জানায়, বড় দুটি উড়োজাহাজ ২০২২ সালের হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ৮০ দিনের জন্য ভাড়া নেয়া হবে। ১ জুন থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। উড়োজাহাজ দুটির ঢাকা থেকে কুয়েত, দোহা, দুবাই ও আবুধাবিতে ননস্টপ ফ্লাইট পরিচালনার সক্ষমতা থাকতে হবে। আর ভাড়ার সময়ে উড়োজাহাজ দুটির বড় ধরনের রক্ষণাবেক্ষণ ডিউ থাকতে পারবে না। একই সঙ্গে প্রতিটি উড়োজাহাজের কমপক্ষে ৫৫০ ব্লক আওয়ার উড্ডয়নের সক্ষমতা থাকতে হবে। তবে লিজদাতা প্রতিষ্ঠান একই হলে দুটি উড়োজাহাজ মিলে ১ হাজার ১০০ ঘণ্টা উড্ডয়ন সক্ষমতা থাকতে হবে। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা ই-মেইল ঠিকানায় দরপত্র জমা দিতে হবে। তাছাড়া বিমানের প্রধান কার্যালয়ে রক্ষিত দরপত্র বাক্সেও তা জমা দেয়া যাবে।
সূত্র জানায়, প্রতি বছর হজ মৌসুম এলেই বিমানের উড়োজাহাজের সংকট তৈরি হয়। ওই কারণে আগে থেকেই উড়োজাহাজ লিজ নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। কারণ বর্তমানে বিমানের চলমান রুটগুলো বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে যাত্রীর চাপ বেশি। ওই কারণে হজ ফ্লাইট চালাতে গিয়ে বিমান কোনো রুটে ফ্লাইট কমাতে চায় না। পাশাপাশি প্রয়োজনের তুলনায় বিমানের বৈমানিক ও ক্রুর সংখ্যাও কম। সেজন্যই উড়োজাহাজ দুটি ওয়েট লিজে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, ২০২০ সালে সৌদি আরবে অভ্যন্তরীণভাবে সীমিত পরিসরে হজ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ থেকে ওই সময় ১ লাখ ৩৭ হাজার হজযাত্রী যাওয়ার কথা থাকলেও কেউ যেতে পারেনি। পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে সৌদি আরব সরকার নভেল করোনাভাইরাস বিধিনিষেধের কারণে শুধু তাদের নাগরিক ও দেশটিতে বসবাসরত লোকজনকে হজ করার সুযোগ দেয়। করোনা সংক্রমণের আগে ২০১৯ সালে ১ লাখ ২৬ হাজার ৯২৩ জন বাংলাদেশী হজ পালনের উদ্দেশে সৌদি আরব যায়।
এদিকে চলতি বছর এখনো হজে যেতে ইচ্ছুকদের নিবন্ধন শুরু হয়নি। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় হজে গমনেচ্ছুদের সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম কভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে শুরু করেনি। তার মধ্যেও কতিপয় অসাধু ব্যক্তি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হজে পাঠানোর মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। সেজন্য ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।