নিজস্ব প্রতিবেদক:
অপ্রচলিত বাজারে এদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি আশানুরূপ হারে বাড়ছে না। গত অর্থবছরে অপ্রচলিত শ্রেণির বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির অংশ ১৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ। তার আগের অর্থবছর ছিল ১৬ দশমিক ১৬ শতাংশ। যদিও গত অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় ওসব বাজারে রপ্তানি ২৫ শতাংশ বেশি হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর চেয়ে কম হারে রপ্তানি বেড়েছে। অপ্রচলিত বাজারগুলোতে মোট ৬৩৭ কোটি ডলারের পোশাক গেছে। আগের অর্থবছরে তার পরিমাণ ছিল ৫০৮ কোটি ডলার। বিজিএমইএ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ড হয়েছে। আর একক দেশ হিসেবে প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র এবং জোটগত প্রধান বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) আগের অর্থবছরের তুলনায় বড় অঙ্কের রপ্তানি বেড়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির অংশ অনেক বাড়লেও ইইউতে সামান্য কমেছে। তবে অপ্রচলিত বা নতুন ধরনের বাজারের অংশ অনেক কমেছে। আবার ইউরোপ ও আমেরিকায় যে হারে রপ্তানি বেড়েছে, অপ্রচলিত বাজারে তার অর্ধেকেরও কম হারে বেড়েছে। ফলে বাজার বৈচিত্র্য আনতে সরকারের দেয়া প্রণোদনা এবং উদ্যোক্তাদের উদ্যোগের দৃশ্যমান সুফল নেই।
সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, যুক্তরাজ্য ও কানাডাকে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রচলিত বাজার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার বাইরের অন্যান্য দেশকে অপ্রচলিত বাজার হিসেবে ধরা হয়। অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে ১৫টি দেশ উল্লেখযোগ্য। ওই তালিকায় চীন, জাপান, ভারত, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ রয়েছে। পণ্যের সঙ্গে বাজার বৈচিত্র্য আনতে নতুন বাজারে রপ্তানিতে ৪ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার।
সূত্র আরো জানায়, বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির অংশ ২ দশমিক ২৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়েছে। মোট পোশাক রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ ২১ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর আগের অর্থবছর (২০২০-২১) ছিল ১৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। ওই দেশটিতে গত অর্থবছর মোট ৯০১ কোটি ডলার মূল্যের পোশাক গেছে। তার আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৫৯৫ কোটি ডলার। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি প্রায় ৫২ শতাংশ বেশি হয়েছে। তাছাড়া ২৭ জাতির ইইউ জোটে প্রায় ৩৪ শতাংশ পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। জোটের দেশগুলোতে মোট ২ হাজার ১৪০ কোটি ডলারের পোশাক গেছে। আগের অর্থবছর তার পরিমাণ ছিল এক হাজার ৫৯৯ কোটি ডলার। অবশ্য গত অর্থবছরে মোট পোশাক রপ্তানির অংশ সামান্য কমেছে। বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানিতে ইইউর অংশ ৫০ দশমিক ২২ শতাংশ। আগের অর্থবছর ছিল ৫০ দশমিক ৮২ শতাংশ। ব্রেক্সিট চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাজ্য ইইউ জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রভাব হিসেবে ইইউর অংশ কিছুটা কমে থাকতে পারে। গত অর্থবছরে একক দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের অংশ দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
এদিকে এ প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক উৎপাদক ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান জানান, কিছু উদ্যোগ সত্ত্বেও অন্যান্য বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি বাড়ছে না। কীভাবে ওসব বাজারে রপ্তানির অংশ বাড়ানো যায় তা নিয়ে ভাবছে বিজিএমইএ। তবে কাক্সিক্ষত গতিতে না বাড়লেও কয়েক বছর আগে কিছু পরিকল্পনা নেয়ায় অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি