October 12, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, August 29th, 2023, 7:43 pm

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় মাত্র কয়েক দশকের মধ্যে দ. কোরিয়া উন্নত হয়েছে: রাষ্ট্রদূত পার্ক

বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বলেছেন,আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সহযোগিতা ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া তার বর্তমান অবস্থান অর্জন করতে পারত না।

তিনি বলেন, আমাদের বন্ধুদের সহায়তায় কোরিয়া মাত্র কয়েক দশকের মধ্যে তার অর্থনীতির উন্নয়ন করেছে। আমরা এখন অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে আমাদের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে আমাদের ঋণ পরিশোধ করতে (অন্যদের সহায়তা ) ইচ্ছুক।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘কোরিয়া-বাংলাদেশ ইকোনোমিক কোঅপারেশন: মেযারিং ডেভেলপমেন্ট এক্সপেরিয়েন্স এন্ড এক্সপ্লোরিং অপরচুনিটিস’- শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত পার্ক এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রদূত জানান, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশ এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে বলে তিনি আত্মবিশ্বাসী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা দেখেছি গত এক দশকে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হিয়োক জিয়ং, ড. ডংসু কিম এবং ড. জেহান চো পৃথক সেশনে বক্তব্য রাখেন।

এ বছর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আগামী পঞ্চাশ বছরে কীভাবে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানো যায় তা নিয়ে আলোচনার এটাই সঠিক সময়।’

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে শুরু থেকেই দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের পাশে রয়েছে।

রাষ্ট্রদূত পার্ক বলেন, ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশের দেশ গার্মেন্টস ও কোরিয়ান কোম্পানি দেউউ করপোরেশনের অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বীজ বপন করে।

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য গত বছর ৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশ বর্তমানে দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) প্রত্যাখ্যান নিয়ে আলোচনা করছে।

রাষ্ট্রদূত পার্ক বলেন, ইপিএ চুক্তি হলে পারস্পরিক লাভজনক উপায়ে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।

সঞ্চিত পরিমাণের দিক থেকে বাংলাদেশে কোরিয়ার বিনিয়োগ পঞ্চম বৃহত্তম।

চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত প্রথম দেশভিত্তিক বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কেইপিজেড কোরিয়া-বাংলাদেশ ব্যবসায়িক সম্পর্কের প্রতীক।

রাষ্ট্রদূত পার্ক বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কের উপর্যুক্ত উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়েছে।

ভবিষ্যতের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তোরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে।

তিনি বলেন, এই যাত্রা একই সঙ্গে দুর্দান্ত সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে।

রাষ্ট্রদূত পার্ক বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির দৃষ্টিভঙ্গি খুবই ইতিবাচক।

২০২৩ সালের জুনে প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিকসের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৩২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল।

আরেকটি ভালো খবর হলো, অবকাঠামো উন্নয়নের সম্ভাবনা। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে একটি ইতিবাচক সংকেত দেবে এবং বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মূলধন আকৃষ্ট করা সহজতর করবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে কোরিয়া গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে চায়, যেমনটা আমরা অতীতে তৈরি পোশাক শিল্পে করেছি।

রাষ্ট্রদূত দৃঢ়ভাবে আশা প্রকাশ করেন, ভুলতা-আড়াইহাজার-বাঞ্ছারামপুর সড়কের মেঘনা সেতু প্রকল্প (আর-২০৩) এবং মেঘনা নদী থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে (বিএসএমএসএন) পরিশোধিত পানি সরবরাহ, যা যৌথ পিপিপি প্লাটফর্ম বৈঠকের মাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে, তা দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করবে।

তিনি বলেন, এই দু’টি প্রকল্প কোরিয়ান কোম্পানিগুলোর জন্য আরও বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনার জন্য একটি লিটমাস টেস্ট হয়ে উঠতে পারে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, কোরিয়া এশিয়ার সবচেয়ে গতিশীল গণতান্ত্রিক দেশ এবং বিশ্বের সবচেয়ে উদ্ভাবনী দেশ। জাহাজ নির্মাণ, সেমিকন্ডাক্টর, মোবাইল ফোন ইত্যাদিতে একটি শিল্প পাওয়ার হাউস হিসেবে স্বীকৃত দক্ষিণ কোরিয়া।

—-ইউএনবি