অনলাইন ডেস্ক :
চার বছরে মাত্র ২৭ সিনেমা করে যিনি অজেয় হয়ে আছেন বাংলা চলচ্চিত্রে, তিনি সালমান শাহ্। মাত্র ২৪ বছর বয়সে অস্বাভাবিক এক মৃত্যুতে থেমে যায় এই অমর নায়কের পথচলা। সেটি কি হত্যা, নাকি আত্মহত্যা; সেই জট খোলেনি ২৭ বছরেও। বিস্ময়কর তথ্য হলো, মূলত সেই মৃত্যু রহস্যের জট খোলার চিত্রনাট্য নিয়ে ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই নির্মাণ করেছে ওয়েব সিরিজ ‘বুকের মধ্যে আগুন’। প্ল্যাটফর্ম ভারতীয় হলেও এর নির্মাতা-অভিনেতা বাংলাদেশী। সিরিজটি নির্মাণের ঘোষণা প্রকাশের পর সালমান শাহ পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আপত্তি, পাঠানো হয়েছে আইনি নোটিশ। বিশেষ করে সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী ও মামা আলমগীর কুমকুম এ বিষয়ে জোর আপত্তি জানান। সালমান ভক্তদের মধ্যেও এটি নিয়ে তৈরি হয় অসহিষ্ণুতা-প্রতিবাদ। ধারনা করা হচ্ছিল, স্পর্শকাতরতার বিচারে সিরিজটি প্রকাশে পিছু হটবে সংশ্লিষ্টরা। তা আর হলো না, অনেকটা হুট করে রাতের অন্ধকারে গত বৃহস্পতিবার হইচই অ্যাপে উন্মুক্ত হয় সিরিজটি। প্রকাশের পর মুহূর্তেই ভাইরাল। যেটি দেখে পুরনোরা তো বটেই, এ প্রজন্মের দর্শকরাও স্পষ্ট হলেন গল্পটি আসলে কোন নায়কের জীবন থেকে হুবহু নেওয়া। যেখানে সালমান শাহের আদলে দেখা গেছে ইয়াশ রোহানকে, স্ত্রীর (সামিরা) মতো দেখা গেছে তমা মির্জাকে, নায়কের মা নীলা চৌধুরীর মতো লেগেছে তানিয়া আহমেদকে, রাজনীতিক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের গেটআপে তৌকীর আহমেদ, প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের অবয়বে তারিক আনাম খানকে। মোটামুটি সালমান শাহ কেন্দ্রিক তৎকালীন সব চরিত্রকেই নির্মাতা পর্দায় হাজির করিয়েছেন কাছাকাছি গেটআপে। যেটি দেখে ৯০ দশকের দর্শক-নির্মাতা-শিল্পী-সাংবাদিকরা হুবহু মিল খুঁজে পাচ্ছেন সালমান শাহের জীবনের গল্পের সঙ্গে। তবে ঠিক কোন তারকার মৃত্যু রহস্য এই সিরিজের উপজীব্য, সেই নামটি নির্মাতা তানিম রহমান অংশু উল্লেখ করেননি সচেতনভাবেই। যদিও সিরিজটি দেখার পর নির্মাতা বা সংশ্লিষ্টদের মুখ খুলে কিছু বলারও নেই। যেখানে অপূর্ব অভিনয় করেছেন এই মৃত্যু রহস্য উন্মোচনের তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি গোলাম মামুনের চরিত্রে। তাই নয়, সিরিজের নামটিও মনে করিয়ে দেয় সালমান শাহ্র কথা। কারণ এই নায়কের শেষ সিনেমার নাম ‘বুকের ভেতর আগুন’। আর অপূর্ব অভিনীত অংশুর সিরিজটির নাম ‘বুকের মধ্যে আগুন’! অবশ্য, নির্মাতা বরাবরই বলছেন এটি সালমান শাহ-এর জীবন অবলম্বনে নির্মিত নয়। বিপরীতে সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী জানালেন, এই বিষয়ে তিনি আবারও আইনের দ্বারস্থ হবেন। নীলা চৌধুরী বলেন, ‘এটা যে আমার সন্তান এবং আমার পরিবারকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এরজন্য তারা আমার কাছ থেকে অনুমতি নিতে পারতো। নেয়নি। আমার কথা হলো, যে হত্যা রহস্য ২৭ বছরেও প্রকাশ করতে পারলো না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, সেটা তারা কেমন করে নাটকের মাধ্যমে প্রকাশ করছে? তারা নাটক না বানিয়ে আদালতে গিয়ে সাক্ষ্য দিলেই তো আমরা জানতে পারতাম। ২৭টি বছর আমি লড়াই করছি খুনিকে ধরার জন্য, অথচ তারা নাকি নাটক দিয়ে সেটি দেখাবে! এটা হতে পারে? আমি আইনের কাছে যাবো তাদের বিরুদ্ধে।’ এদিকে হইচই-এ সিরিজটি প্রকাশের পর থেকে চারদিকে সাড়া পড়ে গেছে। কারণ, সিরিজের চরিত্রগুলো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সকলেরই চেনা মুখ! যারা সুপারস্টার সালমানকে ঘিরে ছিলেন সেই সময়টাতে। যার মধ্য দিয়ে সালমানের সেই সময়কার জীবনের প্রায় সবটুকুই তুলে ধরেছেন অংশু। বিশেষ করে তার পর্দা ও ব্যক্তিজীবন এমনকি সালমানের মায়ের সঙ্গে কোন রাজনীতিকের প্রেম ছিলো, সেটিও! তবে সিরিজের শেষে সালমান শাহ মৃত্যু রহস্য কতটা উদঘাটিত হয়; সেটি পাঠকদের জানিয়ে স্পয়লার দেওয়া ঠিক হবে না।
আরও পড়ুন
ইউটিউব থেকে সরানো হলো শাকিবের ‘তুফান’
চিন্তিত অনন্যা পান্ডে
কনাকে নিয়ে সুখবর দিলেন আসিফ