জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
কুলাউড়া পৌরসভায় পরিকল্পিত নগর উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। আবাসন সঙ্কট এবং জলবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহমান মরা গুগালী খাল খনন করে নদীর উভয় তীরে নির্মাণ করা হচ্ছে রাস্তা। আর এই খাল খনন এবং রাস্তা নির্মাণের ফলে আবাসন, শহরের যানজট ও জলবদ্ধতা সমস্যা দূর হবে বলে আশা করছেন পৌরবাসী।
জানা যায়, ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর কুলাউড়া শহরকে পৌরসভা ঘোষণা দেওয়া হয়। ধাপে ধাপে সি-গ্রেড থেকে বি-গ্রেডে এবং বিশ বছরের মাথায় এ-গ্রেডে উন্নীত হয়। গ্রেড উন্নয়ন হলেও বিগত দিনে পৌরসভার কাঙ্খিত কোন উন্নয়ন হয়নি। বাড়েনি কোন নাগরিক সুযোগ সুবিধা। ১০.৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের কুলাউড়া পৌরসভায় ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ছিলো ২০ হাজার ৯৩৪ জন। এরমধ্যে মহিলা ১০ হাজার ৯৩৮ জন এবং পুরুষ ৯ হাজার ৯৯৬ জন। পৌরসভায় ৩ হাজার ৯০২ টি পরিবার বাস করে। কিন্তু এসবই কাগজে-কলমে। সর্বশেষ ২০২১ সালের পৌর নির্বাচনের তথ্য অনুয়ায়ী কুলাউড়া পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৭৫৯। আর জনসংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে লক্ষাধিকে উন্নীত হয়েছে। জনসংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি আয়তন। ফলে আবাসন সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে।
কুলাউড়া পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ৫০ বছর থেকে অবহেলিত মরা গুগালী খালটি ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সাড়ে তিন কিলোমিটার খনন কাজ করায় পৌরসভার ৮, ৫, ৪ ও ১ নং ওয়ার্ড এলাকায় দীর্ঘ জলাবদ্ধতার নিরসন হয়েছে। খালটি কুলাউড়া পৌরশহরের পূর্বদিকের রেলওয়ে এলাকা থেকে শুরু হয়ে কাদিপুর ইউনিয়নের গুপ্তগ্রাম-মৈন্তাম এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মরা গুগালীর পানি হাকালুকি হাওরে গিয়ে মিশেছে।
পৌরসভার প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে পৌরসভার ড্রেনেজ নির্মাণ কাজের পাশাপাশি পৌরসভার ভেতর দিয়ে প্রবাহমান খাল-নদী খননের কাজ চলছে। এতে শহরের জলাবদ্ধতা দূর হবে। মেয়র মহোদয়ের নির্বাচন পূর্ব পরিকল্পিত নগরীর প্রতিশ্রুতিও বাস্তবায়ন হবে। উছলাপাড়া ও বাদে মনসুর এলাকায় রাস্তার অভাবে বিশাল এলাকা এখনও কৃষিজমি। শুধুমাত্র নদীর উভয় তীরকে রাস্তা বানালে সেই এলাকাগুলোতে গড়ে উঠবে আবাসন।
কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ জানান, কুলাউড়া পৌরসভার উছলাপাড়া-মাগুরা ও বাদে মনসুর এলাকার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত মরা গুগালী খালটি খনন করা হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নে। এখন খালের উভয় পাড়ে নির্মাণ করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন রাস্তা। নির্মিত রাস্তাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় গড়ে উঠবে নতুন আবাসিক এলাকা। এই খালকে লেকে পরিণত করারও পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। ফলে পৌরসভার সৌন্দর্য্য বর্ধন হবে এবং যানজট অনেকাংশে কমবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি