November 7, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, July 19th, 2022, 7:51 pm

ইতিহাসের পাতায় কিংস হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন

অনলাইন ডেস্ক :

মুন্সীগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবল নিয়ে এত মাতামাতি দেখা যায়নি। দেশের ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদার আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ। এই মাঠে বসুন্ধরা কিংসের সামনে এসে দাঁড়ায় লিগ শিরোপা জয়ের ম্যাচ। হ্যাটট্টিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ম্যাচ। হাতে থাকা তিন ম্যাচের এক ম্যাচ জিতলেই নিশ্চিত শিরোপা। গৌরবের ট্রফি যাবে বসুন্ধরা কিংসের ডেরায়। ফুটবল ইতিহাসের পাতায় লেখা হবে বসুন্ধরা কিংসের নাম। তাই মুন্সীগঞ্জের মাঠ স্মরণীয় করে রাখতে বিকালেই এসে গেল কিংসের দর্শক। পাশাপাশি দেখা গেল সাইফের জার্সি গায়ে তাদের সাপোর্টারদের। খেলা শুরুর আগেই প্লেয়ারের লাল জার্সি পরে বসুন্ধরা কিংসের সমর্থকরা ব্যান্ড পার্টি ও বাদ্য বাজনা নিয়ে মাঠে প্রবেশ করে। গোলের সঙ্গে সঙ্গেই বসুন্ধরা কিংসের সমর্থকরা আনন্দ উচ্ছ্বাসে স্টেডিয়ামে মেতে ওঠেন। ধুন্ধুমার লড়াই উপভোগ করতে মুন্সীগঞ্জের নারী দর্শকও ছুটে এসেছিলেন মাঠে। লড়াই হয়েছে উপভোগ করার মতো। সেই লড়াইয়ে বসুন্ধরা কিংস ২-০ গোলে হারাল সাইফ স্পোর্টিংকে। কিংসের ম্যাচ জয়ের পেছনে সব সময় দেখা গেছে বিদেশি ফুটবলারদের আধিক্য। বদনাম ছিল দেশি ফুটবলারদের। দেশি ফুটবলাররা নাকি গোল পান না। বিদেশিরাই টানছেন কিংসকে। এমন কথা হরহামেশাই শুনতে হয়েছে দেশি ফুটবলারদের। এবার তারা প্রমাণ করে দিয়েছে। বিদেশিদের অনুপস্হিতিতেই দেশি দুই ফুটবলার গোল করে শিরোপা জয়ের স্বাদ দিয়েছেন। গোলদাতা দুই নায়কের নাম মতিন মিয়া এবং বিপলু আহমেদ। ২০ ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে মুকুট ধরে রাখল কিংস। আবাহনী ও শেখ জামালের বিপক্ষে দুই ম্যাচ হাতে রেখে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। স্প্যানিশ এই কোচের হাত ধরে দলটি পেল সব মিলিয়ে ষষ্ঠ শিরোপার স্বাদ। এর মধ্যে তিনটি প্রিমিয়ার লিগ, দুইটি ফেডারেশন কাপ ও একটি স্বাধীনতা কাপ। প্রথম লেগে দুই দলের ৭ গোলের রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে সাইফ স্পোর্টিংকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছিল কিংস। দ্বিতীয় লেগে গোলের ছড়াছড়ি না থাকলেও উত্তাপের কমতি ছিল না। ম্যাচে দুই পক্ষই বারবার বিপজ্জনক ফাউল করে উত্তেজনা ছড়ায়। পায়ের পেশির আঘাতে এ ম্যাচে ছিলেন না কিংসের আক্রমণভাগের গুরুত্বপূর্ণ সেনানি রবসন দি সিলভা রবিনিয়ো, একাদশে ঢোকেন মতিন মিয়া। করোনা ভাইরাস থেকে সদ্য সেরে ওঠা খালিদ শাফিইয়ের বদলে রক্ষণ সামলানোর দায়িত্ব ওঠে কাজী তারিক রায়হানের কাঁধে। ষোড়শ মিনিটে আনিসুর রহমান জিকোর দারুণ সেভে বেঁচে যায় কিংস। বাইসেঙ্গের ফ্রি কিক রক্ষণ দেওয়ালে লাগার পর বক্সের ভেতরে পেয়ে যান মারাজ হোসেন। শরীর ঘুরিয়ে এই মিডফিল্ডারের নেওয়া সাইড ভলি ফেরান জিকো; এরপর এমফন উদোহর ফিরতি শটও ঝাঁপিয়ে আটকান তিনি। কিংস প্রথম ভালো সুযোগটি তৈরি করে ২৩ মিনিটে। সবুজের ব্যাক পাস ধরে একটু এগিয়ে বাঁ পায়ে জোরাল শট নেন মিগেল ফিগেইরা দামাশেনো। বল গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেনকে ফাঁকি দিয়ে ক্রসবার কাঁপায়। ২৮ মিনিটে এগিয়ে যায় কিংস। মিগেলের নিচু পাস একজনের গায়ে লেগে চলে যায় বক্সে মতিনের পায়ে। একটু সময় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় লক্ষ্য ভেদ করেন জাতীয় দলের এই ফরোয়ার্ড। দ্বিতীয় সুযোগ নষ্ট করেন মতিন। এর ৩ মিনিট পরই ইয়াসিন আরাফাতের অপ্রয়োজনীয় আরেকটি ফাউলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় কিংস। নবম মিনিটে রহিম উদ্দিনকে মাঝমাঠে অহেতুক ফাউল করে প্রথম হলুদ কার্ডটি দেখেছিলেন ইয়াসিন আরাফাত; দ্বিতীয়টিও দেখেন সেই রহিমকেই অকারণ ফাউল করে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমর্থকরা উল্লাসে পেতে পারে এবং বসুন্ধরা কিংসের সমর্থকদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে মুন্সীগঞ্জ স্টেডিয়াম।