অনলাইন ডেস্ক :
ঈদুল আজহার আগে সড়ক-মহাসড়কগুলোতে বাড়িফেরা মানুষের ঢল নেমেছে। পাশাপাশি রয়েছে পশুবাহী ট্রাক। এতে দেখা দিচ্ছে তীব্র যানজট। করোনা মহামারীর এই সময়ে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত তো হচ্ছেই, সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভোগান্তি। রোববার (১৮ জুলাই) ঢাকা থেকে বের হওয়া সবগুলো প্রধান সড়কেই লেগে থাকে যানজটের বিড়ম্বনা। ঈদযাত্রায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে ২০ কিলোমিটার জুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুণ বেশি পরিবহন এবং দফায় দফায় বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল আদায় বন্ধের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। দেখা যায়, উত্তরবঙ্গাগামী লেনে গাড়ি আটকে রয়েছে। তবে ঢাকামুখী লেনে থেমে থেমে গাড়ি চলছে। যানজটের কারণে চালক ও যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। রোববার (১৮ জুলাই) ভোর থেকে মহাসড়কের টাঙ্গাইলের রাবনা বাইপাস থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট দেখা যায়। গত শনিবার বিকেলেও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে তীব্র যানজট হয়। মহাসড়কের গোড়াই শিল্পাঞ্চল এলাকায় ফ্লাইওভার নির্মাণকাজের জন্য চার লেনের গাড়ি এক লেন দিয়ে বের হয়। এছাড়া গোড়াই-সখিপুর সড়কের যাত্রীবাহী বাস ও পশু এবং পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ইউটার্ন নিয়ে মহাসড়কে উঠছে। ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ক্রমে তীব্র হয় যানজট।
এদিকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে চাপ বাড়ছে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহনের। ফলে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কসহ সিরাজগঞ্জের সব রুটে গাড়ি চলছে কচ্ছপ গতিতে। মাঝে মধ্যেই সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। রোববার (১৮ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু সেতু গোলচত্বর থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত থেমে থেমে যানজট দেখা দেয়। এ ছাড়া এ রুটে সকাল থেকে কচ্ছপ গতিতে যানবাহন চলছে।
অপরদিকে, হাটিকুমরুল-বনপাড়া রুটের গোঁজা ব্রিজ পর্যন্ত ও বগুড়া রুটের চান্দাইকোনা পর্যন্ত মহাসড়কে ধীরগতিতে যানবাহন চলছে। এতে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ওসি মোসাদ্দেক হোসেন জানান, এ মহাসড়কে পর্যায়ক্রমে বাড়ছে গণপরিবহণের চাপ। সকাল থেকেই ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করছে। কখনো থেমে থেমে যানজট দেখা দিলেও পুলিশি হস্তক্ষেপে তা দ্রুতই নিরসন করা হচ্ছে। হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি শাহজাহান আলী বলেন, হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কে গাড়ির ধীরগতি রয়েছে। পাবনা মহাসড়কে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক থাকলেও বগুড়া মহাসড়কের চান্দাইকোনা পর্যন্ত ধীরগতি রয়েছে। নলকার ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে কখনো কখনো যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
অন্যদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও ছিল যানবাহনের অতিরিক্ত বেড়েছে। রোববার (জুলাই) সকাল থেকেই এই দুই রুটে ঘরমুখো মানুষের ভিড় ও যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করেছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর থেকে চেরাগ আলী পর্যন্ত সড়ক ভাঙাচোরা থাকায় যানবাহনগুলোকে ধীরগতিতে চলাচল করতে হচ্ছে। যার কারণে সেখানে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া গাজীপুরের কুনিয়া বড়বাড়ি, ছয়দানা মালেকের বাড়ি, বোর্ডবাজার, বাসন সড়ক ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় যানবাহনের বেশ চাপ রয়েছে। ওই সব পয়েন্ট থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক বিভাগ) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অন্যান্য দিনের মতোই যানবাহনের চাপ রয়েছে। তবে ঘরমুখী মানুষের ভিড় বাড়ছে।
ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। কিন্তু বাস চালক, হেলপার ও যাত্রী কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। রোববার (১৮ জুলাই) সকালে সিদ্ধিরগঞ্জস্থ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এমন চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড ও শিমরাইল মোড়ে অন্যান্য পরিবহনের চেয়ে দূরপাল্লার বাস বেশি। ফলে বাস কাউন্টারের আশপাশে গাড়ির জটলা লক্ষ্য করা গেছে। তবে যাত্রীর চাপ বাড়লেও বাসের হেলপারদের অতিরিক্ত ভাড়া নিতে দেখা যায়নি। আবুল কালাম নামের এক যাত্রী বলেন, আমি যাত্রাবাড়ি থেকে সাইনবোর্ড আসলাম। এখন দাউদকান্দি যাবো। রাস্তায় গাড়ির চেয়ে যাত্রী বেশি। রাজিয়া বেগম নামের আরেক যাত্রী বলেন, ভাড়া বেশি নিচ্ছে না। কিন্তু রাস্তায় মানুষ বেশি। তিশা বাসের হেলপার রুহুল আমিন বলেন, রাস্তায় যাত্রী বেশি আছে ঠিকই। কিন্তু আমরা অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছি না। এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে উভয়মুখী গাড়ির চাপ বেড়েছে। বিকেল হলেই এ সড়কে গাড়ির পাশাপাশি যাত্রীর চাপও বেশি থাকে।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম