October 13, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, September 29th, 2022, 2:21 pm

ঈশ্বরগঞ্জে ছিপ বিক্রির ধুম

জেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ, (ঈশ্বরগঞ্জ) :
ঈশ্বরগঞ্জে মাছ ধরার ছিপ বিক্রি ধুম পড়েছে। বর্ষার সাথে সাথে বড়শি শিকারীরা নতুন ছিপ কিনতে বাজারের দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন। নদীনালা খালবিলে বড়শিতে মাছ ধরা গ্রাম বাংলার একটি অন্যতম লোকজ সংস্কৃতি। আবহমানকাল থেকে ভোজন রসিক শিকারিরা উন্মুক্ত জলাশয়ে ভাড়া করা পুকুরে মাছ শিকার করে রসনা তৃপ্ত করে আসছেন। ষড়ঋতুর এই দেশে বর্ষা মৌসুমে বেশি মাছ শিকার হয়ে থাকে বড়শিতে। তাই বড়শির ছিপ বিক্রেতা ও সৌখিন শিকারীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকেন চিরচেনা বর্ষার বারিধারার জন্যে। প্রবল বর্ষণে যখন নদী-নালা খাল-বিল পুকুর পানিতে ভরে যায় তখন গ্রামগঞ্জে পুকুর ভাড়ার মাইকিং শুরু হয়। শিকারিরা তখন মাছ শিকারের জন্য নতুন ছিপ সুতা কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বর্ষা শুরুর আগেই ছিপ বিক্রেতারা কাঁচামাল সংগ্রহ করে ছিপ প্রস্তুত করে রাখেন।
উপজেলা হাটুলিয়া গ্রামের ছিপ ব্যবসায়ী হাবুল মিয়া (৬০) জানান, এটি একটি কুটির শিল্প। এ শিল্পের সাথে উপজেলার প্রায় শতাধিক পরিবার জড়িয়ে রয়েছে। ভাদ্র আশ্বিন কার্তিক এই তিনমাস প্রচুর ছিপ বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতি সিজনে একজন ব্যবসায়ী দুই থেকে তিন লক্ষ টাকার ছিপ বিক্রি করে থাকেন বলে তিনি জানান। এসব ছিপের কাঁচামাল সিলেটের সুনামগঞ্জ থেকে আমদানি করা হতো। ইদানিং সেখানকার ব্যবসায়ীরা ট্রাকযোগে ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার নামাপাড়া ঈদগাহ মাঠে পৌঁছে দেন। সেখান থেকে বিভিন্ন উপজেলার শতশত ব্যবসায়ীরা ছিপের কাঁচামাল কিনে নিয়ে ছিপ বানিয়ে বাজারজাত করে থাকেন।
সরেজমিন বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বড় মাঝারি ও ছোট এই তিন আকারের ছিপ বিক্রি হচ্ছে। বড় আকারের ১শ ছিপের একটি বান্ডিলের ক্রয় মূল্য হচ্ছে ৩হাজার ৫শ টাকা। ছিপ তৈরি মজুরিসহ বিক্রি হয়ে থাকে ৫হাজার টাকা। অর্থাৎ ৩৫ টাকা দরের একটি ছিপ বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। মাঝারি ২০টাকা দরের ছিপ বিক্রি হয়ে থাকে ৩৫ টাকা। ১৫ টাকা দরের ছিপ বিক্রি হয়ে থাকে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।
উপজেলার চট্টি গ্রামের ছিপ ব্যবসায়ী জাবেদ আলী (৬২) জানান, সিলেট সুনামগঞ্জ এলাকার কৃষকরা ছিপের জন্য টেংগল তল্লা নল বাঁশের চাষ করে থাকেন। এসব বাঁশ ছিপ আকৃতির চেয়ে আর বড় হয় না। ছিপ বাঁশের চাষ আমাদের এলাকায় হয় না। তবে ঈশ্বরগঞ্জ ও গৌরীপুরের কয়েকজন কৃষক পরীক্ষামুলক ভাবে নল বাঁশের চাষ করছেন বলে তিনি জানান।
সরিষা গ্রামের ছিপ ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া জানান, ভাদ্র আশ্বিন কার্তিক এই তিন মাসের ছিপ বিক্রির আয় দিয়ে সারা বছরের সংসার খরচ চালান তাঁরা।