October 6, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, August 7th, 2022, 9:44 pm

উপকূলীয় নৌপথে বাড়ছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

উপকূলীয় নৌপথে ভারতীয় পণ্য আমদানি বাড়ছে। গত অর্থবছরে (২০২১-২২) ভারত থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে উপকূলীয় নৌপথে আমদানি-রপ্তানি মিলিয়ে ৮ হাজার ২৬৯ একক কনটেইনার পণ্য পরিবহন হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। অবশ্য তার মধ্যে আমদানির পরিমাণই বেশি ছিল। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা ভারতীয় পণ্য আমদানিতে উপকূলীয় নৌপথে আগ্রহী হয়ে উঠছে। শিপিং খাত এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত ২০১৫ সালে দুই দেশের সমুদ্র উপকূল ঘেঁষে সহজে ও কম খরচে পণ্য পরিবহন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নৌ প্রটোকল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দুই দেশের ১১টি বন্দরের মধ্যে উপকূল ঘেঁষে কোস্টাল বা উপকূলীয় ছোট জাহাজ চলাচল করবে। ভারতের বন্দরগুলো হচ্ছে চেন্নাই, পশ্চিমবঙ্গের হালদিয়া ও কলকাতা, ওড়িশার প্যারাদ্বীপ এবং অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্নম ও কৃষ্ণপত্নম। আর বাংলাদেশের ৫টি বন্দর হচ্ছে চট্টগ্রাম, মোংলা, পায়রা, আশুগঞ্জ ও পানগাঁও। ওই চুক্তির আওতায় ২০১৬ সালের মার্চ চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পরিবহনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মাত্র ৯টি জাহাজ দিয়েই পণ্য পরিবহন শুরু হয়। আর সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬৩ ভয়েস বা ট্রিপ চলেছে। মূলত ৩ কারণে উপকূলীয় নৌপথে পণ্য পরিবহন বাড়ছে এবং আরো বাড়বে। মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় কলকাতা থেকে পণ্য চট্টগ্রাম পৌঁছানো, প্রতি সপ্তাহে জাহাজ সার্ভিস আর ভাড়া অনেক সাশ্রয়ী ও নিরাপদ। ভারতের কলকাতা, হালদিয়া, ভাইজাগ, চেন্নাই ও কৃষ্ণপতœম বন্দর থেকেই পণ্য পরিবহন বেশি করা হয়। পণ্যের মধ্যে তৈরি পোশাক শিল্পের তুলা থেকে শুরু করে অনেক ধরনের কাঁচামাল রয়েছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে কলকাতা বন্দরের দূরত্ব ৩৬১ নটিক্যাল মাইল। ১০ নটিক্যাল মাইল গতিতে ওই দূরত্ব পাড়ি দিতে জাহাজের সময় লাগে ২ দিন। আর কলকাতার পণ্য শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দর ঘুরে চট্টগ্রামে আসতে সময় লাগছে সাড়ে ৫ দিন। সরাসরি সার্ভিস না থাকায় প্রায় এক হাজার ৩০০ নটিক্যাল মাইল বাড়তি পাড়ি দিয়ে পণ্য আনতে হচ্ছে। কলকাতা ছাড়া ভারতের বন্দরগুলো থেকে পণ্য আনতে শ্রীলঙ্কা বা সিঙ্গাপুর বন্দর হয়ে চট্টগ্রামে আসতে হচ্ছে। উপকূলীয় রুটে ছোট জাহাজে পণ্য পরিবহন হয়। ওই জাহাজ সাগর পাড়ি দেয় না।
সূত্র আরো জানায়, বন্দরের হিসাবে গত অর্থবছরে ভারত-চট্টগ্রাম বন্দর রুটে ৮ হাজার ২৬৯ একক আমদানি ও রপ্তানি পণ্যভর্তি কনটেইনার পরিবহন হয়েছে। তার মধ্যে আমদানি কনটেইনারের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ৯০০ একক আর রপ্তানি কনটেইনার ছিল এক হাজার ৩৬৯ একক। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট কনটেইনার পরিবহন হয়েছিল ৫ হাজার ২২১ একক। তার মধ্যে আমদানি ছিল ৪ হাজার ৩২২ একক আর রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার ছিল ৯০০ একক। শতাংশের হিসাবে পণ্য পরিবহন বেড়েছে ৫৮ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরের পণ্য পরিবহন হয়েছিল ৩ হাজার ৭৯৩ একক। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য পরিবহন হয়েছিল ৪ হাজার ২৩৭ একক কনটেইনার। অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য পরিবহন বেড়েছে দ্বিগুণ।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান গণমাধ্যমকে জানান, দুই দেশের উপকূলীয় পথে ক্রমাগত পণ্য পরিবহন হচ্ছে। ওসব জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে একটি জেটিতে ভেড়ানো হয়। চুক্তির আওতায় আসায় দুই দেশেই জাহাজগুলো জেটিতে ভিড়তে কম মাশুল গুনতে হয়। আর পণ্য পরিবহনে সময়ও কম লাগে। আর ভাড়াও এক-তৃতীয়াংশ কম লাগে বিধায় দিন দিন ওই পথজনপ্রিয় হয়ে উঠছে।