July 27, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, June 2nd, 2024, 6:08 pm

উপকূল, চর ও দুর্গম এলাকার উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার

দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে নদীর তীর, উপকূল, চর ও পার্বত্য এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে উন্নয়ন কার্যক্রমে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার।

সংসদে উত্থাপিত একটি সরকারি নথিতে বলা হয়েছে, ‘সরকার এই অঞ্চলের জনগণকে অন্যান্য অঞ্চলের মতো একই মানের পরিষেবা দেওয়ার জন্য কাজ করছে।’

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) মাধ্যমে এসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্প খরচে জ্বালানি প্রাপ্যতা বাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পারমাণবিক ও পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহারের দিকে মনোনিবেশ করছে সরকার।

নথিতে আরও বলা হয়েছে, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাকালে উপকূলীয়, হাওর ও চরাঞ্চলের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে বরিশাল, চট্টগ্রাম (পার্বত্য এলাকা ব্যতীত) ও সিলেট বিভাগে আঞ্চলিক একাডেমি স্থাপনের মাধ্যমে কার্যক্রম সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেবে বার্ড।

পাশাপাশি পল্লী উন্নয়নের বিভিন্ন মডেল এবং দারিদ্র্য বিমোচনে উদ্ভাবনী প্রযুক্তির প্রসারের মাধ্যমে টেকসই পল্লী উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জামালপুর ও রংপুরে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

এছাড়াও উপকূল, হাওর ও চরাঞ্চলে লবণাক্ততা, ঘূর্ণিঝড়, আকস্মিক বন্যা এবং বন্যার মতো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য দুর্যোগ প্রভাব মূল্যায়ন (ডিআইএ) পদ্ধতি প্রণয়নের কাজ হাতে নিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।

দুর্যোগ সম্পর্কিত ঝুঁকি সম্পর্কে জ্ঞান ও তথ্য একীভূত করে সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে পরিকল্পনা করার আগে স্টেকহোল্ডারদের জানানোর জন্য এই নথি প্রণয়ন করা হয়েছে।

প্রত্যন্ত এলাকাগুলোর উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিকল্পনা কমিশন ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় গৃহীত বিদ্যমান উদ্যোগের সঙ্গে সমন্বয় করে একটি ডিজিটাল রিস্ক ইনফরমেশন প্ল্যাটফর্ম (ডিআরআইপি) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়নে দুর্যোগের বিষয়টি যুক্ত করা হবে।

এছাড়াও এই প্ল্যাটফর্মের ফলে মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা সম্ভব হবে বলে নথিতে বলা হয়েছে।

প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে যেখানে স্যাটেলাইট পরিষেবা অসম্ভব, সেখানে অপটিক্যাল ফাইবার / মাইক্রোওয়েভভিত্তিক ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক বাস্তবায়নের ব্যাপারে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

পাশাপাশি, বন্যাপ্রবণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত দ্বীপগুলো যেখানে মৌলিক পরিষেবার অভাব রয়েছে, সেসব জায়গায় পরিষ্কার পানি, স্যানিটেশন ও পরিচ্ছন্নতাবিষয়ক অবকাঠামো ‘ওয়াশ’ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

সীমিত সম্পদ সত্ত্বেও পরিষেবার মান বাড়াতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে আর্সেনিক/লোহা অপসারণ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে উন্নত প্রযুক্তি স্থাপনের মাধ্যমে পানির ঘাটতি মোকাবিলা করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও প্রধান প্রধান নদীপথগুলোর স্মার্ট ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বাঁধ পুনর্নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও নাব্য বৃদ্ধির গুরুত্ব অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তুলে ধরা হয়েছে।

এছাড়া এসব অঞ্চলে চরম দারিদ্র্য মোকাবিলা করতে চর উন্নয়ন বোর্ড গঠন ও সুনির্দিষ্ট জীবিকা কর্মসূচির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

১৯৯৭ সাল থেকে ৮ লাখ ৪১ হাজারের বেশি পরিবার আবাসন ও ভূমি সহায়তা পেয়েছে, যার ফলে ৪২ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি ব্যক্তি উপকৃত হয়েছে।

নথিতে বলা হয়েছে, ‘দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান’ প্রকল্পসহ বেশ কয়েকটি সমাজকল্যাণমূলক কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে, যা বিশেষত দরিদ্র অঞ্চলে বার্ষিক ৮ লাখ ব্যক্তিকে ৮০ দিনের কর্মসংস্থান দিয়েছে।

এছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকার কাঠামো শক্তিশালী ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ইউনিয়ন পরিষদ আইনকে আরও আধুনিক ও সেবাবান্ধব করার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) আইন, ২০২৩ এর কাজ চলছে।

জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে দায়িত্ব সুর্নিদিষ্টভাবে ভাগ করে দেওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেন্দ্রীয় সরকারের যেসব কাজ দেওয়া যেতে পারে সেগুলো হস্তান্তরের উদ্যোগ চালিয়ে যেতে কাজ করছে সরকার।

——ইউএনবি