অনলাইন ডেস্ক :
ওপেনিং জুটিতে বাংলাদেশের মতো করুণ অবস্থায় আর কেউ নেই। এমনকি সহযোগী দেশগুলোর অবস্থাও তাদের চেয়ে ভালো। ওপেনারদের এমনই বেহাল অবস্থা যে র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ে-আয়ারল্যান্ডের চেয়েও বাংলাদেশের ওপেনিং জুটির অবস্থান পেছনে। আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিং, অতীত ও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিচার করে এই তালিকা প্রকাশ করেছে। গত শনিবার পর্যন্ত ম্যাচ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে এই তালিকায়। আইসিসির প্রকাশিত তালিকার এক নম্বর ওপেনিং জুটিটি হলো পাকিস্তানের দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের। দুই ওপেনার আইসিসির টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের সেরা তিনে আছেন। তাদের মধ্যে র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বরে থাকা রিজওয়ান কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে ১২৮.৫৭ স্ট্রাইক রেটে ৫২.৫৩ গড়ে ব্যাটিং করে আসছেন। শেষ ৫ ম্যাচেই তার হাফসেঞ্চুরি তিনটি। এরমধ্যে দুইবার ৮৮ রানের ইনিংস খেলেছেন। র্যাঙ্কিংয়ের তিন নম্বরে থাকা বাবর আজমের সাম্প্রতিক ফর্ম কিছুটা খারাপ হলেও বিশ্বের অন্যতম ভয়ংকর ব্যাটার তিনি। টি-টোয়েন্টিতে ১৩০-এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ৪৩.৪১ গড়ে ব্যাটিং করছেন। শেষ ৫ ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি একটি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছেন ৮৭ রানের অপরাজিত ইনিংস। সেরা ওপেনিং জুটির তালিকার দুই নম্বরে আছেন ভারতের দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল ও রোহিত শর্মা। ১৪০.৪০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করা রাহুল শেষ ৫ ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করেছেন তিনটি। আইসিসির টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে তার অবস্থান ১৪ নম্বরে। তার পার্টনার রোহিত শর্মার স্ট্রাইক রেটে প্রায় তারই মতো ১৪০.৫৯। ৩১.৯৪ গড়ে টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিং করে আসছেন। যদিও সর্বশেষ ৫ ইনিংসে তার কোন হাফসেঞ্চুরি নেই। সেরা ওপেনারের তালিকার তিন নম্বরে আছেন নিউজিল্যান্ডের ডেভন কনওয়ে ও মার্টিন গাপটিল। রোববার ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলা কনওয়ে যেকোনও প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন। আইসিসির টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের ৭ নম্বরে থাকা কনওয়ের স্ট্রাইক রেট ১৩৮.২৮। এ ছাড়া মার্টিন গাপটিলের স্ট্রাইক রেট ১৩৫.৮। আইসিসির র্যাঙ্কিংয়ে তার অবস্থান ১০ নম্বরে। অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার সেরা জুটির তালিকার চার নম্বরে আছেন। নিজেদের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে দারুণ ছন্দেও আছেন ওয়ার্নার। আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে ৪৮ নম্বরে থাকা অজি ব্যাটারের স্ট্রাইক রেট ১৪১.১৮। তার পার্টনার অ্যারন ফিঞ্চের স্ট্রাইক রেট অবশ্য আরও বেশি। ১৪৪.৮৮ স্ট্রাইক রেটে র্যাঙ্কিংয়ের ছয় নম্বরে থাকা এই ব্যাটার ভালোই মারকুটে ব্যাটিংয়ের উদাহরণ রাখছেন। বিশ্বকাপের প্রাথমিক পর্ব খেলতে যাওয়া শ্রীলঙ্কাও ওপেনারদের সেরা জুটির তালিকার পাঁচ নম্বর দখল করে আছে। র্যাঙ্কিংয়ের ৮ নম্বরে থাকা পাথুম নিসাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস মিলে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছেন। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে তালিকার ছয় নম্বরে অবস্থান আফগানিস্তানের দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও হযরতউল্লাহ জাজাইর। আসন্ন বিশ্বকাপে এই দুই ব্যাটারের টর্নেডো ইনিংস দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। র্যাঙ্কিংয়ের ২৬ নম্বরে থাকা জস বাটলার ও র্যাঙ্কিংয়ে ১৬৬ নম্বরে থাকা অ্যালেক্স হেলসের জুটিও সাম্প্রতিক সময়ে কম আলোচিত নয়। গত রোববার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই বিস্ফোরক জুটির নমুনা দেখা গেছে। তবে অতীতের কিছু বাজে পারফরম্যান্সে তাদের অবস্থান হয়েছে সাত নম্বরে। দুই ওপেনারের সর্বশেষ ৫ ম্যাচের একটিতেও ৩০ প্লাস ইনিংস নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্টন ডি কক ফর্মে থাকলেও তেম্বা বাভুমা আছেন অফফর্মে। তার ব্যর্থতা নিয়ে সম্প্রতি সমালোচনাও বিস্তর। ফলে ওপেনিং জুটির হিসেবে তারাও পিছিয়ে গেছেন। তাদের অবস্থান ৮ নম্বরে। পল স্টারলিং ও অ্যান্ডি বালবার্নি জুটি আয়ারল্যান্ডকে নয় নম্বরে নিয়ে গেছেন। টি-টোয়েন্টিতে তাদের পারফরম্যান্স আশাব্যঞ্জক নয় যদিও। সেই তুলনায় সংযুক্ত আরব আমিরাত বেশ এগিয়ে। মোহাম্মদ ওয়াসিম ও চিরাগ সুরির সময়টা একেবারেই খারাপ যাচ্ছে না। ওয়াসিম তো র্যাঙ্কিংয়ের ৯ নম্বরে উঠে গেছেন। পুরো বিশ্বে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ফেরি করে বেড়ানো ক্যারিবীয়দের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। ব্রেন্ডন কিং ও কাইল মায়ার্স জুটি অফফর্মে থাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের এমন রুগ্ন অবস্থা। ওপেনিং জুটির তালিকায় তাদের অবস্থান ১১ নম্বর। আইসিসির ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ে ২৫ নম্বরে থাকা জর্জ মানসে ও ৭৮ নম্বর র্যাঙ্কিংয়ে থাকা ক্যালাম ম্যাকলিওডের ব্যাটে চড়ে তাদের অবস্থান হয়েছে ১২ নম্বর। ১৩ নম্বরে আছে জিম্বাবুয়ে। ক্রেইগ আরভিন ও রেগিস চাকাভা জুটি বাংলাদেশের চেয়েও জিম্বাবুয়েকে এগিয়ে রেখেছেন। বাংলাদেশের আগে অবস্থান নেদারল্যান্ডের। ৪৭ নম্বর র্যাঙ্কধারী ম্যাক্স ও’ডাউড ও ১৪৭ র্যাঙ্কধারী স্টেফান মাইবার্গ নেদারল্যান্ডকে টেস্ট খেলুড়ে বাংলাদেশের চেয়েও উপরে রেখেছেন। বাংলাদেশের অবস্থান ১৫ নম্বর। মেকশিফট ওপেনার হিসেবে গত কিছু দিন ধরে খেলছেন সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের পারফরম্যান্সে ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান নির্ধারিত হয়েছে। যদিও নিয়মিত ওপেনারদের পারফরম্যান্সও তেমন আহামরি কিছু নয়। আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে ১৫১ নম্বর অবস্থানে মিরাজ। অন্যদিকে সাব্বিরের অবস্থান ৫৮৯। এই জুটি সফল না হওয়ায় ইতোমধ্যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মেকশিফট ওপেনার থিওরি থেকে সরে এসেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তালিকার সর্বশেষ দেশটির নাম নামিবিয়া।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা