জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
বন্যার পানি ঢুকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে রোগ নির্ণয়ের দুটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র সিটি স্ক্যান ও ম্যাগনেটিক রিসোনেস ইমেজিং (এমআরআই) বিকল হয়ে গেছে। রোগ নির্ণয়ের গুরুত্বপূর্ণ দুটি যন্ত্র বিকল হওয়ায় ভোগান্তি ও বিপাকে পড়েছেন সেবাপ্রার্থীরা। এতে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা ব্যক্তিরা বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছেন।
এর মধ্যে ১৪ দিন পর গত শুক্রবার সিটি স্ক্যান যন্ত্র মেরামত করে দুই দিন চালু করার পর আবার ত্রুটি দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে ১৭ দিনেও সচল করা যায়নি এমআরআই যন্ত্রটি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ১৮ জুন হঠাৎ বন্যার পানি হাসপাতালের নিচতলায় প্রবেশ করে। এতে রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের দুটি যন্ত্রের পাশাপাশি, জেনারেটর বিকল হয়ে যায়। এ ছাড়া হাসপাতালের নিচতলার প্রশাসনিক কার্যালয়, বিভিন্ন আসবাব, কম্পিউটার সরঞ্জাম, আলমারি ও তিনটি ওয়ার্ডের বিভিন্ন সরঞ্জাম নষ্ট হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, বন্যার কারণে ক্ষয়ক্ষতি হওয়া সরঞ্জামের মূল্য নির্ধারণের কাজ চলছে। এ জন্য এখনই কত টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেটি বলা মুশকিল। অন্যদিকে জেনারেটর রক্ষণাবেক্ষণ কাজও শেষ হয়েছে। সেটি চালু হয়েছে। তবে রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের সিটি স্ক্যান যন্ত্র গত শুক্রবার মেরামত করে সচল করা হলেও রোববার যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। আপাতত সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে। আবার এমআরআই যন্ত্র মেরামতের কাজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০টি সিটি স্ক্যান করা হয়। এমআরআই করা হয় প্রতিদিন ৫ থেকে ৬টি। সরকারিভাবে এসব পরীক্ষার জন্য এমআরআই করাতে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা এবং সিটি স্ক্যান করাতে দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা নির্ধারণ করা রয়েছে।
এ বিষয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল গফফার বলেন, বন্যার পানি ঢুকে রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের দুটি রোগ নির্ণয় যন্ত্র বিকল হয়েছিল। সেগুলোর মধ্যে সিটিস্ক্যান যন্ত্রটি মেরামত করে শনিবার থেকে চালু করা হয়েছিল। তবে সেটিতে আবার ত্রুটি দেখা দেওয়ায় মেরামত করা হচ্ছে। অন্যদিকে এমআরআই যন্ত্রটির মেরামতের কাজ চলমান আছে। আশা করা হচ্ছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে সেগুলো মেরামত করে সেবা দেওয়া হবে।
আবদুল গফফার আরও বলেন, যন্ত্র দুটি ছাড়াও হাসপাতালের বেশ কিছু আসবাব ও সরঞ্জাম নষ্ট হয়েছে। সেগুলোর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়া টাকার অঙ্কে সেগুলোর হিসাব তৈরি করা হচ্ছে।
এদিকে সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, বন্যার পানিতে জেলার ১১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো রোগ নির্ণয় যন্ত্র বিকল হয়নি। তবে সাতটি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ‘কোল্ড স্টোরেজ’বিকল হয়ে পড়েছিল। বন্যার পানি নামার পরপরই সেগুলো মেরামত করা হয়েছে।
সিলেটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত বলেন, বন্যায় জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, বিশ্বনাথ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, গোলাপগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকা রাখার জন্য ব্যবহৃত কোল্ড স্টোরেজগুলো বিকল হয়েছে। এর বাইরে আর কোনো যন্ত্রপাতি বিকল হয়নি। কোল্ড স্টোরেজগুলো মেরামত করে সচল করা হয়েছে। বন্যায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর যন্ত্রপাতি বিকল না হলেও মালামাল ও স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি