November 9, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, March 5th, 2023, 4:12 pm

কমেছে রেলে কনটেইনার পরিবহনের পরিমাণ

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কমেছে রেলে কনটেইনার পরিবহনের পরিমাণ। বিগত ২০২২ সালের আগস্টে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকায় কমলাপুর আইসিডি পর্যন্ত ৪ হাজার ৩১৭টি কনটেইনার পরিবহন করা হয়। কিন্তু ৬ মাস পর চট্টগ্রাম থেকে আমদানি কনটেইনার ১ হাজার ৩১১টি পরিবহন কমছে। তবে একই সময়ের ব্যবধানে ঢাকা আইসিডি থেকে রপ্তানিমুখী কনটেইনার পরিবহন ৬৫টি বেড়েছে। আমদানি কমে যাওয়ায় কমলাপুর আইসিডি থেকে খালি কনটেইনার পরিবহন ৬ মাসের ব্যবধানে ১ হাজার ৫৬৪টি কমে ৭৭০টিতে নেমে এসেছে। এ সময় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মোট কনটেইনার পরিবহন কমেছে ২৭ শতাংশ। রমজানের আগে প্রতি বছর ব্যবসায়ীরা আমদানির পরিমাণ বাড়ালেও এ বছর তার উল্টো ঘটছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রেলে কনটেইনার পরিবহন কার্যক্রম নিরাপদ ও সাশ্রয়ী হওয়ায় একসময় জনপ্রিয় ছিল। তখন বাংলাদেশ রেলওয়েকে চট্টগ্রাম বন্দরসংলগ্ন রেলওয়ে ইয়ার্ডে আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনারের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হতো। ইঞ্জিন ও লোকবল স্বল্পতায় ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনের সুবিধা সম্ভব হতো না। কিন্তু বর্তমানে রেলওয়ের সক্ষমতা বেড়েছে। কিন্তু আমদানি পণ্যের জোগান কমে যাওয়ায় কনটেইনার লোডিং-আনলোডিং ইয়ার্ড প্রায়ই খালি পড়ে থাকছে। সূত্র জানায়, কনটেইনার পরিবহন কমে যাওয়ার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে কনটেইনারবাহী ট্রেনের সংখ্যাও কমেছে। একসময় প্রতিদিন উভয়পথে গড়ে ৩টি করে কনটেইনারবাহী ট্রেন চলাচল করলেও বর্তমানে তা কমে গড়ে দুটিতে নেমেছে। ২০২১ সালের নভেম্বরে আপ (চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী) রুটে ৮৯টি ও ডাউনে (ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী) ৯০টি, ডিসেম্বরে আপে ৯৭টি ও ডাউনে ৯৫টি এবং জানুয়ারি মাসে আপে ৯৭টি ও ডাউনে ৯৫টি করে ট্রেন কনটেইনার পরিবহন করেছে। আর সর্বশেষ অর্থবছরের শেষ মাসে অর্থাৎ গত জুনে রেলওয়ে আপ ও ডাউনে ৯৪টি করে কনটেইনার ট্রেন চালিয়েছে। কিন্তু চলতি অর্থবছরের প্রথম ৩ মাস কনটেইনার পরিবহন কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও ফেব্রুয়ারি মাসে গড়ে ৬০টিতে নেমে এসেছে কনটেইনারবাহী ট্রেনের সংখ্যা। মূলত দেশে ডলার ও তারল্য সংকটে আমদানি বাণিজ্যে স্থবিরতা চলছে। ব্যাংকগুলোর ঋণপত্র (এলসি) খুলতে অনীহায় চাহিদা অনুযায়ী আমদানি হচ্ছে না। ফরে চাহিদামাফিক কনটেইনার পরিবহনে রেলওয়ে সক্ষম হয়ে উঠলেও ব্যবসায়ীরা কনটেইনারের জোগান দিতে পারছে না। ফলে রপ্তানি বাড়লেও ৬ মাসের ব্যবধানে প্রায় ৩১ শতাংশ আমদানি কমেছে। সূত্র আরো জানায়, বিগত ২০২২ সালের নভেম্বরে রেলওয়ে কনটেইনার পরিবহন থেকে রেকর্ড ১০ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার ৮১ টাকা আয় করলেও ডিসেম্বরে আয় ৭ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৬১১ টাকায় নেমে আসে। জানুয়ারির আয় বেড়ে ৯ কোটি ১৮ লাখ ৬৯ হাজার ৭৬৫ টাকায় উন্নীত হয়েছে। কিন্তু ফেব্রুয়ারির আয় আবারো কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রেলে একসময় পণ্য পরিবহনের জন্য চাহিদার বিপরীতে ইঞ্জিনের স্বল্পতা ছিল। কয়েক বছর আগেও দৈনিক ১৬টি ইঞ্জিনের চাহিদার বিপরীতে ৯ থেকে ১০টি সরবরাহ পাওয়া যেত। বর্তমানে রেলের ইঞ্জিন সরবরাহের সক্ষমতা বেড়েছে। কোরিয়া থেকে ৩০টি নতুন লোকোমোটিভ আমদানির কারণে ইঞ্জিন স্বল্পতা কেটে গেছে। কিন্তু রেলপথে পণ্য পরিবহন বিশেষত কনটেইনারবাহী ট্রেনের সংখ্যা কমে যাওয়ায় পণ্য পরিবহন কার্যক্রম ১০-১১টি ইঞ্জিনেই সীমাবদ্ধ থাকছে। এদিকে এ বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদানি পণ্যবাহী ও কমলাপুর আইসিডি থেকে রপ্তানিমুখী কনটেইনার পরিবহনে রেলওয়ের ওপর ব্যবসায়ীদের আস্থা রয়েছে। একসময় চট্টগ্রাম থেকে আমদানি পণ্যের কনটেইনার পরিবহনে দীর্ঘসূত্রতা থাকলেও বর্তমানে রেলওয়ে ইঞ্জিন ও লোকবল বৃদ্ধির মাধ্যমে শতভাগ সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু দেশে আমদানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সক্ষমতা অনুযায়ী সেভাবে কনটেইনারের চাপ নেই।