July 27, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, December 25th, 2022, 1:14 pm

কম দামে বিদ্যুৎ বিক্রিতে বিপুল ঘাটতি দূর করতে ভর্তুকি চেয়েছে পিডিবি

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বেশি দামে কিনে কম দামে বিদ্যুৎ বিক্রিতে বিপুল ঘাটতিতে পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। প্রতিষ্ঠানটির ৪ মাসেই ১৭ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা ঘাটতিতে পড়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই- ৪ মাসে ওই পরিমাণ ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এখন প্রতিষ্ঠানটি ঘাটতি দূর করতে সরকারের কাছে ভর্তুকি চেয়েছে। সেজন্য গত নভেম্বরে পিডিবি বিদ্যুৎ বিভাগে এ-সংক্রান্ত চিঠি পাঠায়। ওই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ ডিসেম্বর ভর্তুকি হিসেবে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করতে বিদ্যুৎ বিভাগ অর্থ বিভাগকে একটি চিঠি দিয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দীর্ঘদিন ধরেই পিডিবি উৎপাদকদের কাছ থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে কম দামে বিক্রি করছে। ফলে পিডিবিতে লোকসান বা ঘাটতির ধারা চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববাজারে তেল-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি এবং মার্কিন ডলারের মূল্যমান বাড়ায় আরো বেড়ে চলছে ঘাটতির পরিমাণ। গত আগস্ট থেকে নভেম্বর ওই ৪ মাসেও বিপুল পরিমাণ ঘাটতি তৈরি হয়েছে। আর বেড়েই চলছে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বকেয়ার পরিমাণ। অর্থ ঘাটতির কারণে পিডিবি কেন্দ্রগুলোর বিল পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে। সেজন্যই সরকারের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য সম্প্রতি বাড়ানো হয়েছে। ফলে ঘাটতি কিছুটা কমবে। ইতোমধ্যে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের খুচরা মূল্যবৃদ্ধির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। কারণ সরকার বিদ্যুৎ-জ¦ালানিতে ভর্তুকি প্রদান থেকে সরে আসছে। ফলে দাম না বাড়িয়েও উপায় নেই। তারই ধারাবাহিকতায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বিদ্যুতের খুচরা দাম নির্ধারণ করতে আগামী ৮ ও ৯ জানুয়ারি শুনানি ডেকেছে। ওই শুনানির পরই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা আসবে। বিইআরসিতে ৬টি বিতরণ কোম্পানির গড়ে প্রায় ২৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির আবেদন করেছে।
সূত্র আরো জানায়, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) লোকসান সমন্বয়ের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রতি ইউনিট (কিলোওয়াট) বিদ্যুতের দাম ২০ দশমিক ২৯ শতাংশ হারে ১ টাকা ৩৫ পয়সা বৃদ্ধির আবেদন করেছে। আর পিডিবি ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ হারে দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে। বর্তমানে দেশে যে হারে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হয়েছে ও হচ্ছে ওই হারে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে না। ফলে ক্যাপাসিটি চার্জসহ নানা অপব্যয়ের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ও দাম বেড়ে যাচ্ছে। ঘাটতি বন্ধ করতে হলে ওই অপব্যয়গুলোও বন্ধ করা জরুরি।
এদিকে ভতুর্কির বিষয়ে অর্থ বিভাগে পাঠানো বিদ্যুৎ বিভাগের উপ-সচিব সাইফুল ইসলাম আজাদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ক্রয় মূল্যের চেয়ে কম দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করায় ৪ মাসের মূল্যহার ঘাটতি ১৭ হাজার ৭৬৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। বিদ্যুৎ বিক্রি থেকে গত এপ্রিল মাসে পিডিবির ঘাটতি ৪ হাজার ১৮৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। মে, জুন ও জুলাই মাসে সংস্থাটির ঘাটতি ১৩ হাজার ৫৮০ কোটি ১১ লাখ টাকা। বেসকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর (আইপিপি, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল) এবং ভারত থেকে আমদানিকৃত বিদ্যুতের দাম যথাসময়ে পরিশোধ ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ৪ মাসের মূল্যহার ঘাটতির টাকা ভর্তুকি হিসেবে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হলো।