December 4, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, January 24th, 2022, 9:07 pm

করোনায় বাংলাদেশ বিমানের শিডিউল ফ্লাইট পরিচালনায় সঙ্কটের আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কর্মীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে। আর ফ্লাইট পরিচালনায় সরাসরি সম্পৃক্ত বৈমানিক ও কেবিন ক্রুরা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় পুরো এয়ারলাইনসের জন্যই ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। কারণ আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ক্রুদের প্রতিবার কভিড পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে একেবারে শেষ মুহূর্তে আক্রান্তের রিপোর্ট এলে তা শিডিউল ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করে। গত ২০ দিনের মধ্যে প্রায় ৭০ জন কেবিন ক্রু করোনা পজিটিভ হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বিমানের কোনো ক্রু করোনা আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েনি। আবার শনাক্তের ১৪ দিন অতিবাহিত হওয়ায় বেশ কয়েকজন ক্রু নিয়মিত ফ্লাইট কার্যক্রমেও যুক্ত হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চলতি মাসে বাংলাদেশ বিমানের অন্তত ৮৮ জন বৈমানিক ও কেবিন ক্রু করোনা সংক্রমিত হয়েছে। যার মধ্যে ১৮ জন বৈমানিক। বিমান কর্মীদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার প্রভাবে শিডিউল ফ্লাইট পরিচালনায় সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ বৈমানিক ও কেবিন ক্রুরা সরাসরি ফ্লাইট কার্যক্রমে থাকায় তাদের প্রতিনিয়ত পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আর যখন শিডিউল ফ্লাইটের কোনো ক্রু করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায় তখনই সমস্যা তৈরি হয়। ফ্লাইটে যাওয়ার আগমুহূর্তে করোনা পরীক্ষার রিপোর্টে কোনো ক্রু করোনা পজিটিভ হলে তখন অন্য ক্রু দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করতে হচ্ছে। আবার চাইলেই নির্দিষ্ট কিছু বৈমানিক দিয়ে ইচ্ছেমতো ফ্লাইট পরিচালনা করা যায় না। কারণ একজন বৈমানিক মাসে সর্বোচ্চ কত ঘণ্টা ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে তা আন্তর্জাতিকভাবে নির্দিষ্ট করে দেয়া আছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস অভ্যন্তরীণ রুটের পাশাপাশি ১৬টি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব, দুবাই, আবুধাবিতে নিয়মিত ফ্লাইট চলছে। একইভাবে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, লন্ডন, ম্যানচেস্টারসহ শিডিউলে থাকা সব রুটেই নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান। বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা ২১টি। তার মধ্যে ১৬টি নিজস্ব ও ৫টি লিজ নেয়া। নিজস্ব বাহনগুলোর মধ্যে বোয়িং-৭৭৭-৩০০ ইআর চারটি, বোয়িং-৭৮৭-৮ চারটি, বোয়িং-৭৮৭-৯ দুটি, বোয়িং-৭৩৭ দুটি ও ড্যাশ-৮ চারটি। আর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে বর্তমানে ১৫৮ জন বৈমানিক রয়েছে। ফ্লাইটের সংখ্যা অনুযায়ী প্রয়োজন আরো ৪৩ জন। তার মধ্যে ২৬ জনকে আংশিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ছুটিতে রাখা হয়েছে। ১৫ জনের এখনো প্রশিক্ষণ শুরুই হয়নি। বিমানের সঙ্গে চাকরির চুক্তি অনুযায়ী একজন পাইলটের মাসে নির্ধারিত কর্মঘণ্টা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ৬০ ঘণ্টা ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে ৭৫ ঘণ্টা।
সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে বিমানের পাইলট ও কেবিন ক্রুদের করোনা পরীক্ষা একটি বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে করানো হচ্ছে। কোম্পানির প্রতিনিধিরা যাত্রার ৬ ঘণ্টা আগে কেবিন ক্রুদের অপারেশনস বিল্ডিং থেকে এবং ককপিট ক্রুদের স্যাম্পল তাদের বাসায় গিয়ে সংগ্রহ করে। ফলে অনেক সময় উড়োজাহাজে ওঠার আগমুহূর্তেও বৈমানিক ও কেবিন ক্রুরা করোনা পজিটিভ হওয়ার রিপোর্ট পায়। সেক্ষেত্রে তারা আর ওই ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারে না। তখন ফ্লাইট অপারেশনস বিভাগকে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হয়।
এদিকে বিমানের ফ্লাইট অপারেশনস বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত বিমানের শিডিউল ফ্লাইটগুলো পরিচালনায় কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। তবে যেসব বৈমানিক ও কেবিন ক্রু করোনা আক্রান্ত হয়েছে তাদের ফ্লাইট পরিচালনার শিডিউল যখন আবারো ঘুরে আসবে, তখন যদি তারা সুস্থ না থাকে তখন বিমানের ফ্লাইট পরিচালনায় সঙ্কট তৈরি হবে।