July 27, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, December 2nd, 2021, 8:51 pm

কারাগারে মেয়র আব্বাস

রাজশাহী কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীকে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করেন বোয়ালিয়া মডেল থানার পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর কাটাখালীর মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে করা তার আপত্তিকর মন্তব্যের কারণ জানতে পুলিশ সিএমএম আদালতের কাছে এ আবেদন করে। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার (২রা ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় মেয়র আব্বাসকে আদালতে তোলা হয়। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (সদর) মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত বুধবার (সকালে রাজধানীর রাজমণি ইসা খাঁ নামের একটি আবাসিক হোটেল থেকে তাকে আটক করে র‌্যাব। পরে ওই দিন রাতেই র‌্যাবের কাছ থেকে আব্বাসকে গ্রহণ করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ। এরপর তাকে নিয়ে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা দেওয়া হয়। সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে তাকে নিয়ে রাজশাহী পৌঁছায় পুলিশ। রাজশাহীতে আসার পর তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। তিনি জানান, আদালতে সোপর্দের সময়ই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। তবে এর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। আগামী রোববার রিমান্ড আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা আছে। শুনানি না হওয়ায় আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, মূলত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ২৩ নভেম্বর রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মামলাটির বাদী রাসিকের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল মোমিন। পুলিশ সদর দপ্তরকে মামলার বিষয়টি জানানো হয়। সেখান থেকে ২৪ নভেম্বর অনুমোদনের পর মামলাটি গ্রহণ করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে আছেন উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাবুল আলম। গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, মামলাটি গ্রহণ হওয়ার পর থেকেই কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী আত্মগোপনে যান। এমনকি গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই উদ্দেশ্যে ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। গত বুধবার ভোরে তাকে আটকের পর পুলিশকে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তাকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব তার পাসপোর্ট জব্দ করে। ২২ নভেম্বর রাত থেকে ১ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের অডিও ক্লিপে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তিই কাল হয়ে দাঁড়ায় মেয়র আব্বাসের। এরপর একে একে তিনি পৌর যুবলীগ, জেলা আওয়ামী লীগ, কাউন্সিলরদের অনাস্থাসহ পরিশেষে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে রাজশাহীর কারাগারে রয়েছেন। সর্বশেষ মেয়র পদটিও হারাতে বসেছেন বিতর্কিত এ মেয়র। গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্যটি নিশ্চিত করেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আবদুল জলিল। তিনি বলেন, ২৫ নভেম্বর মধ্যরাতে আমার ডাক বাংলোতে কাটাখালী পৌরসভার ১২ কাউন্সিলর স্বাক্ষরিত অনাস্থাপত্র ও পৌরসভার রেজুলেশনের কাগজাদি গ্রহণ করি। এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিধিবদ্ধ আইনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই অনাস্থাপত্রের বিপরীতে একটি প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গত রোববার পাঠিয়েছি। তার পদ থেকে অব্যাহতি পত্র এখনও হাতে পাইনি। হয়ত আজ (গতকাল বৃহস্পতিবার) অথবা আগামী রোববারের মধ্যে পেয়ে যাবো। জেলা প্রশাসক বলেন, যতদূর শুনেছি সেই ফাইল উঠেছে এবং তার সাসপেনশন অর্ডারও হয়েছে। এখন শুধু হাতে পাওয়ার অপেক্ষা। অর্ডারটি হাতে পেলেই পরবর্তী ধাপ অনুযায়ী পেনেল মেয়রকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু তিনি (আব্বাস) ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন সেহেতু এখন তার পদে থাকার কোনো সুযোগই নেই। তিনি বলেন, কোনো ফৌজদারি মামলার অপরাধে কেউ যদি গ্রেপ্তার হয় এবং তার বিরুদ্ধে যদি চার্জশিট হয়। তাহলে তো তার আর এ পদে থাকার যোগ্যতা থাকে না। চার্জশিট গ্রহণ হলেই সে পদ হারাবে। কাজেই সে পদ হারাবে, এটা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। দুদিনও লাগতে পারে অথবা বৃহস্পতিবারেও হয়ে যেতে পারে বলে জানান জেলা প্রশাসক মো. আবদুল জলিল।