November 7, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, December 20th, 2021, 7:36 pm

কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে অভিযোগ করিনি: শবনম ফারিয়া

অনলাইন ডেস্ক :

অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া সম্প্রতি পারিবারিক সহিংসতা নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। বিষয়টি গণমাধ্যম গুরুত্বসহকারে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। যার ফলে অভিযোগের তীর যার দিকে ছুটে গিয়েছিল, তিনি সাবেক স্বামী অপু। পরে অপু পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেন সোশ্যাল হ্যান্ডেলে। ফারিয়া তার পোস্টটিকে সম্প্রতি ‘পারিবারিক সহিংসতায় মৃত’ এলমা প্রসঙ্গে দিয়েছেন উল্লেখ করে গণমাধ্যমকর্মীদের ‘আমার কোনো বিষয়ে দয়া করে ওই ভদ্রলোককে টানবেন না!’ বলে অনুরোধ জানিয়েছেন। এ ছাড়া দুজনের মারামারিতে আঙুল ভেঙেছে উল্লেখ করে বলেন, সে সময় আমি ‘কিন্তু এমন না যে বিষয়টা ও ইচ্ছে করেই করেছে! রাগারাগির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়, তারপর আমার আঙুল ভেঙে যায়। তাহলে এখন উনি অস্বীকার কেন করছেন?’ রোববার দিবাগত রাতে শবনম ফারিয়া নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে সব প্রসঙ্গে অবতারণা সম্পর্কে লেখেন। ফারিয়া বলেন, “আমি আমার সেই পোস্টে কোনোভাবেই কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে অভিযোগ করিনি। সম্পূর্ণ অভিযোগ ছিল আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির দিকে! ডিভোর্স জিনিসটা এত নোংরাভাবে না দেখলে হয়তো অনেকগুলো মেয়ের এভাবে জীবন দিতে হতো না! আমার পয়েন্ট ছিল, যেদিন হাতের আঙুল ভাঙে সেদিনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম এই বিয়ে অলরেডি টক্সিক হয়ে গেছে! কিন্তু আমরা আমাদের জীবনের প্রায় আড়াই বছর একটা মরা গাছে পানি দিয়ে গেছি শুধু ‘মানুষ কী বলবে’ এটা ভেবে!” আবেগের বশে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছিলেন জানিয়ে ফারিয়া বলেন, ‘এত দিন পর এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলা আমার জন্য বিব্রতকর। কিন্তু এত সংবাদকর্মী ভাইদের কল, কয়দিন ফোন বন্ধ করে রাখব? তাই অনিচ্ছার সত্ত্বেও কিছু কথা বলতে হচ্ছে। প্রথমত, আমি একটা পোস্ট শেয়ার করেছিলাম, যেখানে আমি কিছুটা আবেগের বসে ব্যক্তিগত একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছিলাম। শেয়ার করাটা সমস্যা না, সমস্যা হলো- আমার পর্দার বাইরের জীবন এত সাধারণ কিংবা আমার পরিবার এবং চারপাশের মানুষ আমাকে এতই সাধারণভাবে ট্রিট করে, আমি হয়তো বুঝি না যে আমিও সম্ভবত ‘তারকা তালিকায়’ পড়ি এবং আমার একটা কথা নিয়ে আলোচনা হয়! সম্ভবত সে জন্যেই প্রায়ই কিছুটা ব্যক্তিগত কথা লিখে ফেলি।’ দেবীখ্যাত জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি বিবাহবিচ্ছেদের পর সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আমার জীবনে যিনি ছিলেন তাকে সম্মান দেখাতে। যদিও ওনার প্রতি আমার অভিযোগ- রাগ-ক্ষোভ কোনোটারই অভাব নেই। আমি শিওর, ওনারও একই অনুভূতি! আমার বিশ্বাস, তবুও উনিও সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতেই চেষ্টা করেছেন! এখন আঙুল ভাঙার বিষয়টা, এটা অবশ্যই সত্যি, কিন্তু এমন না যে বিষয়টা ও ইচ্ছে করেই করেছে! রাগারাগির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়, তারপর আমার আঙুল ভেঙে যায়। তাহলে এখন উনি অস্বীকার কেন করছেন? হঠাৎ এমন পাবলিক প্রতিক্রিয়া হলে আপনি কী করবেন? আপনিও ডিনাই করবেন!’ বিষয়টা এখানেই শেষ করতে চান জানিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘নিউজে আমার নামের সঙ্গে যার নাম বারবার আসছে তিনি বিষয়টা অস্বীকার করছেন আর এত বছর পর যেহেতু কথা উঠছে, তখন বিষয়টা প্রমাণ করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। কিন্তু হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ কিংবা বিল কার কার্ড থেকে পরিশোধ হয়েছে, সেগুলো বের করার সুযোগ এখনো আছে। কিন্তু যেহেতু সেই ব্যক্তির মা কল করলে আমি তাকে এখনো ‘মা’ ছাড়া অন্য কিছু ডাকতে পারি না, তাই মা এবং আমার নিজের সম্মান রক্ষার্থে বিষয়টা এখানেই শেষ করতে চাই!’ এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইলে বিচ্ছেদের সময়ই বলতেন- এমনটাই জানান ফারিয়া। তিনি বলেন, পুরনো বিষয় ঘেঁটে কিচ্ছু পাব না আমরা দুজন। এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছে থাকলে বিচ্ছেদের সময়ই আমি এত প্রেম না দেখিয়ে এসবই বলতাম। হয়তো তখন আমি যেসব সমালোচনা হজম করেছি তা করতে হতো না। লাভটা আমারই হতো। চতুর্থত, কোথায় যেন সংবাদ দেখলাম- এতদিন পর জানা গেল, কী কারণে বিচ্ছেদ হয়েছে আমাদের, এই ঘটনাই নাকি কারণ। বুঝলাম, এখনো সবার খুব জানার আগ্রহ- আমাদের বিচ্ছেদের কারণ কী! ফারিয়া ও অপুর কখনো সংসারই হয়নি, স্পষ্ট জানিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমাদের আসলে সে অর্থে কখনো সংসারই করা হয়নি। কারণ আমাদের নিজেদের কখনো কোনো বাসা ছিল না! ওদের তিন বেডের বাসায় ওর মা, ওরা চার ভাই, ভাবি, ভাতিজি এবং দুজন বুয়া থাকত! সেখানে আমার থাকার জন্য যে ঘর বরাদ্দ ছিল, সেটির সঙ্গে অ্যাটাচড কোনো ওয়াশরুম ছিল না। ওর মায়ের বেডরুমে সাতজনের সঙ্গে ওয়াশরুম শেয়ার করতে হতো। তাই আমি খুব বেশিদিন সেই বাসায় থাকিনি। আমরা তিন বোন, এত ছেলেদের ঘরে এডজাস্ট করতে সমস্যা হতো। তা ছাড়া আমার শুটিংয়ের জন্য অনেক কস্টিউম-প্রপ্স- অনেক কিছু থাকে। আলাদা একটা কস্টিউমরুমই লাগে! তা ছাড়া আমার মায়ের বাসা আর তাদের বাসা কাছাকাছি হওয়ায় এবং দুজনেরই বাবা না থাকায় আমরা দুজন দুজনের মায়ের সঙ্গে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতাম! এর ফলে স্বাভাবিক ম্যারিড কাপলের মধ্যে যেসব ইন্টিমেসি থাকে তা আমাদের মধ্যে ছিল না! মূলত এ কারণেই আমরা আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্তে আসি। অবশ্যই এর বাইরে আরো হাজারটা কারণ তো আছেই! সেগুলোও পাবলিক প্ল্যাটফর্মে লিখে আরো আলোচনা চাই না।’ তিনি বলেন, এতদিন পরে এ কথা উঠল কেন? উত্তর- ‘আমার দোষ!’ আমি অতি আবেগী হয়ে ঘরের কথা পরকে জানিয়েছি। এভাবে একটা পাবলিক প্ল্যাটফর্মে লেখার আগে এইটার ফলাফলগুলো আমার ভাবার দরকার ছিল! কিন্তু একটা বিষয় না বললেই নয়, অনেকের মন্তব্য আমার সেই বিচারপতির মতো লাগছে, যিনি বলেছিলেন রেপ হওয়ার তিন দিন পর কেন কেইস করেছে? আরো আগে করা উচিত ছিল। তবে এ বিষয়টা নিয়ে তখনো আমি আমার ব্যক্তিগত ফেসবুকে লিখেছিলাম, যেখানে আমাদের দুই পরিবারের সদস্যরাই ছিল। কিন্তু পাবলিক প্রোফাইলে এসব লিখলে কি হয় তা তো এবার দেখলামই! জোর করে একজনকো ভিলেন বানাতে হবেই! নিজেদের ওপর সবাইকে সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অথচ এখান থেকে শিক্ষণীয় হতে পারতো, আমাদের মতো যেন কেউ জীবনের মূল্যবান সময় এভাবে নষ্ট না করে। এবার আশা করি, সবাই সবার সব প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। যেহেতু শুরুটা আমাকে দিয়ে, শেষটাও আমি টানতে চাই। সবার দোয়া চাই। আমাদের প্রতি একটু সহনশীল হোন। আমরা দুইজনই আমাদের জীবনে অনেকখানি এগিয়ে নিয়েছি। দুজনই নতুন করে জীবন শুরু করার মানসিকতার মধ্যে যাচ্ছি! আমার কোনো বিষয়ে দয়া করে ওই ভদ্রলোককে টানবেন না! শুনেছি উনি এখন ভালো আছেন। শান্তিমতো ঘুমাচ্ছেন। ওনাকে শান্তিমতো ঘুমাতে দেন।’