আব্দুল বারী স্বপন, রংপুর:
শিক্ষার্থীরা শিশু বয়স থেকেই দেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, মাতৃভাষা, বঙ্গবন্ধু ও শহিদদের সর্ম্পকে পাঠ্যপুস্তকে জানতে পারে। কিন্তু বাস্তবতায় স্বাধীনতা, বিজয় ও মাতৃভাষা দিবসসহ অন্যান্য দিবসে কিভাবে শহিদদের শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ বা বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে হয় তা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার না থাকায় সেভাবে শিশু শিক্ষার্থীরা বিনম্র শ্রদ্ধার সহিত স্বরণ করতে পারত না। শহিদ মিনার হলে শিক্ষার্থীরা পুস্পমাল্য অর্পনের মাধ্যমে শহিদ স্বরণ ও দিবসগুলো সর্ম্পকে পাঠ্যপুস্তকে অর্জনকৃত জ্ঞান আরো বৃদ্ধি পাবে এবং তা তাদের হৃদয়ে ধারণ হয়ে থাকবে। এ উপলব্ধি গঙ্গাচড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল আলম যোগদানের পর থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্বল্প খরচে শহিদ মিনার নির্মাণ করার উদ্যোগ নেন। তিনি উপজেলা পরিষদে আলোচনা করে রুটিন মেইনটেনেন্স বরাদ্দে ৪০ হাজারের ভ্যাট বাদে ৩৬ হাজার ও স্লিপের বরাদ্দ থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকার মধ্যে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের সহযোগিতায় নকশা নিয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করেন। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ১০৯টি ও ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৫টিতে দৃষ্টি নন্দন শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়। এছাড়া একই মাঠে উচ্চ বিদ্যালয়ের সাথে ৮টি প্রাথমিকে শহিদ মিনার রয়েছে। ১৭৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২২টিতে শহিদ মিনার থাকায় শিশু শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ বিদ্যালয়ে দিবসগুলো শহিদ বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে পারবে। বাকী ৫৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হলে এ উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ শহিদ মিনার নির্মাণ হবে। এদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ হওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, অভিভাবক ও এলাকার মানুষজন খুবই খুশি। তারা এ মহতি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। দঃ কোলকোন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোরসালিনা ও ৪র্থ শ্রেণির নাসরিন জানায়, আমাদের বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার হওয়ায় আমরা খুব খুশি। এখন থেকে দিবসগুলো আমরা বিদ্যালয়ে যেয়ে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারবো। ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সহসভাপতি আনজুমানারা বেগম মিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকার ব্যাক্তিবর্গ বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ও শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে আগ্রহ বাড়বে। সাউদপাড়া সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক আবু সাইয়ুম ও চিলাখাল সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক সাইয়েদুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ হওয়াতে শিক্ষার্থীদের মাঝে মাতৃভাষা মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় শহিদদের আত্মত্যাগের কথা এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বৃদ্ধি পাবে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল আলম বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষার মান উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহন করেছে। সরকার মাতৃভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযোদ্ধের সঠিক ইতিহাস শিক্ষার্থীর জানার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা বাস্তবায়নে আমি উপজেলা পরিষদ মিটিংয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেই। ১৭৯ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২২টিতে নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। বাকী ৫৭টিতে পর্যায়ক্রমে নির্মাণ করা হবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি