জেলা প্রতিনিধি, রংপুর :
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় কত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি সকাল-বিকাল বাড়া কমার মধ্যে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তার পানি বিপদসীমার সামান্য নীচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও উপজেলার চর এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এছাড়া পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলে প্লাবিত এলাকা আরো বৃদ্ধি পায়। তিস্তার এ অব্যাহত পানি বাড়া কমার খেলায় লক্ষীটারী ও কোলকোন্দ দুটি ইউনিয়নের ৬ টি চরের প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ১ সপ্তাহের বেশী সময় ধরে এসব পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। তাদের খাবার সমস্যাসহ নানা দেখা দিয়েছে। অনেকে বাড়ি ছেড়ে গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। আবার কেউ পরিচিত কিংবা আত্বীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে তিস্তার তীব্র স্রোতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। চর এলাকার ছোট বড় ২৫/৩০ টি রাস্তা ভেঙে গেছে। মানুষজন ছোট নৌকা ও কলা গাছের ভেলায় চলাচল করছে। হুমকির মুখে পড়েছে বিদ্যালয়, মসজিদ, আবাদী জমি ও গাছ পালা। অনেকে বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছে। আবার কেউ সরানোর আগেই ভাঙনে পড়েছে বাড়ি। গতকাল রোববার সকালে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও দুপুরের পর কমিয়ে বিপদসীমার সমান অবস্থায় প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এরশাদ উদ্দিন পিএএ নৌকায় ঘুরে লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ, বাগেরহাট চরে ও কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা, মটুকপুর চরে ত্রাণ ও পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট, স্যালাইন দিয়েছেন। ত্রাণের নৌকা দেখে পানিবন্দি মানুষজন কোমড় পানি পাড়ি দিয়ে নৌকার কাছে এসে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুনিমুল হক, উপজেলা প্রকৌশলী মজিদুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী, আব্দুর রউফ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম, আওমীলীগ নেতা আবুল হোসেন ফটিক উপস্থিত ছিলেন। লক্ষ্মীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী জানান, তার ইউনিয়নে ২ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি এবং বাড়ি সরিয়ে নেওয়াসহ ভেঙে যাওয়া প্রায় শতাধিক হবে। কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, তার ইউনিয়নে ১ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি আছে এবং ৫ টি বাড়ি ভেঙে গেছে। অন্যদিকে মর্নেয়ার চরে ভাঙনসহ ২ শতাধিক ও নোহালীর চরে ৩ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদ উদ্দিন পিএএ জানান, পানিবন্দি মানুষের মাঝে ত্রাণ, শুকনো খাবার, খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট বিতরন করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। সহায়তা দিতে কোন সমস্যা হবে না। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, তিস্তা পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন তদারকি করছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি