October 16, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, November 9th, 2021, 4:02 am

গোলাপগঞ্জের রাসেলের ফ্রিল্যান্সার হয়ে উঠার গল্প

জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে চাকুরী ও কর্ম হারিয়েছে অনেকেই। জীবনের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র চাকুরী ও কর্ম হারিয়ে অনেকেই দিকবেদিক কর্মের খুঁজে বেরিয়েছেন, হয়ে গেছেন দিশেহারা। বর্তমানে দেশে করোনার প্রকোপ কমলেও এই করোনায় তৈরি হওয়া বেকারত্বের প্রকোপ এখনো কমেনি। তেমনি এক যুবকের নাম সৈয়দ রাসেল আহমদ।
রাসেল সিলেট নগরির করিম উল্লাহ মার্কেটে মোবাইলের সার্ভিসিংয়ের কাজ করতেন। কিন্তু করোনার কারণে সেই কাজ চলে যায়। হয়ে পড়েন একেবারেই বেকার। কিন্তু তিনি চাকুরী নামক সোনার হরিণের পিছনে না ঘুরে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন ফ্রিল্যান্সিংকে। পাশাপাশি করছেন ইউটিউবিং। দুটো থেকেই দেখতে পাচ্ছেন সফলতার মুখ।
রাসেল আহমদ ইতিমধ্যে রাসেল আহমদের ডিজাইন করা বিলিং পূর্ণাঙ্গ এপস প্লে স্টোরে প্রকাশ পাবে। এই এপস টু পাপুয়া নিউ গিনি দেশে পাবলিশ হবে।
এছাড়াও তিনি আমেরিকার আরেকজন ক্লাইন্টের জন্য ডিজিটাল স্কুল এপস টও ডিজাইন করেছেন। যা প্রায় উবারের মতো। বাচ্চারা স্কুলে গেলে অভিভাবকরা ঘরে বসে দেখতে পারবেন তারা এখন কোথায় আছে, কখন স্কুলে পৌঁছল, কখন বাড়িতে আসলো, এমন কি শিক্ষার্থী কয়দিন স্কুলে গেল, কয়দিন মিস করলো, পরীক্ষায় কি রেজাল্ট আসলো, কি খেলো, এক কথায় ডিজিটাল স্কুল এপস।
সৈয়দ রাসেল আহমদের বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের তুরুক ভাগ গ্রামে। তার পিতার নাম সৈয়দ শফিকুল ইসলাম।
রাসেল আহমদ এসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পরিবারের হাল ধরাতে আর বেশি লেখাপড়া করার সুযোগ হয়নি তার। তিনি দীর্ঘদিন মোবাইল সার্ভিসিং এর কাজ শিখে সিলেটের করিম উল্লাহ মার্কেটে একটি দোকান খুলেন। পরে এই দোকানটি টাকা অভাবে ছেড়ে দেন। এরপর তিনি আরেকটি দোকানে সার্ভিসিংয়ের কাজ শুরু করেন। গত করোনার সময় এই কাজটিও তার বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর তিনি গুগল, ইউটিউবের মাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিও দেখে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ শেখেন। নিজ কর্ম দক্ষতায় কোন প্রাতিষ্ঠানিক কোর্স ছাড়াই তিনি অল্প সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এ পূর্ণাঙ্গ দক্ষতা নিয়ে কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি তিনি একটি ইউটিউব চ্যানেলে বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিও তৈরি করে আপলোড করেন। ইতিমধ্যে এই ইউটিউব চ্যানেল থেকেও তিনি অনেক আয় করছেন।
ফ্রিল্যান্সার সৈয়দ রাসেল আহমদ এ প্রতিবেদককে জানান, অনেকেই টাকার অভাবে ফ্রিল্যান্সিং কাজ শিখতে পারছেন না। তাদের আমি বলবো ভালো কর্মদক্ষতা থাকলে ঘরে বসেই ইউটিউব, গুগলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখা সম্ভব।
তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল আইটি নিয়ে কাজ করার। কারো অধীনস্থ না করে নিজেকে নিজের বস হিসেবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া এটি। আর শান্তিপূর্ণ জীবন চলার জন্যই ফ্রিলান্সিং বেছে নেয়া!
তিনি আরও বলেন, আমরা অনেকেই লেখাপড়া করে চাকুরী না পেয়ে বেকারত্ব জীবনযাপন করছি। চাকরি নামক সোনার হরিণের দিকে না ছুটে মুক্তপেশা ফ্রিলান্সিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে নিজেকে প্রমাণ করার জায়গা এটি। স্বপ্নচারী তরুণদের পদচারণয় মুখরিত এই পেশা। এ সময় বেকার তরুণদের ফ্রিলান্সিংয়ে আহ্বানও জানান তিনি।