মামুন হয়দার, টঙ্গাইল :
গোড়াই-সখীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর হাটবাজার বসায় যানজট ও জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। এতে একদিকে নোংরা হচ্ছে পরিবেশ এবং অপরদিকে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন নজরদারি না থাকায় ওই সড়কে দিয়ে যাতায়াতকারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিভিন্ন হাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সখীপুর উপজেলার উত্তর সীমান্তবর্তী জোড়দিঘী বাজার থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে উঠতে গোড়াই পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার সড়কে কমপক্ষে ১৫টি স্থানে হাট-বাজার বসায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরা। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস ও মালবাহী ট্রাক। চালকেরা সময়মতো গন্তব্যে পৌছতে পারেনা একই সঙ্গে বাড়ছে দুর্ঘটনাও।
কুতুবপুর-গোড়াই আঞ্চলিক সড়কের উপজেলার কুতুবপুর, বড়চওনা, কালিয়া, কচুয়া, বোয়ালী, নলুয়া, দেওদিঘী, মির্জাপুর-সখীপুরের সীমান্তবর্তী তক্তারচালা, বাঁশতৈল, কাইতলা, হাঁটুভাঙ্গা, গোড়াইসহ বিভিন্ন স্থানে সপ্তাহজুড়ে বসে সড়কের ওপর হাট। এ হাট বসায় ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে যানজট লেগে থাকে। বিশেষ করে রবিবার ও বুধবার কুতুবপুর ও শনিবার তক্তারচালা হাট বসে। কুতুবপুর বাজার ঢাকা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় কলার হাট বসে। এ হাট থেকে সপ্তাহে ৫ থেকে ৬’শ ট্রাক কলা ভরে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। শনিবারে তক্তারচালা বাজারে ফার্নিচার ও কাইতলা বাজারে বসে পশুর হাট। এ দুটি হাট জেলার অন্যতম ফার্নিচার ও পশুর হাট। এ দুই হাট থেকে ট্রাকে ট্রাকে ফার্নিচার ও গরু-ছাগল ভরে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। এছাড়াও সড়কের ওপর আম, কাঠাঁল, কলা, ধান, আনারস, বেগুন, মরিচ, হলুদ, করলা, মুলাসহ কাঁচা মালা ও শাকসবজি পসরা সাজিয়ে নিয়মিত চলছে বেচাকেনা। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও রাস্তা পারপারে ভোগান্তিতে পড়েন ।
ভুক্তভোগী হতেয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, হাটের দিন হলেই প্রায় ১ঘন্টা সময় বেশি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হয়। সড়কের উপর বাজার বসায় এ সমস্যা হচ্ছে। সখীপুর-গোড়াই সড়কটি চলাচলের প্রধান সড়ক হওয়ায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তি বাড়ছে। তিনি দ্রুত সড়কের ওপর এসব হাটবাজার বন্ধ করার দাবি জানান।
তক্তারচালা হাটে সবজি বিক্রি করতে আসা মুনছুর আলী, বেল্লাল হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, জায়গা না থাকায় সড়কে বসেই আমাদের বেচাকেনা করতে হয়। রাস্তার উপর বসলেও ইজারাদারদের খাজনা দিতে হয়। তবে রাস্তার উপর না বসে নির্দিষ্ট জায়গায় হাট বসলে ভালো হতো জানান তারা।
তক্তারচালা বাজার বনিক সমিতির সভাপতি ফরহাদ শিকদার বলেন, এক বছরের জন্য ৩৫ লাখ টাকায় হাট ইজারায় এনেছি। জায়গা না থাকায় রাস্তার উপরে হাট বসে। ইজারাদারসহ কয়েকজন লোক থাকে, যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয়।
নলুয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি জহির উদ্দিন মিয়া বলেন, হাটের বিষয়টি ইজারাদাররা দেখেন। তারাই খাজনা তুলে। তবে সড়কের উপর হাট বসায় যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ছে। এ সমস্যা নিরসনে যে কোন ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আলম বলেন, সড়কের উপর হাট বসা, বিষয়টি অবগত আছি। বাজারের ইজারাদার ও বাজার বণিক সমিতির সভাপতিদের ইতোমধ্যে অবগত করেছি। দ্রুত রাস্তার উপর থেকে হাট সরানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি