October 8, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, October 18th, 2021, 7:42 pm

ঘুরে দাঁড়িয়ে ভালেন্সিয়াকে হারাল বার্সেলোনা

অনলাইন ডেস্ক :

প্রায় এক বছর পর শুরুর একাদশে ফিরে আলো ছড়ালেন আনসু ফাতি। নিজে করলেন চমৎকার একটি গোল, আদায় করে নিলেন পেনাল্টি। পিছিয়ে পড়েও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ভালেন্সিয়াকে হারাল বার্সেলোনা। কাম্প নউয়ে রোববার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ৩-১ গোলে জিতেছে রোনাল্ড কুমানের দল। হোসে গায়ার গোলে পিছিয়ে পড়ার পর দলকে সমতায় ফেরান ফাতি। মেমফিস ডিপাই স্বাগতিকদের এগিয়ে নেওয়ার পর বদলি নেমে ব্যবধান বাড়ান ফিলিপে কৌতিনিয়ো। দারুণ জয়ের ম্যাচে বার্সেলোনার জন্য সুখবর হয়ে এলো সের্হিও আগুয়েরোর অভিষেক। চোট কাটিয়ে শেষ দিকে বদলি নামেন এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে দুই ম্যাচ পর কাতালান দলটি জয়ের স্বাদ পেল। আন্তর্জাতিক বিরতির আগে লিগে গত রাউন্ডে আতলেতিকো মাদ্রিদের মাঠে তারা হেরেছিল ২-০ গোলে। তার আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে হেরেছিল বেনফিকার মাঠে। মাঠে ও মাঠের বাইরে সাম্প্রতিক সময়টা ভালো কাটছে না বার্সেলোনার। চাপ পড়ছে কোচ কুমানের ওপর। লিওনেল মেসিসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন খেলোয়াড়ের চলে যাওয়া এবং চোটের আঘাতে মৌসুমের শুরু থেকে খর্বশক্তির দল নিয়ে মাঠে নামতে হচ্ছে তাদের। ম্যাচের ফলেও পড়ছিল এর প্রভাব। আন্তর্জাতিক বিরতির আগে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবশেষ ছয় ম্যাচের মাত্র একটিতে জেতে তারা, চারটিতে মেলেনি জালের দেখা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ পর্বে প্রথম দুই ম্যাচে বায়ার্ন মিউনিখ ও বেনফিকার বিপক্ষে বার্সেলোনা হেরেছিল ৩-০ গোলে, এর কোনোটিতে একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি তারা। আর লিগে আতলেতিকোর গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাকের পরীক্ষা নিতে পারে কেবল দুইবার। তবে ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে বার্সেলোনার পারফরম্যান্স হলো উজ্জ্বল। ৬১ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য তারা শট নেয় ১২টি, যার পাঁচটি লক্ষ্যে। সফরকারীদের ৯ শটের তিনটি লক্ষ্যে ছিল। পাল্টা আক্রমণে দ্বিতীয় মিনিটেই ভালো একটি সুযোগ তৈরি করে বার্সেলোনা। মাঝমাঠের কাছাকাছি থেকে গাভির বাড়ানো বলে ফাতির শট এক ডিফেন্ডারের পা ছুঁয়ে পাশের জালে লাগে। পঞ্চম মিনিটে স্বাগতিক দর্শকদের স্তব্ধ করে দিয়ে এগিয়ে যায় ভালেন্সিয়া। কর্নার ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেনি বার্সেলোনা। ডি-বক্সের বাইরে থেকে বুলেট গতির শটে ঠিকানা খুঁজে নেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার গায়া। মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে হাত ছোঁয়ালেও ঠেকাতে পারেননি। সমতায় ফিরতে অবশ্য বেশি সময় লাগেনি বার্সেলোনার। ত্রয়োদশ মিনিটে অসাধারণ গোলটি করেন ফাতি। মেমফিসের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে ডি-বক্সের বাইরে থেকে তরুণ ফরোয়ার্ডের শট দূরের পোস্ট দিয়ে জালে আশ্রয় নেয়। ২৫তম মিনিটে ভালো একটি সুযোগ পেয়ে বাইরে মারেন ভালেন্সিয়ার গনসালো গেদেস। পাঁচ মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে উড়িয়ে মারেন মেমফিস। বিরতির আগে এই ডাচ ফরোয়ার্ডের সফল স্পট-কিকে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ডি-বক্সে ফাতিকে গায়া ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে বাড়তে পারত ব্যবধান। ডি-বক্সে সের্জিনো দেস্তের পাসে দুরূহ কোণ থেকে ফাতির শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন গোলরক্ষক ইয়াসপের সিলেসেন। দুই মিনিট পর বেঁচে যায় বার্সেলোনা। মাক্সি গোমেসের শট লাগে পোস্টে। একটু পর গেদেসের জোরালো শট এক হাতে ঠেকান টের স্টেগেন। পরক্ষণেই ফাতিকে তুলে নিয়ে কৌতিনিয়োকে মাঠে নামান কুমান। নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে এই ব্রাজিলিয়ান তারকার গোলের আগ পর্যন্ত খেলার গতি ছিল ধীর। দেস্তের পাস থেকে গোলটি করেন তিনি। তিন মিনিট বাকি থাকতে কাক্সিক্ষত অভিষেক হয় আগুয়েরোর। ম্যানচেস্টার সিটিতে চুক্তির মেয়াদ শেষ করে গত জুলাইয়ে ফ্রি ট্রান্সফারে বার্সেলোনায় যোগ দেন তিনি। কিন্তু অগাস্টে প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতিতে ডান পায়ের পেশিতে চোট পেয়ে ছিটকে যান সিটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা। হাঁটুর চোট কাটিয়ে প্রায় ১০ মাস পর গত মাসে মাঠে ফেরেন ফাতি। লা লিগায় লেভান্তের বিপক্ষে ফেরার ম্যাচে শেষ ১০ মিনিটে বদলি হিসেবে খেলে দারুণ একটি গোলও করেন তিনি। এবার শুরুর একাদশে নেমে দলের জয়ে রাখলেন বড় অবদান। সঙ্গে আগুয়েরো ফেরায় এবার হয়তো আক্রমণে ধার বাড়বে বার্সেলোনার। চোট কাটিয়ে এই ম্যাচে ফেরেন জর্দি আলবাও। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বুধবার দিনামো কিয়েভের মুখোমুখি হবে গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায় থাকা বার্সেলোনা। এর আগে ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে এই জয় নিশ্চিতভাবে দলটির আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। ৮ ম্যাচে চার জয় ও তিন ড্রয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে সপ্তম স্থানে উঠেছে বার্সেলোনা। এক ম্যাচ বেশি খেলা ভালেন্সিয়া ১২ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে আছে। তাদের সমান ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল সোসিয়েদাদ। আট ম্যাচে সমান ১৭ পয়েন্ট করে নিয়ে পরের তিনটি স্থানে যথাক্রমে রিয়াল মাদ্রিদ, সেভিয়া ও আতলেতিকো মাদ্রিদ। এক ম্যাচ বেশি খেলা ওসাসুনারও ১৭ পয়েন্ট।