October 11, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, March 24th, 2023, 9:29 pm

চট্টগ্রাম বন্দরে কমে গেছে জাহাজ ও কার্গো হ্যান্ডলিং

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চট্টগ্রাম বন্দরে কমে গেছে জাহাজ ও কার্গো হ্যান্ডলিং। গত বছরের তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ২৬ শতাংশের বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং কমেছে। বন্দরের বর্তমান অবকাঠামোয় বছরে প্রায় ৪০ লাখ টিইইউ (টোয়েন্টি ফুট ইকুইভ্যালেন্ট ইউনিট) কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা রয়েছে। প্রতি মাসে প্রায় ৩ লাখ ৩৩ হাজার টিইইউ সক্ষমতা থাকলেও ফেব্রুয়ারিতে বন্দর দিয়ে হ্যান্ডলিং হয়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৪০ টিইইউ। ওই হিসাবে ১ লাখ ৪৩ হাজার টিইইউ কোনো কাজে লাগেনি। আর কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে অলস বসে থাকে সক্ষমতার প্রায় ৪৩ শতাংশ। পাশাপাশি বন্দরে জাহাজ হ্যান্ডলিং কমেছে ১৫ শতাংশ এবং একই পরিমাণে কমেছে কার্গো হ্যান্ডলিংও। চট্টগ্রাম বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বৈদেশিক বাণিজ্যের গতি মন্থরতায় পণ্যবাহী জাহাজ আসার সংখ্যাও কমে গেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বন্দরটিতে ৩১২টি জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে। বœ ২০২২ সালের একই সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে বন্দরে আসা-যাওয়া করা জাহাজের সংখ্যা ছিল ৩৭০টি। ওই হিসাবে জাহাজ হ্যান্ডলিং কমেছে ১৫ শতাংশ। জানুয়ারিতে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ হ্যান্ডলিং হয় ৩৪২টি জাহাজ, যেখানে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ৩৫৮টি জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছিল। মূলত খোলা পণ্যবাহী বাল্ক কার্গো ও কনটেইনারবাহী জাহাজে আসা পণ্য ওঠা-নামার ভিত্তিতে বন্দরের প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করা হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের ক্ষেত্রে পণ্য হ্যান্ডলিং গড়ে ১৫ শতাংশ বা এর কাছাকাছি হলে সেটিকে আদর্শ হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে কার্গো হ্যান্ডলিং (খোলা পণ্য) পরিবহন এতোদিন স্বাভাবিক থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে পার্থক্যটা বেশ বড় হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে বন্দর দিয়ে কার্গো হ্যান্ডলিং (ওঠা-নামা) হয়েছে ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৭৭৯ টন। আর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এর পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৫ লাখ টন। ওই হিসাবে তা ১৫ শতাংশ কমেছে। সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনারের ৯৮ শতাংশই আনা-নেয়া হয়। কনটেইনারে থাকা সিংহভাগই শিল্পের কাঁচামাল ও প্রস্তুত শিল্পপণ্য। গত ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রাম বন্দরে মোট হ্যান্ডলিং হয়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৪০ টিইইউ কনটেইনার, যা ২০২২ সালের একই সময়ে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৩১ টিইইউ ছিল। অর্থাৎ হ্যান্ডলিং কমেছে ২৬ শতাংশের বেশি। আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে বন্দর দিয়ে কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয় ২ লাখ ২১ হাজার ৮৫৬ টিইইউ। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৯১ হাজার ৮৯৩ টিইইউ। বন্দরের বেশির ভাগ কনটেইনার নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ও চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনালে (সিসিটি) হ্যান্ডলিং হয়। বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে সেখানে নতুন নতুন ইকুইপমেন্ট যুক্ত করায় অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক দ্রুত কনটেইনার লোড-আনলোড করা সম্ভব হচ্ছে। এদিকে ব্যবসায়ীদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ছোট ও মাঝারি কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম হোঁচট খেলেও এখন রপ্তানিতে সম্পৃক্ত অনেক বড় কারখানাও বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ থমকে আছে। করোনা ভাইরাসের লকডাউন উঠে যাওয়ার পর দেশে আমদানিতে গতি ফিরতে শুরু করেছিল। পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তাকে বড় ধাক্কা দিয়েছে। বৈদেশিক বাণিজ্যের গতি কমে যাওয়ায় এখন চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালন কার্যক্রমের মাধ্যমে তার প্রভাব টের পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান জানান, দেশের অর্থনৈতিক গতি লক্ষ্য রেখে বন্দর সম্প্রসারণ ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন কাজ করা হয়েছে। তবে বন্দরের হ্যান্ডলিং কার্যক্রম আমদানি-রপ্তানি বাড়া ও কমার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণেই বাণিজ্যের গতি কমে আসার ছাপ বন্দরের পরিচালন কার্যক্রমেও দৃশ্যমান হয়েছে। সম্প্রতি জাহাজ হ্যান্ডলিং বেশ কমে এসেছে। এখন ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জাহাজ বিদায় করা সম্ভব হচ্ছে। যেটা একটা সময়ে ভাবাও যেতো না। বন্দরে কার্গো ও কনটেইনার দুই খাতেই হ্যান্ডলিং সম্প্রতি বেশ কমেছে। তবে আশা করা যায় চার মাসের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি পরিস্থিতি ভালো হয়ে তিন খাতেই হ্যান্ডলিং কার্যক্রম আবারো গতিশীল হবে।