July 27, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, June 10th, 2024, 8:16 pm

চাঁদপুরের পশুর হাট: আলোচনায় ১৫ লাখ টাকার ‘জায়েদ খান’

গত কয়েক বছর ধরেই কোরবানির গরুর নামকরণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যমেও শোরগোল শুরু হয়েছে। এবারও তার ব্যতীক্রম নয়।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে এবার চাঁদপুরের পশুর হাটে আলোচনায় এসেছে সুলতান, রাজা, জায়েদ খান ও লাইভওয়েট নামে চার গরু।

হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কূল ইউনিয়নের নাটেহারা গ্রামের স্কুল শিক্ষক আলী আহাম্মদের গরু ‘সুলতান’। কালো রঙের এ গরুর ওজন ৮০০ কেজি। গরুর মালিক সুলতানের দাম হেঁকেছেন ৮ লাখ টাকা।

শুধু কেনার জন্যই নয়, ৮ লাখ টাকার সুলতানকে এক নজর দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছে কৌতূহলী লোকজন।

এদিকে মতলব উত্তরের ফতেহপুর পশ্চিম ইউনিয়নের রাঢ়ী কান্দীতে সাড়া জাগিয়েছে ‘রাজা’ নামে আরেকটি গরু।

রাজার মিলিক ইলিয়াস দেওয়ান বলেন, হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টি দেশীয় পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে নিজের বাড়িতেই লালনপালন করেছেন।

তিনি জানান, সাদা-কালো রঙের ষাঁড়টির শরীরের দৈর্ঘ্য ৬৭ ইঞ্চি, উচ্চতা ৫৫-৬০ ইঞ্চি ফুট। ওজন ২৫ মণ অর্থাৎ ১ হাজার কেজি।

রাজার দামও ৮ লাখ টাকা হেঁকেছেন ইলিয়াস দেওয়ান।

ইলিয়াস বলেন, ৮ লাখ দামে তিনি রাজাকে বিক্রি করবেন। একে বাড়িতেই বিক্রি করতে হবে। বাজারে নিলে রাজাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। সারাদিন রাত পাহারা দিচ্ছেন।

তিনি বললেন, খামারে প্রায় আড়াই বছর আগে ফ্রিজিয়ান জাতের গাভি থেকে জন্ম নেয় রাজা। ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টিকে রাজার মতোই লালনপালন করেছেন বলে নাম রেখেছেন ‘রাজা’।

ইলিয়াস বলেন, জন্মের পর রাজাকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার- খড়, ঘাস, ছোলা, মসুরের ডাল ও ভুষি, ভুট্টার আটা, চোপড়, খুদের ভাত, খৈল, ধানের গুঁড়া ও চিটা গুড় খাইয়ে লালন-পালন করছেন। মাঝেমধ্যে কাঁচাকলা, গাজর, আপেলসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলও খাওয়ানো হয়। এতে প্রতিদিন খরচ হয় ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা। থাকার জায়গায় ২৪ ঘণ্টা ২টি ফ্যান দেওয়া রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকলে হাতপাখা দিয়ে রাজাকে বাতাস করতে হয়। প্রতিদিন ২/৩ বার গোসল করাতে হয়।

মতলব উত্তর উপজেলার উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পলাশ কুমার দাস বলেন, তিনি রাজার চিকিৎসাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেন। এটি পশুসম্পদ অধিদপ্তরের ১৬৮ নম্বর প্রুভেন ব্লুর সিমেনের হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়।

চাঁদপুরে ফরিদগঞ্জে মূলপাড়া গ্রামের শাহিওয়াল জাতের গরু ‘জায়েদ খান’।

এ গরুর মালিক আমির হোসেন বলেন, তিনি গত ৪ বছর ধরে লালন পালন করেছেন জায়েদ খানকে। গরুটির ওজন হবে ২৫-৩০ মণ। দাম চাইছেন১৫ লাখ টাকা। তবে আলোচনা সাপেক্ষে দাম নির্ধারণ করা যাবে। তিনি এটাকে হাটে উঠাবেন না। কারণ এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।

এ ছাড়া শাহরাস্তির ২৫ মণ ওজনের ‘লাইভওয়েট্’র দামও সাড়ে ৮ লাখ হেঁকেছেন মালিক সাখাওয়াত হোসেন।

তিনি জানান, লাইভওয়েট ছাড়াও আসন্ন ঈদে বিক্রির জন্য ১৬টি ষাঁড় রয়েছে তাদের। নিজস্ব খরচে যেকোনো জায়গায় গরু পৌঁছে দেবেন তারা।

এ ছাড়া জেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট সদরের সফরমালি ও হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা বাজার ঘুরে দেখা গেল বিপুল সংখ্যক কোরবানির পশু উঠেছে। এই সপ্তাহের শেষ দিকের হাটগুলোতে বেচা-বিক্রি বাড়বে বলে আশা বিক্রেতাদের।

শহরের স্বর্ণখোলা পশুরহাট ও শহরতলীর বাগাদী চৌরাস্তায় পশুর হাট এখনো জমেনি। এই বাজারের ইজারাদার জাকির হোসেন খান ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন গাজী ইউএনবিকে বলেন, সোমবার (১০ জুন) থেকে এই বাগাদীহাটে কোরবানির পশু বেচা-বিক্রি শুরু।

ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত এই পশুর হাট চলবে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত গাজী।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জ্যোতির্ময় ভৌমিক ইউএনবিকে বলেন, জেলায় খামারি আছে ৩ হাজার ২৬৯ জন। এসব খামারি

এ বছর কোরবানিতে বিক্রির জন্য ৬১ হাজার ৪৮৯টি পশু প্রস্তুত করেছেন।

তিনি বলেন, জরিপ করে দেখা গেছে, জেলার চাহিদা অনুযায়ী আরও ২০ হাজার পশুর ঘাটতি রয়েছে। উত্তরবঙ্গ ও আশপাশের জেলা থেকে আসা পশু ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে চাহিদা পুরণ হবে।

—–ইউএনবি