জেলা প্রতিনিধি:
এক সপ্তাহের ব্যবধানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা নদীতে আবারও পানি বেড়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে ভাঙন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ দিনে পদ্মার পাড় থেকে সরে গিয়ে নিরাপদ দূরত্বে আশ্রয় নিয়েছে অন্তত ১৫টি পারিবার। ১৫ দিনে প্রায় এক বিঘা আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, বর্তমানে সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা এলাকার গোয়ালডুবিতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে আছে বাখের আলী, ফাটা পাড়া, মোড়ল পাড়া, চাকপাড়াসহ আরও কয়েকটি গ্রাম। এসব এলাকাতে অন্তত ১০ হাজার মানুষ বসবাস করছে। চরবাগডাঙ্গার গোয়ালডুবি এলকার আবদুস সালাম বলেন, গত ৪ দিন আগেই আমি বাপ-দাদার ভিটা মটিতেই ছিলাম। কখনও ভাবিনি নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বাবার সম্পত্তি ছেড়ে আসব। তবুও আসতে হয়েছে। আমার স্ত্রী ৪ বছর আগে মারা গেছে। পারিবারিক জমিতেই দাফন করা হয়েছে। যেভাবে নদী ভাঙছে, দু-তিন দিনের মধ্যে কবরটিও হয়তো বিলীন হয়ে যাবে। করোনাকালে বাইরে কাজ করতে যেতে পারিনি। তাই এখন টাকার সংকটে আছি। ঠিক মতো খেতেও পাই না। একই এলাকার সাবিরুল ইসলাম বলেন, গত তিন দিন থেকে ফের নদীতে ভাঙন ধরেছে। এলাকার লোকজন খুব আতঙ্কে আছে। অনেকের ভিটামাটি, আবাদি জামি, নিজ হাতে যত্ম করে লাগানো শখের আমের বাগান সব নদীতে চলে গেছে। তিনি আরও বলেন, যে ভিটাতে আমি জন্মের পর বেড়ে উঠেছি। সে ভিটা ছেড়ে আসতে মন না চাইলেও চলে আসতে হয়েছে। কদিন আগেই বাড়ির মালমালগুলো এক আত্মীয়র বাড়িতে রেখে এসেছি। এখন নিজের পরিবারকে নিয়ে যেতে হচ্ছে। চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ইব্রাহিম আলী জানান, নদী ভাঙন এলাকার লোকজন মানবেতর জীবন-যাপন করছে। একদিকে ভাঙন আতঙ্ক, আরেক দিকে খাদ্য সংকট। জিও ব্যাগ ফেলেও ভাঙন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল শরীফ জানান, ধারণা করা হচ্ছে, দুপুরের পর থেকে পানি কমতে থাকবে। তিনি আরও জানান, গোয়ালডুবি এলাকাতে নদী ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। নদীতে এখন পানি আছে। ভাঙনের আকারও তীব্র হচ্ছে। এ সময় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব না। শুষ্ক মৌসুমে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি