July 27, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, January 2nd, 2022, 9:29 pm

চিলাহাটির অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে এক বছরে ঝরেছে ৫০ প্রাণ

ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :

অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের কারণে নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে সৈয়দপুরের শেষ সীমান্ত পর্যন্ত রেলপথে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এতে অনেকেই অকালে হারাচ্ছেন প্রাণ আর কেউ বরণ করছেন পঙ্গুত্ব। দীর্ঘদিন রেলক্রসিং অরক্ষিত থাকলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এ রেলপথে ৩৩টি ক্রসিংয়ের মধ্যে ১২টি অরক্ষিত ও তিনটি অবৈধ রেলক্রসিং রয়েছে। ২১টিতে রয়েছে গেটম্যান। এসব রেলক্রসিং পারারাপারে ২০২১ সালে অকালে প্রাণ হারিয়েছে ৫০ জন। তারপরও বোধোদয় হয়নি রেল কর্তৃপক্ষের। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এ রেলপথের এসব ক্রসিং দিয়ে অবাধে পারপার করছে হাজারো পথচারী ও বিভিন্ন পরিবহন। রেল কর্তৃপক্ষ ক্রসিংয়ের দুই পাশে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে লিখে দিয়েছে ‘এই গেটে কোনো গেটম্যান নেই। পথচারী ও সকল প্রকার যানবাহন চালক নিজ দায়িত্বে পারাপার হবেন। যেকোনো দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবেন।’ আবার অন্য সতর্কবার্তায় লেখা হয়েছে, ‘এই স্থানে রেললাইনের ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ।’ এরকম সাইনবোড টাঙিয়েই দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়রা জানান, এ রেলপথে ১২টি অরক্ষিত ও তিনটি অবৈধ ক্রসিং অতিক্রম করার সময় ট্রেনের গতি কমানো হয় না। এমনকি ট্রেনের হুইসেল পর্যন্ত বাজানো হয় না। ক্রসিংগুলো অতিক্রম করার সময় মানুষ বা যানবাহন পারাপারের বিষয়টি ট্রেনের চালকের দৃষ্টিতে এলেও ব্রেক পর্যন্ত ধরা হয় না। এতে অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। অকালে প্রাণ হারানোর পাশাপাশি পঙ্গুত্ব বরণ করলেও গেটম্যান দেওয়ার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ। গত ৮ ডিসেম্বর ট্রেনের ধাক্কায় নীলফামারী সদর উপজেলার কুন্দুপুকুর ইউনিয়নের মনসাপাড়া এলকায় একই পরিবারের তিন শিশুসহ চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে একই স্থানে আরো কয়েক বার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেকে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সৈয়দপুর রেলওয়ে পুলিশ সুপার সিদ্দিকী তানজিলুর রহমান বলেন, স্থানীয় সরকার এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় দায়িত্ব নিলে রেলপথের নিরাপত্তা অনেকটাই নিশ্চিত করা সম্ভব। এসব ক্রসিংয়ে নেই নিরাপত্তা কর্মী ও সংকেত বাতি। অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে কোনো কোনো সময় ট্রেন হুইসেল না দিয়েই চলে যায়। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায় ওই এলাকায়। এতে সুনাম নষ্ট হচ্ছে রেল বিভাগের। তিনি বলেন, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত রেলক্রসিং পার হতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে ৫০ জন। দুর্ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন তারা সবাই পথচারী ও শিশু। এরপরেও ওই সব স্থানে দেওয়া হয়নি সুরক্ষিত গেট ও গেটম্যান। রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, রেলগেটের পাশে সতর্কবার্তা ও সাবধানতার বাণী দেওয়া হয়েছে। পথচারীরা এটি দেখে চলাচল করবেন। এ ছাড়াও রেললাইনের দুই পাশে বসবাসকারীদের নানা ধরনের পরামর্শ দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে মানুষের প্রাণহানি নিয়ে রেলের দায়বদ্ধতা নেই। কারণ যানবাহন চলাচলে রেললাইন যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য যানবাহন ও মানুষ পারাপারের জন্য রেল কর্তৃপক্ষ একটি সতর্কবাণী সংবলিত সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে। অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের বেশিরভাগ সড়ক বিভাগ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের অধীনে। কিন্তু রেলক্রসিংয়ের নিরাপত্তা রক্ষায় তাদের উদ্যোগ নেই।