অনলাইন ডেস্ক :
চীনে এখন সর্দি-জ্বর ও শ্বাসকষ্ট প্রবলভাবে ছড়াচ্ছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সতর্কতা জারি করা হলো ভারতের ছয়টি রাজ্যে। রাজস্থান, কর্ণাটক, উত্তরাখ-, তামিলনাড়ু, গুজরাট ও হরিয়ানা রাজ্য সরকার সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। কর্ণাটক সরকার জানিয়েছে, মানুষ যেন এই জ¦র ও শ্বাসকষ্টের বিষয়ে অবহিত থাকেন। এর জন্য কী করতে হবে এবং কী করা উচিত নয় তা জানেন এবং মেনে চলেন।
তিনি আরও বলেন; হাঁচি বা কাশির সময় মুখ ডেকে রাখতে হবে, বারবার হাত ধুতে হবে বা স্যানিটাইজ করতে হবে, জনবহুল জায়গায় গেলে মাস্ক পরতে হবে, মুখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। রাজস্থান সরকারের জারি করা সতর্কতায় বলা হয়েছে, এখনও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে হাসপাতালগুলিকে এখন থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে মেডিসিন ও শিশু বিভাগ। উত্তরাখন্ড সরকার বিশেষ করে চামোলি, উত্তরকাশী ও পিথোরাগড় জেলাকে সতর্ক করে দিয়েছে কারণ এই তিন জেলাই চীন সীমান্তের কাছে অবস্থিত।
হরিয়ানা সরকার নির্দেশ দিয়েছে, কোথাও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ বাড়ার খবর পেলেই সঙ্গে সঙ্গে যেন তা সরকারের নজরে আনা হয়। তামিলনাড়ু সরকারও সব হাসপাতালকে সতর্ক থাকতে বলেছে। একই নির্দেশ দিয়েছে গুজরাটও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে সব রাজ্যকে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, এই সময় সবাইকেই বাড়তি নজরদারি রাখতে হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পার্থপ্রতীম বোসও সম্প্রতি ডিডাব্লিউকে জানিয়েছিলেন, ‘এই সময় খুব সাবধানে থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
ফ্লু ও নিউমোনিয়ার ইনজেকশন নেয়া উচিত। দিল্লির মানুষ এমনিতেই দূষণের কারণে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। আবহাওয়ার কারণেও এই সময় সর্দি-জ্বর-শ্বাসকষ্ট বেশি হয়। তাই স্বাস্থ্যবিধি মানা খুবই জরুরি।’ চীনে বাচ্চারা বেশি করে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বেজিং-সহ উত্তর চীনে এর প্রাদুর্ভাব বেশি। কর্তৃপক্ষ বাচ্চাদের অন্য কোনো অসুখের বাড়াবাড়ি না হলে তাদের হাসপাতালে না নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ব চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন গত ১৩ নভেম্বর সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ‘বাচ্চারা বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট জনিত অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে।’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিপুল সংখ্যক এই মানুষের সর্দি-জ¦র-শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হওয়ার পেছনে কারণ জানতে চাইলে চীনা কর্তৃপক্ষ জানায়, ঠান্ডা পড়ছে এবং কোভিডের বিধিনিষেধ পুরোপুরি তুলে নেয়ার কারণেই এটা হচ্ছে।
এ ছাড়া চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি জানায়, নতুন কোনো ভাইরাসের জন্য এটা হচ্ছে না। বরং ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, রাইনোভাইরাস, আরএসভি, অ্যাডিনোভাইরাসেই মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। সেক্ষেত্রে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মানুষকে মাস্ক ব্যবহার করতে বলেছেন এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জনবহুল জায়গার উপর নজর রাখতে বলেছেন। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, তাদের হাতে এই মুহূর্তে যথেষ্ট তথ্য নেই। তাই এই রোগও মহামারির আকার নেবে কি না, তা তারা বলতে পারছেন না।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু