October 14, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, March 23rd, 2023, 8:24 pm

চীনের বিষয়ে ইইউ দেশগুলো বিভক্ত

অনলাইন ডেস্ক :

লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যান্ডসবার্গিস ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘শি চিন পিং যদি একজন ঘোষিত যুদ্ধাপরাধীর সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়ান, তাহলে আমাদেরও চীনকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।’ গত সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী ঘোষণা করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। তারপর মস্কো সফরে গিয়ে পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন শি। লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করছেন, চীনের সঙ্গে দ্রুত সম্পর্কচ্ছেদ করতে হবে। যত তাড়াতাড়ি এটা করা যায় ততই ভালো। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সব সদস্য দেশ এ রকম চরম পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইইউর এক কর্মকর্তা বলেছেন, গত কয়েক বছরে শি ও পুতিন অন্তত ৪০ বার বৈঠক করেছেন। ফলে এখন শি রাশিয়া গিয়ে পুতিনের পাশে থাকার বার্তা দেবেন সেটাই স্বাভাবিক। ইইউর দেশগুলোর সাধারণ মনোভাব হলো, চীন এখন রাশিয়ার দুর্বলতার সুযোগ নিতে চাইছে। চীনসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশ এখনো রাশিয়ার কাজকে আগ্রাসন বলেনি। জাতিসংঘে চীন রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাবে ভোট দেয়নি। তারা রাশিয়ার প্রচারমূলক কথার পুনরাবৃত্তি করেছে। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চীনের সম্পর্কে কোনো সীমারেখা থাকবে না। এমনিতেই ইইউর সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আগের তুলনায় খারাপ। রাশিয়ার কারণে তা আরো খারাপ হয়েছে।
রাশিয়াকে চীনের সমর্থন : বেশ কয়েকটি ইইউ দেশ মনে করছে, চীন এবার রাশিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে পারে। তবে ন্যাটোর মহাসচিব স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, চীন যে রাশিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে চায়, এমন কোনো প্রমাণ তার কাছে নেই।চীন বিশেষজ্ঞ স্টেক বলেছেন, ‘চীন এখন রাশিয়ার সঙ্গে আর্থিক কার্যকলাপ পুরোপুরি বজায় রেখেছে। রাশিয়া যে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে, তাতেও সমর্থন দিয়েছে চীন। তারা রাশিয়াকে যে টায়ার, ট্রাক, পোশাক ও অন্য জিনিস দিচ্ছে, তা রাশিয়ার সেনাবাহিনী ব্যবহার করতে পারে, কিন্তু এখনো তারা কোনো অস্ত্র রাশিয়াকে দেয়নি।’ স্টেক আরো বলেছেন, ‘তাইওয়ান নিয়ে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। উইঘুর নিয়ে ইইউর সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। ফলে চীনও চাপে আছে। ইইউ চীনের ওপর কিছু বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে। তবে ইইউ আরো ব্যবস্থা নিলে তাদের অর্থনীতিতে চাপ পড়বে।’ এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ডাকে ইইউ এখনো সাড়া দেয়নি। প্রেসিডেন্ট বাইডেন চাইছেন, চীনকে কোণঠাসা করতে ইইউ এবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মেলাক। কিন্তু ইইউ তা থেকে বিরত থেকেছে। ইইউর দেশগুলোর মধ্যে চীনের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য করে জার্মানি। তারা ও ইইউর অন্য বেশ কয়েকটি দেশ চীনের লাভজনক বাজার থেকে চলে আসতে রাজি নয়। তবে দুই পক্ষের মধ্যে সন্দেহ আছে, চীন ও ইইউ একে অন্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। ইইউ-চীন কম্প্রিহেনসিভ ইনভেস্টমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টও ঠা-া ঘরে চলে গেছে।
স্টেক বলেছেন, ‘চীন এখন চাইছে, তারা ইইউর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। ইইউও একইভাবে নিষেধাজ্ঞা তুলবে। তারপর চুক্তিতে সই হবে।’ ইইউ সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, ইইউ দেশগুলো চীন নিয়ে বিভক্ত। কিছু দেশ চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে চায়, আবার কিছু দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে। সূত্র : ডয়চে ভেলে