October 4, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, September 11th, 2023, 3:32 pm

জকিগন্জের ভাই ভাই মাল্টা বাগান স্বপ্ন দেখাচ্ছে তরুণদের

জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :

সিলেটের জকিগন্জ উপজেলার প্রথম মাল্টা বাগান এখানকার উদ্যোক্তাদের সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। মাল্টা চাষে সফলতার মুখ দেখছেন হাজী আছাব আলী ও তার পরিবার। জকিগন্জের হালঘাট গ্রামে ২০১৬ সালে প্রথম বারের মতো মাল্টা চাষ শুরু করেন আছাব আলী । মাল্টা চাষ করে সফলতা পাওয়ায় এখন প্রতি বছর করেন মাল্টা চাষ।এ বছর ১৯২ শতক জমিতেই মাল্টা চাষ করেছেন। আছাব আলী তার বাগানের নাম দিয়েছেন ভাই ভাই মাল্টা বাগান। ইতিমধ্যে এ বাগানের মাল্টার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের এলাকায়ও। অনেক চাষীই নিজেদের জমিতে মাল্টা চাষের মাধ্যমে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, আছাব আলীর তিন ছেলে মাল্টা বাগানে কাজের লোকদের সাথে নিয়ে মাল্টা গাছের পরিচর্যা করছেন। বর্তমানে তার পুরো বাগান মাল্টায় ভরে গেছে। চলিত সপ্তাহ থেকে বিক্রি ও শুরু করেছেন। বারি মাল্টা – ১ চাষ করে এখন বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছেন আছাব আলী। এ বাগান পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন আছাব আলীর তিন ছেলে কাওছার আহমদ, আলী হোসেন ও ইসমাইল হোসেন।
হালঘাটের এ বাগান আজ এলাকার শত শত বেকার যুবককে নতুন করে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে। তাদের এ বাগান দেখে জকিগন্জে আজ অনেকেই মাল্টা চাষে এগিয়ে এসেছেন।

স্থানীয়রা জানান, ভাই ভাই মাল্টা বাগানের মাল্টার স্বাদ অন্যরকম। প্রাপ্ত বয়স্ক একটি গাছে বছরে ৪০ কেজির বেশি মাল্টা ধরে। এই মাল্টা বিক্রি করতে কোথাও যেতে হয় না। বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে বাগান থেকে কিনে নিয়ে যান। প্রতিমণ মাল্টা বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৬শ টাকায়। গাছে গাছে স্বাদের মাল্টা দেখে এলাকার অনেক চাষী মাল্টা উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

আছাব আলীর ছেলে, ভাই ভাই মাল্টা বাগানের পরিচালক কাওছার আহমদ জানান, যে কোনো ফসলের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি লাভজনক মাল্টা চাষ। এক বিঘা জমির বাগান থেকে বছরে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি সম্ভব। খরচের তুলনায় বেশি লাভ হওয়ায় আগামী বছর আরো কয়েক বিঘা জমিতে তিনি ফলন বাড়াবেন। ভালো ভাবে মাল্টা চাষ ও এর সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জকিগন্জ উপজেলা কৃষি অফিস সব সময় সহযোগিতা করেছে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে চারা ও বীজ প্রদান করা হয়েছে বলে কাওছার আহমদ জানান।

জকিগন্জের সাংবাদিক আহমেদুল হক চৌধুরী বেলাল বলেন,জকিগঞ্জ উপজেলার বাবুর বাজার হালঘাট এরিয়ার বিশাল উর্বর জমি নিয়ে জকিগঞ্জে প্রথম মাল্টা চাষ শুরু করেন আছাব আলী’। তার তত্বাবধানে এবং কাওছার আহমদ,আলী হোসেন ও ঈসমাইল হোসেনের পরিচালনায় বাগানটি বানিঞ্জিক ভাবে সফলতার মুখ দেখতে শুরু করেছে। প্রতিদিন বিকালে এই বাগান পর্যটন এলাকায় রুপ নেয়। শতশত নারী পুরুষ এ বাগানটিতে দূরদূরান্ত থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে দেখতে আসেন।

এমনকি অনেক উর্ধতন কর্মকর্তাও এবাগানে এসে বাগান ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং আছাব আলীর আপ্যায়নে মুগ্ধ হন। এ বাগান জকিগঞ্জের মুখ উজ্জল করেছে। এ বাগানের মাল্টা সাধারণত খুবই সুস্বাদু ও মিস্টি।
তিনি বলেন, কৃষিকাজেও যে সফল হওয়া যায় আছাব আলীর পরিবার তার উজ্জ্বল প্রমাণ। ভাই ভাই মাল্টা বাগান দেখে অনেক বেকার যুবক ও কৃষক মাল্টা চাষে মনোযোগী হয়েছেন।

জকিগন্জ উপজেলা কৃষি অফিসার শেখ মোঃ ফরিদ আলাপকালে জানান,মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা মাল্টা
চাষিদের সহযোগিতায় তৎপর রয়েছেন।জকিগন্জের মাটি মাল্টা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষিরা নতুন নুতন মাল্টা বাগান তৈরি করছেন। তারা মাল্টা থেকে ভালো লাভ পাচ্ছেন। বিশেষ করে ভাই ভাই মাল্টা বাগানের অনুকরণে আজ গোটা জকিগন্জ উপজেলার ২৫ টির মতো মাল্টা বাগান ইতিমধ্যে গড়ে উঠেছে।