October 13, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, September 21st, 2022, 1:16 pm

জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও হত্যা: ৪ জঙ্গির ফাঁসি বহাল

ফাইল ছবি

সাত বছর আগে রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও হত্যার ঘটনায় চার আসামির ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া আসামি ইসাহাক আলীকে খালাস দেয়া হয়েছে। তারা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর সদস্য।

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি এসএম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করেন।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) এ দিন ধার্য ছিল।

আদালতে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ (এসকে) মোরসেদ। তাকে সহযোগিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ মান্না, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাকির হোসেন মাসুদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নির্মল কুমার দাস।

আদালতে আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. আহসান উল্লাহ ও মো. শামসুল ইসলাম। পলাতক এক আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. হাফিজুর রহমান খান শুনানিতে ছিলেন।

পরে নির্মল কুমার দাস জানান, হাইকোর্ট চার জঙ্গির ফাঁসি বহাল রেখেছেন।

তারা হলেন-জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মামুন (২১), সদস্য লিটন মিয়া ওরফে রফিক (২৩), সাখাওয়াত হোসেন (৩২) ও আহসান উল্লাহ আনসারী ওরফে বিপ্লব (২৪)।

তাদের মধ্যে আহসান উল্লাহ পলাতক। তিনি রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। বাকি তিন আসামি মাসুদ রানা, ইছাহাক ও লিটন কারাগারে আছেন।

এছাড়া জেএমবি সদস্য ইসাহাক আলীকে হাইকোর্ট খালাস দিয়েছেন।

২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রংপুরের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকার জাপানি নাগরিক হোশি কুনিওকে হত্যার দায়ে জেএমবির পাঁচ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি ওই পাঁচজনের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

এরপর মৃত্যুদণ্ডের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদেনের জন্য নথি) হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন। ওই আপিলের পেপার বুক প্রস্তুত হওয়ার পরে সেটি শুনানির বেঞ্চ নির্ধারণ হলে আপিলের শুনানি শুরু হয় গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে। আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর আট কার্যদিবসে শুনানি শেষ হয়েছে।

এছাড়াও চার্জশিটভুক্ত আট আসামির মধ্যে অন্য দু’জন কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাদের মামলার অভিযোগ থেকে বাদ দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়। তাদের মধ্যে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের গজপুরি এলাকার নজরুল ইসলাম ওরফে হাসান ওরফে বাইক হাসান ২০১৬ সালে অভিযোগ গঠনের আগে ১ আগস্ট রাজশাহীতে এবং কুড়িগ্রামের রাজারহাটের চর বিদ্যানন্দ এলাকার সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুল ওরফে চঞ্চল ওরফে সবুজ ওরফে রবি অভিযোগ গঠনের পর ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এছাড়া বিজয় নামে আরেকজনের জড়িত থাকার তথ্য পেলেও পুলিশ তাকে শনাক্ত করতে পারেনি।

জেএমবির ওই আট জঙ্গির বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৭ আগস্ট রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী।

পরে মামলাটি রংপুরের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকারের আদালতে স্থানান্তরিত হলে ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।মামলায় বাদীপক্ষের ৫৫ জন সাক্ষী এবং আসামিপক্ষের একজন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।

জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও ২০১১ সালের ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন। তিনি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কাচু আলুটারি গ্রামে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে উন্নত মানের ঘাসের চাষ করতেন। ২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর ওই কাচু আলুটারি গ্রামে ৬৬ বছর বয়সী কুনিওকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

—ইউএনবি