এপি, জাপান :
জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে একের পর এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৪৮ জন নিহত হয়েছে। এ সময় বেশ কিছু ভবন, যানবাহন ও নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সোমবার বিকেলে ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার একদিন পর ইশিকাওয়া প্রশাসনিক অঞ্চল এবং আশেপাশের এলাকায় আফটারশক অব্যাহত রয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইশিকাওয়ায় ৪৮ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া আরও সাতজন গুরুতর আহত হয়েছেন। ভূমিকম্পে ওই এলাকার ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, জীবন বাঁচানো আমাদের অগ্রাধিকার এবং আমরা সময়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছি।’ তিনি বলেন, ‘বাড়িতে আটকা পড়া লোকজনকে অবিলম্বে উদ্ধার করা জরুরি।’
তিনি যখন কথা বলছিলেন তখন ৫.৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে ওই এলাকা কেঁপে উঠে।
কিশিদা বলেন, উদ্ধার কাজে যোগ দিতে দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় ১ হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে জাপানের সামরিক বাহিনী।
এদিকে ওই সময় আগুনের শিখা ও ধোঁয়ায় ওয়াজিমা শহরে আকাশ ছেয়ে যায়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় দমকল বাহিনী।
পরমাণু নিয়ন্ত্রকরা জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে।
সংবাদমাধ্যমের ভিডিওতে দেখা গেছে, ধসে পড়া বাড়িগুলোর সারি। কিছু কাঠের অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে। গাড়িগুলো উল্টে গিয়েছে। অর্ধ-ডুবে যাওয়া জাহাজগুলো উপসাগরে ভেসে উঠে যেখানে সুনামির ঢেউ নেমে এসেছিল। উপকূল কর্দমাক্ত হয়ে যায়।
সোমবার জাপানের আবহাওয়া সংস্থা ইশিকাওয়ার জন্য একটি বড় সুনামি সতর্কতা জারি করেছে এবং জাপানের প্রধান দ্বীপ হোনশুর পশ্চিম উপকূলের বাকি অংশের পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলীয় হোক্কাইডো দ্বীপের জন্য নিম্ন স্তরের সুনামি সতর্কতা বা পরামর্শ জারি করেছে।
কয়েক ঘণ্টা পরে সতর্কতা সংকেতের মাত্রা কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত সমস্ত সুনামি সতর্কতা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এক মিটারের (৩ ফুট) বেশি উচ্চতার ঢেউ কিছু জায়গায় আঘাত হেনেছে।
সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ওই এলাকায় আরও বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে।
বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া লোকজন অডিটোরিয়াম, স্কুল ও কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছেন। এই অঞ্চলে বুলেট ট্রেনগুলো বন্ধ রাখা হয়েছিল, তবে কিছু জায়গায় পরিষেবা আবারও চালু করা হয়েছে। মহাসড়কের কিছু অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, পানির পাইপ ফেটে গেছে এবং কিছু এলাকায় মুঠোফোন পরিষেবা বন্ধ রয়েছে।
আবহাওয়া পূর্বাভাসকারীরা বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছেন, যা এরই মধ্যে ভেঙে পড়া ভবন ও অবকাঠামো নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, তার প্রশাসন জাপানের জনগণকে যেকোনো ধরনের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অববাহিকায় আগ্নেয়গিরি এবং ফল্ট লাইনগুলোর একটি আর্ক “রিং অফ ফায়ার” বরাবর অবস্থানের কারণে জাপান প্রায়শই ভূমিকম্পের শিকার হয়।
শেষ দিনে দেশটি প্রায় একশ’ আফটারশক অনুভব করেছে।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২