টাকা ও রুপির বিপরীতে ডলারের ঊর্ধ্বগতির কারণে মন্দাভাব বিরাজ করছে বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে।
বিগত অর্থবছরের তুলনায় ভারতে পণ্য রপ্তানির পরিমাণ কমেছে ৫০ শতাংশেরও বেশি। ফলে তলানিতে ঠেকেছে সরকারের রাজস্ব আদায়।
বন্দরসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে প্রায় সব ধরনের পণ্য রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। ভারত থেকে কয়লা, পাথর, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য, বাংলাদেশে আমদানি করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রকার খাদ্যদ্রব্য, হস্ত শিল্প, তাতের তৈরি দ্রব্য, বেতের তৈরি দ্রব্য, ফল মূল, শুঁটকি মাছ, সাতকড়া, প্রাণের পণ্যসহ অন্যান্য দ্রব্যাদি ভারতে রপ্তানি করা হয়ে থাকে।
সুতারকান্দি ইমিগ্রেশন পয়েন্ট এর তথ্যমতে, প্রতিদিন এই সীমান্ত দিয়ে গড়ে ২০ জন যাওয়া আসা করে। শীত মৌসুমে এ হার আরও বাড়ে।
শুল্ক বন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তার তথ্যমতে, প্রতিবছর বন্দর থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়। তবে চলতি বছরে তা অর্ধেকের কম হবে বলে তাদের ধারণা।
এদিকে বিগত অর্থবছরগুলোর তুলনায় রপ্তানির পরিমাণও অর্ধেকেরও বেশি কমেছে।
মূলত ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ভাটা পড়ে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরের বছর মহামারির ধকল কাটিয়ে আবারও চাঙ্গা হতে থাকে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য।
তবে নতুন করে রপ্তানি বাণিজ্যে আবারও সংকট তৈরি করছে ডলারের ঊর্ধ্বগতি।
রুপির বিপরীতে ডলারের ঊর্ধ্বগতিতে আমদানি খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ থেকে পণ্য নেওয়া কমিয়ে দিয়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।
বর্তমানে সিমেন্ট, বরফজাত মাছ ও প্লাস্টিকসহ কয়েকটি পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।
স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রায় এক বছর ধরে গম আমদানি করতে পারছেন না তারা। গত বছরের ৩০ মের পর বন্দরে গমের কোনো চালান আসেনি।
তারা বলেন, যেসব পণ্য আমদানির অনুমতি আছে তার বেশিরভাগই ত্রিপুরার বাইরের রাজ্য থেকে আনতে হয়। ফলে আমদানি খরচ বেড়ে যায়। এছাড়া এখন ডলার সংকটের কারণে চাহিদামতো এলসিও করা যাচ্ছে না।
শেওলা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সুমন আহমদ বলেন, কখন কোন পণ্যের চাহিদা তৈরি হবে, সেটি আগে থেকে বলা যাবে না। সেজন্য সব পণ্য আমদানির অনুমতি প্রয়োজন, যাতে যখন যে পণ্যের চাহিদা থাকবে তখন যেন সে পণ্য আমদানি করা যায়।
তিনি আরও বলেন, যদি এ সুযোগটি দেওয়া হয় তাহলে ব্যবসায়ীরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি সরকারেরও রাজস্ব বাড়বে। পাশাপাশি আমদানি না হওয়ায় এখন বন্দরে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, সেটি কেটে গিয়ে বন্দর আরও চাঙ্গা হবে।
এ বিষয়ে শেওলা স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা রোকন উদ্দিন বলেন, বিগত অর্থবছরগুলোর তুলনায় এবার রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ একেবারেই কম। রাজস্ব বোর্ড থেকে তালিকার পণ্যগুলো আমদানির অনুমতি দিলে আবারও বন্দর দিয়ে আমদানি বাড়বে বলে আশা করছি। আর আমদানি বাড়লে বন্দর এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষের রাজস্ব আদায়ও বাড়বে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি