নিজস্ব প্রতিবেদক:
ডলার সঙ্কটে বিদেশী কোম্পানির বকেয়া পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে পেট্রোবাংলা। সংস্থাটি বহুজাতিক কোম্পানি থেকে গ্যাস-এলএনজি কিনে নির্ধারিত সময়ে মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না। ফলে বিদেশী কোম্পানিগুলোর কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির বর্তমানে ৪৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা প্রায় ৫ হাজার ৯ কোটি টাকা দেনা জমেছে। আর বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় মূল বিলের ওপর সুদযুক্ত হয়ে বড় হচ্ছে দেনার বোঝা। পাশাপাশি নতুন করে এলএনজি আমদানিও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। এমন অবস্থায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ঋণ চাওয়ার পাশাপাশি বিদেশি সংস্থাগুলোর বিল পরিশোধে পেট্রোবাংলা প্রয়োজনীয় ডলার সংস্থানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছে। পেট্রোবাংলা সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আমেরিকান কোম্পানি শেভরন বর্তমানে দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে পাওয়া মোট গ্যাসের ৬০-৬৫ শতাংশ সরবরাহ করে। স্থানীয় খনি থেকে উত্তোলন করে গ্যাস সরবরাহকারী আরেকটি কোম্পানি হচ্ছে তাল্লো। তাছাড়া কাতারের রাস গ্যাস এবং ওমানের ওকিউ ট্রেডিং দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় তরলীকৃত গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ করে। পাশাপাশি খোলা বাজার থেকেও এলএনজি আমদানি করা হয়। বর্তমানে ওসব কোম্পানির সম্মিলিতভাবে ৪৬ কোটি ৭০ লাখ ডলারের বেশি পেট্রোবাংলার কাছে পাওনা রয়েছে। বকেয়া বিলগুলোর মধ্যে ২ মাস থেকে ৬ মাসের পুরোনো বিলও রয়েছে। আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার বাজার থেকে ডলার সংগ্রহ করা সম্ভব না হওয়ায় বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে না। ফলে ইনভয়েস মূল্যের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বিলম্ব ফি। সূত্র জানায়, দেশে বিদ্যুৎ ও শিল্প উৎপাদন এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম সচল রাখতে নির্বিঘœ গ্যাস সরবরাহ জরুরি। পাশাপাশি আমদানির পরিমাণ বা স্থানীয় উৎপাদনও বাড়ানো প্রয়োজন।
এমন অবস্থায় দীর্ঘমেয়াদে বকেয়া থাকলে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হবে। কারণ বকেয়া পরিশোধ না করলে কয়েকটি আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি নতুন করে জ¦ালানি সরবরাহ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। ফলে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে পেট্রোবাংলা। সূত্র আরো জানায়, বিবিয়ানা ও জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্র থেকে শেভরন প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করে। কোম্পানিটি স্থানীয় উৎপাদনের ৬০-৬৫ শতাংশ এবং মোট গ্যাস ব্যবহারের ৪৩ শতাংশই সরবরাহ করে। গত বছরের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত শেভরনের কাছে পেট্রোবাংলার বকেয়া ২১ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ ছাড়া বিশ্বের বৃহত্তম এলএনজি কোম্পানি কাতারের রাস গ্যাসের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির অধীনে এলএনজি আমদানি বাবদ ৬ কোটি ৯০ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং ওমানের ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেডের কাছে ৫ কোটি ৪০ লাখ ৬৬ হাজার ডলার বকেয়া রয়েছে।
এ ছাড়া স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয় বাবদ বকেয়া রয়েছে ১১ কোটি ৩৮ লাখ ২০ হাজার। এই বকেয়া বিলগুলোর সিংহভাগ জনতা ব্যাংককে নিষ্পত্তি করতে হবে। এ ছাড়া অগ্রণী ব্যাংক ও আইএফআইসি ব্যাংককেও তাদের ব্যাংকে খোলা এলসির বিপরীতে যথাক্রমে-৭ কোটি ৬৭ লাখ ৮০ হাজার এবং ৩৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার মূল্যের বিল পরিশোধ করতে হবে। এজন্য জ¦ালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে পেট্রোবাংলা।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ