পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ঢাকা থেকে লঞ্চে করে বরিশালসহ উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করত।
এক বছরের মধ্যে, এই সংখ্যা ৩৩ হাজার থেকে কমে ১২ হাজারে পৌঁছেছে।
শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সংগঠনটির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে।
এ ছাড়া প্রতিদিন অন্তত ৮০টি লঞ্চ ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যেত। এই সংখ্যা কমে ২০ এ পৌঁছেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বছরে লঞ্চ চলাচল ২৫ শতাংশ কমেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত জরিপ ও মনিটরিং করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
জরিপকালে নৌপরিবহন বিশেষজ্ঞ, নৌযান মালিক ও শ্রমিক নেতাদের পাশাপাশি লঞ্চের কর্মী, যাত্রী ও সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এসসিআরএফ রিপোর্ট অনুসারে, অভ্যন্তরীণ শিপিং ব্যবসায় মন্দার কারণে মালিকরা এক বছরে কমপক্ষে ২০টি লঞ্চ বন্ধ করেছে। এর বাইরে আরও অন্তত ছয়টি লঞ্চ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ আধুনিক ও আরামদায়ক হয়েছে। মানুষ স্বল্প সময়ে সড়কপথে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন করতে পারছে।
এ কারণে ঢাকা ও বৃহত্তর বরিশালের মধ্যে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এবং লঞ্চ যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে।
এতে বলা হয়, যথাযথভাবে নদী খনন ও পলি অপসারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার কারণে নাব্যতা সংকটের কারণে অনেক নৌপথ পরিত্যক্ত হয়েছে।
এ ছাড়া লঞ্চের যাত্রীদের অনীহার কারণে কমছে যাত্রী সংখ্যা
এসসিআরএফ-এর তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা থেকে নৌপথে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া ৫০ হাজার মানুষের মধ্যে ৭০ শতাংশই বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর ও ঝালকাঠিগামী লঞ্চের যাত্রী।
যদিও লঞ্চ মালিকদের দাবি, যাত্রী কমে যাওয়ায় তাদের ব্যবসা খুবই সংকটে পড়েছে। তবে তারা এই দাবির জন্য গ্রহণযোগ্য তথ্য দিতে পারেনি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বরং সরকারি তথ্য অনুযায়ী লঞ্চ ব্যবসা এখনও লাভজনক। তবে আগের তুলনায় মুনাফার হার কমেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মালিকদের দাবি, প্রতিদিন ৩০-৩৫টি লঞ্চে মাত্র ৫ থেকে ৬ হাজার যাত্রী ঢাকা ছেড়ে যায়।
অন্যদিকে, সরকারি তথ্য অনুযায়ী প্রতিদিন অন্তত ৬০টি লঞ্চ ঢাকা ছেড়ে যায় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
বিআইডব্লিউটিএ‘র বন্দর ও পরিবহন বিভাগের উদ্ধৃতি দিয়ে এসসিআরএফ জানিয়েছে, এই বছরের ১৯ আগস্ট মোট ৬২টি যাত্রীবাহী লঞ্চ ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল এবং পার্শ্ববর্তী ঘাট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চাঁদপুর অঞ্চলে ২২টি, বরিশাল অঞ্চলে ১০টি, ভোলা অঞ্চলে ১৪টি, পটুয়াখালী অঞ্চলে ৬টি এবং অন্যান্য অঞ্চলে ১০টি লঞ্চ ছিল।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি