October 15, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, February 19th, 2023, 8:40 pm

তিন দিনেই ৬ উইকেট জিতে নিয়েছে ভারত

অনলাইন ডেস্ক :

দিনের ষষ্ঠ বলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে পা বাড়িয়ে খেলে কট বিহাইন্ড হয়ে গেলেন ট্রাভিস হেড। সেই যে শুরু, এরপর কেবল আসা-যাওয়াই করলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে তাদেরকে অল্পতে গুটিয়ে দিয়ে জয়ের ভিতটা গড়ে দেন রবীন্দ্র জাদেজা। ছোট লক্ষ্য সহজেই তাড়া করে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি ধরে রাখল ভারত। দিল্লিতে রোববার সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট তিন দিনেই ৬ উইকেটে জিতে নিয়েছে ভারত। চার ম্যাচের সিরিজে এখন স্বাগতিকরা এগিয়ে ২-০ ব্যবধানে। বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির আগের লড়াইয়ে ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল ভারত। নাগপুরে সিরিজের প্রথম টেস্টেও তিন দিনে জিতেছিল ভারত। এবার প্রথম ইনিংসে ১ রানের লিড পাওয়া অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয়ভাগে ¯্রফে ১১৩ রানে গুঁড়িয়ে দেয় রোহিত শর্মার দল। বাঁহাতি স্পিনে ৪২ রানে ৭ উইকেট নিয়ে বড় অবদান রাখেন জাদেজা। টেস্টে তার আগের সেরা ছিল ৪৮ রানে ৭ উইকেট। ম্যাচে মোট ১০ উইকেট নিয়ে সেরার পুরস্কার জেতেন জাদেজা। প্রথম ম্যাচেও সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন তিনি। টেস্টে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ১০ উইকেট পেলেন তিনি। দুই ইনিংসেই তিনটি করে শিকার ধরেন অশ্বিন। ১১৫ রানের লক্ষ্যে শুরুতে কিছুটা চাপে পড়ে ভারত। কাক্সিক্ষত ঠিকানায় পৌঁছাতে অবশ্য তেমন বেগ পেতে হয়নি তাদের। নিজের শততম টেস্টে ৩১ রান করে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন চেতেশ্বর পুজারা। ২৩ রানে অপরাজিত ছিলেন শ্রিকর ভারত। অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে ১ উইকেটে ৬১ রান নিয়ে দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়া টিকতে পারেনি এক সেশনও। ৯ উইকেট হারায় তারা ৪৮ রান তুলতে। ইনিংসে কেবল দুই জন যেতে পারেন দুই অঙ্কে। অস্ট্রেলিয়ার ৬ ব্যাটসম্যান আউট হন সুইপ ও রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে। ৩৯ রান নিয়ে খেলতে নামা হেডকে ৪ রান যোগ করতেই বিদায় করে দেন অশ্বিন। কয়েক ওভার পর এই স্পিনারকে সুইপ করে এলবিডব্লিউ হন স্টিভেন স্মিথ। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তারকা এই ব্যাটসম্যান। মার্নাস লাবুশেনকে বোল্ড করে শিকার শুরু করেন জাদেজা। টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর ব্যাটসম্যান করেন ৫ চারে ৩৫ রান। এরপর শুরু হয় সফরকারী ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিল। ৯৫ রানে বসেই চার ব্যাটসম্যানকে হারায় তারা। ডেভিড ওয়ার্নারের কনকাশন সাব হিসেবে খেলা ম্যাট রেনশ এলবিডব্লিউ হন অশ্বিনের বলে। জাদেজা পরপর দুই বলে ফেরান পিটার হ্যান্ডসকম ও প্যাট কামিন্সকে। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা হ্যান্ডসকম এবার স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শূন্য রানে। সুইপ করতে গিয়ে কামিন্স হন বোল্ড। কয়েক ওভার পর অ্যালেক্স কেয়ারির স্টাম্প এলোমেলো করে দিয়ে জাদেজা পূর্ণ করেন টেস্টে তার দ্বাদশ পাঁচ উইকেট। এরপর ন্যাথান লায়ন ও ম্যাথু কুনেমানকেও বোল্ড করে দেন তিনি। জাদেজার ৭ উইকেটের পাঁচটিই বোল্ড। এর আগে ইনিংসে পাঁচ ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করেছিলেন পাকিস্তানের শোয়েব আখতারের, ২০০২ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে। গত ৫০ বছরে একমাত্র স্পিনার হিসেবে এই কীর্তি গড়েছিলেন জাদেজার পূর্বসূরি অনিল কুম্বলে, ১৯৯২ সালে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারেই লোকেশ রাহুলকে হারায় ভারত। ন্যাথান লায়নের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে যান ছন্দ খুঁজে ফেরা ভারতীয় ওপেনার। পুজারার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়ে যান রোহিত শর্মা। ৩৯ রানে ২ উইকেট হারানো দলকে কিছুক্ষণ টানেন বিরাট কোহলি। ৩ চারে ২০ রান করে ফেরেন তিনি টড মার্ফির বলে স্টাম্পড হয়ে। ছোট্ট এই ইনিংসেই দারুণ এক কীর্তি গড়েন কোহলি। শচিন টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুততম ২৫ হাজার রানের রেকর্ড গড়েন তারকা এই ব্যাটসম্যান। কোহলির পর দলে ফেরা শ্রেয়াস আইয়ারও দ্রুত বিদায় নেন। এরপর দলকে আর বিপদে পড়তে দেননি পুজারা ও ভারত। অবিচ্ছিন্ন ৩০ রানের জুটিতে দলকে জিতিয়ে ফেরেন তারা। মার্ফিকে চার মেরে ভারতকে বন্দরে পৌঁছে দেন পুজারা। নিজের শততম টেস্টে দলের জয়সূচক রান করতে পেরেছিলেন আর কেবল রিকি পন্টিং। ২০০৬ সালে সিডনি টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার ইয়োহান বোথাকে চার মেরে অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়েছিলেন তিনি। আগামী ১ মার্চ ইন্দোরে শুরু দুই দলের তৃতীয় টেস্ট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ২৬৩
ভারত ১ম ইনিংস: ২৬২
অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৬১/১) ৩১.১ ওভারে ১১৩ (হেড ৪৩, লাবুশেন ৩৫, স্মিথ ৯, রেনশ ২, হ্যান্ডসকম ০, কেয়ারি ৭, কামিন্স ০, লায়ন ৮, মার্ফি ৩*, কুনেমান ০; অশ্বিন ১৬-৩-৫৯-৩, শামি ২-০-১০-০, জাদেজা ১২.২-১-৪২-৭, আকসার ১-০-২-০)
ভারত ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১১৫) ২৬.৪ ওভারে ১১৮/৪ (রোহিত ৩১, রাহুল ১, পুজারা ৩১*, কোহলি ২০, শ্রেয়াস ১২, ভারত ২৩*; কুনেমান ৭-০-৩৮-০, লায়ন ১২-৩-৪৯-২, মার্ফি ৬.৪-২-২২-১, হেড ১-০-৯-০)
ফল: ভারত ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: রবীন্দ্র জাদেজা
সিরিজ: ৪ ম্যাচের সিরিজে ২-০ এগিয়ে ভারত