December 2, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, September 30th, 2024, 8:40 pm

তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক

তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। কয়েক হাজার হেক্টর জমির আমন ও শাক-সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এদিকে বেড়েছে ভাঙনের আতঙ্ক।

উপজেলার খুনিয়াগাছ এলাকার কৃষক ছামাদ আলী বলেন, ‘বানের পানি নামছে। পানির নিচে তলিয়ে থাকা শাক-সবজির ক্ষতি নিয়ে অনেক চিন্তিত আমরা। এর মধ্যে পানি নামার পর নদী ভাঙন হতে পারে। ভাঙনে বাপ-দাদার ভিটা হারিয়েছি, এবার যে আবার কপালে কী আছে কে জানে।’

রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার পর থেকে তিস্তার পানি কমতে শুরু করে। এতে বন্যার ক্ষতি দৃশ্যমান হতে শুরু হয়।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, রবিবার রাত থেকে তিস্তার পানি নামতে শুরু করেছে। মঙ্গলবারের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

সোমবার দুপুর ১২টায় পাউবো জানায়, ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইখুল আরিফিন বলেন, তিস্তাপাড়ে বন্যায় আগাম শীতকালীন শাক-সবজির অনেক খেত তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি নেমে না গেলে এসব ফসলের বেশ ক্ষতি হবে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলো থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। মঙ্গলবারের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হতে পারে।

এছাড়া নদীর পানি কমতে শুরু করায় ভাঙনের আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী।

লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে ২৫ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। অনেকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্র,

রাস্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী রক্ষা বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে।

আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা এলাকা মনির মিয়া জানান, ঘরের ভেতর নদীর পানি ঢুকে পড়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছি। বাঁধের ওপর পলিথিন মোড়ানো ঝুপড়ি ঘরে থাকতে হচ্ছে।

পাকার মাথা এলাকার বাসিন্দা নবিয়ার রহমান জানান, আকস্মিকভাবে তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। এজন্য অনেক ক্ষতি হয়েছে। বাড়ির ধান চালসহ সবকিছু পানির নিচে। এখন বাঁধে এসে থাকতে হচ্ছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, বন্যা কবলিত এলাকাগুলো থেকে পানি নামা শুরু হয়েছে। তিস্তাপাড়ে পানিবন্দি পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে জনপ্রতি ১০ কেজি হারে ১৫ টন জিআরের চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম।

—–ইউএনবি