জেলা প্রতিনিধি, ফেনী :
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ২ নং রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের স্থায়ী কার্যালয় ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থান কৌরশমুন্সী বাজারে নির্মাণের দাবীতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে প্রায় ১০ হাজার লোক উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনের দৈর্ঘ ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত জনগন জানান,রাজাপুর ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ডের মধ্যে ৬ ওয়ার্ডের মানুষের বসবাস কৌরশমুন্সী বাজারের চারপাশে। ইউনিয়নের তিন ভাগের ২ ভাগ জনগনের বসবাস কৌরশমুন্সী বাজার কেন্দ্রীক। রাজাপুর ইউনিয়নের প্রাণ কেন্দ্র হচ্ছে এ কৌরশমুন্সী বাজার। কৌরশমুন্সী বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের স্থায়ী কার্যালয় হলে ইউনিয়নের সকল বাসিন্দাদের জন্য সুবিধা হয়। রাজাপুর বাজারের উত্তর পাশে সিন্দুরপুর ইউনিয়ন ও পূর্বপাশে পাঁছগাছিয়া ইউনিয়ন । বাজারেরও কিছু অংশ পড়েছে সিন্দুরপুরে। কিন্তু ইউনিয়নের বিশাল অংশ কৌরশমুন্সী বাজারের পূর্বে ও উত্তরে। ইউপি কার্যালয়ে সেবা নিতে গেলে এদিকের বাসিন্দাদের অনেক বেগ পোহাতে হয়। কোন কাজে ইউপি কার্যালয়ে এদিক থেকে রাজাপুর পর্যন্ত গিয়ে কাজ শেষ করতে আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। কিন্তু কৌরশমুন্সীতে ইউনিয়ন পরিষদের স্থায়ী কার্যালয় হলে সেবা নিতে আসা ইউনিয়নের কোন বাসিন্দাকে এত কষ্ট করতে হবেনা। কারন কৌরশমুন্সী বাজার ইউনিয়নের সকল বাসিন্দাদের জন্য সমান দূরত্বে অবস্থিত। তাই ইউনিয়নবাসীর কষ্ট লাগবে কৌরশমুন্সী বাজারে রাজাপুর ইউনিয়নের স্থায়ী কার্যালয় চায় স্থানীয় বাসিন্দারা।
সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন রাজাপুর ইউনিয়নের স্থায়ী কোন কার্যালয় না থাকায় ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা তাদের সুবিধামতস্থানে ঘর বা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চালাতো। এতে ভাড়া প্রদানে চেয়ারম্যানদের নানাভাবে বেগ পোহাতে হত। অপরদিকে রাজাপুর ইউনিয়নের এক তৃতিয়াংশ বাসিন্দা কৌরশমুন্সী বাজারে ইউপি কার্যালয় স্থানান্তরের দাবী জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের দাবী হল ইউনিয়নের মধ্যখানে কৌরশমুন্সী বাজার এখানে ইউপি কার্যালয় হলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সকলের জন্য সমান দূরত্বে হয়। ইউনিয়ন পরিষদে আসতে কারো অতিরিক্ত কষ্ট করতে হবেনা। কিন্তু রাজাপুর বাজারে ইউপি কার্যালয় হওয়াতে মুষ্টিমেয় কিছু লোকের সুবিধা হলেও পুরো ইউনিয়নের এক তৃতীয়াংশ লোকের অসুবিধা হয়। জনগনের দাবীর প্রেক্ষিতে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয় কৌরশমুন্সী বাজারে তার নিজস্ব ভবনে কোন ভাড়া ব্যতিরেকে ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় করেন। এবং রাজাপুর বাজারেও একটি অস্থায়ী কার্যালয় ভাড়া নেন। সপ্তাহে ২ দিন রাজাপুর এবং ৩ দিন কৌরশমুন্সী বাজারে অফিস করার সিদ্ধান্ত নেন। যাতে ইউনিয়নের দুইদিকের জনগন সমান সেবা পায়। কিন্তু চেয়ারম্যানের বিরোধী যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম বাঙ্গালী এলাকার কিছু কুচক্রিমহলকে সাথে নিয়ে রাজাপুর থেকে বোর্ড অফিস সরিয়ে নিচ্ছে এমন গুজব রটিয়ে গত রবিবার বিকেলে রাজাপুর বাজারে লোক জড়ো করে কৌরশমুন্সী বাজারের পাশের বাসিন্দা ও যুবলীগ/ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর উপর হামলা করে এবং তাদের মোটর সাইকেল ভাংচুর করে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও দাগনভূঞা উপজেলা আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন মামুন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের স্থায়ী কার্যালয় স্থাপন নিয়ে দুই এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে তা দ্রুতই সামাধান করা হবে। এ বিষয়ে আমার নেতা ফেনী জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন হাজারী এমপি অবগত রয়েছেন। তিনি এ বিষয়টির সুষ্ঠু সামাধান করবেন।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি