November 5, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, September 11th, 2022, 9:57 pm

দেশজুড়ে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশজুড়ে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। দেশের ডেঙ্গুর পরিস্থিতি উন্নতি নেই। ফলে সময়ের সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর সারি। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত আগস্ট মাসে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়েছে ৩ হাজার ৫২১ জন ডেঙ্গু রোগী। আর চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেই সহ্রসাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে এবং ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও ২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গু সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। ওই বছর আক্রান্তে সংখ্যা ১ লাখ ছাড়ালেও ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেকটাই কম ছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গৃহপালিত মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়। নগরীর চার পাশের ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থাকায়, নোংরা ড্রেন পরিষ্কার না করায় চলতি বর্ষা মৌসুমে মশার প্রজনন বেড়ে গেছে। অথচ নগরীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলে এবং মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করলেই মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। জমাটবদ্ধ স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা হয়। সেজন্যই ঘরের আশপাশে পানি জমাটবদ্ধ অবস্থায় রাখা যাবে না। এডিস মশা ঘরের ভেতরেই থাকে এবং দিনের বেলায় কামড়ায়। এ ব্যাপারে সকলকে সচেতন হতে হবে।
সূত্র জানায়, ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে হলে এডিস মশা নিধন করতে হবে। মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে দেশে প্রচারণা থাকলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেই। এমন পরিস্থিতি সামনে বড় বিপদ নিয়ে আসবে। বর্তমানে প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। রাজধানীর আজিমপুর, পুরান ঢাকা, যাত্রাবাড়ী, মানিকনগর, খিলগাঁও, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মহাখালী, গুলশান ও উত্তরা এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নতুন ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দাই বেশি। সে তুলনায় ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম।
এদিকে এ প্রসঙ্গে ধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ জানান, সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে রাজধানীতে আক্রান্তের হার বেশি। সেজন্য এডিস মশা নিধন করতে হবে। একই সঙ্গে এডিস মশার উৎসস্থল ধ্বংস করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। এক ব্যক্তি একাধিক বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে ঝুঁকি বেশি। ডেঙ্গু জ¦র হলো ব্যাকবোন ফিভার। ডেঙ্গু হলে প্রচ- মাথাব্যথা হয়, সারা শরীরে র‌্যাশ ওঠে ও ১০৩-১০৫ ডিগ্রি তাপমাত্রার জ¦র আসে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। জ¦র হলে শুধু প্যারাসিটামল ওষুধ খেতে হবে। এসপিরিন জাতীয় কোনো ওষুধ খাওয়া যাবে না। প্রচুর পানি খেতে হবে। একই সঙ্গে সিভিসি পরীক্ষা করিয়ে দেখতে হবে। প্লাটিলেট যদি ১ লাখের নিচে নেমে আসে তাহলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর জানান, বর্তমানে যে আবহাওয়া দেশে বিরাজ করছে তা ডেঙ্গুর মৌসুম। হঠাৎ বৃষ্টি আবার গরম। বাসা বাড়ি ও আশপাশে স্বচ্ছ পানি জমাট বেধে এডিস মশার জন্ম হচ্ছে। এডিস মশার উৎসস্থল ধ্বংস করতে না পারলে সামনে ভয়াবহ বিপদ আসবে। সময় থাকতে সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গু এখন সারা বছর হলেও এই সময়টাতেই বেশি হয়। সেজন্য মশা নিধনের উদ্যোগ নিতে হবে বেং জনগণকেও সচেতন করতে হবে।