December 6, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, April 11th, 2023, 8:15 pm

নাটকীয় লড়াইয়ে পারল না বেঙ্গালোর

অনলাইন ডেস্ক :

শেষ বলে দরকার ১ রান, হাতে ১ উইকেট। ডেলিভারি না করে নন স্ট্রাইকে রান আউটের চেষ্টা করলেন হার্শাল প্যাটেল। পারলেন না, ততক্ষণে প্রায় মাঝ পিচে রবি বিষ্ণই। শেষ বলে আবার রান আউটের সুযোগ পায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর। কিন্তু বল ঠিকঠাক ধরতেই পারেননি দিনেশ কার্তিক। পড়িমড়ি করে রান নিয়েই উল্লাসে ফেটে পড়লেন আভেশ খান ও বিষ্ণইসহ পুরো লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। নিকোলাস পুরানের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে হাতের মুঠোয় আসা ম্যাচ ফসকে যেতে বসেছিল লক্ষ্ণৌর। অনেক নাটকীয়তার পর শেষ বলে গিয়ে ১ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে তারা। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে সোমবার স্বাগতিকদের ২ উইকেটে করা ২১২ রান টপকে লক্ষ্ণৌর জয়ের মূল কারিগর পুরান; ¯্রফে ১৯ বলে ৬২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন তিনি। মার্কাস স্টয়নিস করেন ৩০ বলে ৬৫ রান। আইপিএলের ১৫ বছরের ইতিহাসে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের নজির আছে ¯্রফে তিনটি। টুর্নামেন্টটিতে ১ উইকেটে জেতা চতুর্থ ম্যাচও এটি। ম্যাচের শেষ বলে ১ উইকেটে জয় পাওয়ার ঘটনা এর আগে দেখা গেছে ¯্রফে একবার, ২০১৮ সালে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে শেষ হাসি হেসেছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। চিন্নাস্বামীতে নাটকীয়তায় ভরা শেষ দুই ওভারে যখন ১৫ রান দরকার লক্ষ্ণৌর, তখন পরপর দুটি ওয়াইড করেন ওয়েইন পারনেল। দুই বল পর চার মেরে সমীকরণ ৯ বলে ৭ রানে নামান আয়ুশ বাদোনি। পরের বলটি ছিল নিচু ফুল টস। অনেকটা নিচু হয়ে ফাইন লেগ দিয়ে সোজা সীমানার বাইরে পাঠান বাদোনি। কিন্তু পাননি কোনো রান। কারণ শটটি খেলার সময় ফলো থ্রু-তে স্টাম্পে লাগে তার ব্যাট, পড়ে যায় বেলস। হিট আউট হয়ে ফিরতে হয় তাকে। তাদের সামনে নতুন সমীকরণ দাঁড়ায় ৮ বলে ৭ রান। ছিল না কোনো স্বীকৃত ব্যাটসম্যান। শেষ ওভারে ৫ রানের সমীকরণে মার্ক উড ও জয়দেব উনাদকাটকে আউট করে সুপার ওভারের সম্ভাবনা জাগান হার্শাল। আর শেষ বলে ওই নাটকীয়তা; প্রথমে হার্শাল নিজেই কাজে লাগাতে পারেননি রান আউটের সুযোগ। পরে কার্তিকের ব্যর্থতায় রোমাঞ্চকর জয় পায় লক্ষ্ণৌ। অথচ রান তাড়ায় শুরুর ব্যর্থতা কাটিয়ে পুরান আর স্টয়নিসের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে অনায়াস জয়ের আশায় ছিল লক্ষ্ণৌ। ২৩ রানে তিন উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল তারা। রান তোলার গতিও ছিল ধীর। ওখান থেকে দলের হাল ধরেন স্টয়নিস। বেঙ্গালোরের বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দেন তিনি। প্রথম ১২ বলে ১৪ রান করা স্টয়নিস পরের ১৮ বলে নেন ৫১। অষ্টম ওভারে হার্শালকে ৬, ৪ ও ৪ মেরে শুরু তার ঝড়ের। কর্ন শর্মার পরের ওভারেও মারেন ৬, ৪ ও ৪। শাহবাজ আহমেদকে ছক্কা মেরে ২৫ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি। ওই ওভারে মারেন আরও একটি ছক্কা। সব মিলিয়ে ৬টি চারের সঙ্গে ৫টি ছক্কা মারেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডারের বিদায়ের পর ক্রিজে যান পুরান এবং স্টয়নিস যেখানে থামেন সেখান থেকেই শুরু করেন নতুন ঝড়। পুরান ক্রিজে যাওয়ার সময় ৫৮ বলে তার দলের দরকার ছিল ১১৪ রান, মুখোমুখি দ্বিতীয় বলেই ছক্কা মারেন তিনি। এরপর আর থামাথামি নেই ক্যারিবিয়ান তারকার। একের পর এক চার-ছক্কায় ¯্রফে ১৫ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি। আইপিএল ইতিহাসে এর চেয়ে কম বলে ফিফটি আছে ¯্রফে দুটি- ২০১৮ সালে লোকেশ রাহুল ও গত আসরে প্যাট কামিন্স (দুজনই ১৪ বলে)। ১৫ বলের ফিফটিতে ইউসুফ পাঠান ও সুনিল নারাইনের সঙ্গী হন পুরান। ১৭তম ওভারের শেষ বলে প্রায় কোমর উচ্চতার ফুল টসে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ ফাইন লেগে ধরা পড়েন পুরান। ১৯ বলে ৪ চার ও ৭ ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস। পুরানের বিদায়ের পর ২৪ বলে ৩০ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে হিট আউট হন বাদোনি। এর আগে বেঙ্গালোর বড় স্কোর পায় টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি, ফাফ দু প্লেসি ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সৌজন্যে। উদ্বোধনী জুটিতে ৯৬ রান যোগ করেন কোহলি ও দু প্লেসি। তিন ম্যাচে দ্বিতীয় ফিফটিতে ৪টি করে চার-ছক্কায় ৪৪ বলে ৬১ রানের ইনিংস খেলেন কোহলি। দ্বিতীয় উইকেটে দু প্লেসি ও ম্যাক্সওয়েল মিলে ৫০ বলে যোগ করেন ১১৫ রান। ¯্রফে ২৪ বলে ফিফটি করা ম্যাক্সওয়েল আউট হন ৩ চার ও ৬ ছক্কায় ২৯ বলে ৫৯ রান করে। অধিনায়ক দু প্লেসি খেলেন ৪৬ বলে ৭৯ রানের ইনিংস। যেখানে আছে ৫টি করে চার ও ছক্কা। তাদের এই প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত বৃথা যায় পুরান-স্টয়নিসের ঝড়ে।