October 13, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, January 29th, 2023, 8:24 pm

নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা নিষিদ্ধ করল তালেবান

অনলাইন ডেস্ক :

বিশ্ববিদ্যালয়ে আফগান নারীরা পড়তে পারবেন না সেই ঘোষণা আগেই দিয়েছিল কট্টর তালেবান সরকার; সেই ধারায় এবার তাদের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা এল। আফগানিস্তানে ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের এক মাসের মধ্যে দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে। শনিবার রয়টার্স উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ নির্দেশনা মানবে না সেটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তালেবান সরকার পরিচালিত মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশে ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হতে যাওয়া ভর্তি পরীক্ষায় নারীদের অংশ নেওয়ার সুযোগ বন্ধের কথা বলা হয়েছে। উচ্চশিক্ষা থেকে নারীদের দূরে রাখতে তালেবান নীতির অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। কাবুলসহ আফগানিস্তানের উত্তরের প্রদেশগুলোর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে এসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। এ আগে গত ২১ ডিসেম্বর পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত তালেবান শাসিত দেশটিতে নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ডিসেম্বরের ওই নির্দেশনার মাত্র তিন মাস আগে আফগানিস্তান জুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হয়, হাজার হাজার তরুণী ও নারী তাতে অংশ নেয়। তবে মেয়েরা কোন কোন বিষয় পড়তে পারবে, তার ওপর বিধিনিষেধ দিয়ে রেখেছিল তালেবান কর্তৃপক্ষ। বলে দেওয়া হয়েছিল, ভেটেরিনারি, প্রকৌশল, অর্থনীতি এবং কৃষি শিক্ষা মেয়েদের জন্য নয়। আর সাংবাদিকতায় মেয়েরা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরার পর তাদের কট্টর ইসলামিক কানুনগুলোও ফিরতে শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাসরুমে ছাত্রীদের বসার জায়গা ছাত্রদের থেকে আলাদা করার জন্য পর্দার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি আসা-যাওয়ার গেইটও আলাদা করে দেওয়া হয়। সে সময় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, শুধু নারী শিক্ষক বা বৃদ্ধ পুরুষরা শ্রেণিকক্ষে মেয়েদের পড়াতে পারবেন। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগই বন্ধ হয়ে গেল। তখন ছাত্রীরা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিল তালেবান নারীর ক্ষমতাকে ‘ভয় পায়’ বলেই এ ধরনের নিয়ম করছে। প্রতিক্রিয়ায় এক নারী জানিয়েছিলেন, “ভবিষ্যতের পথে আমাদের সম্ভাবনার একমাত্র সেতুটাও তারা ধ্বংস করে দিল।” ডিসেম্বরে নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ার মাত্র কয়েকদিন পরই দেশটির সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের এনজিওতে নারীদের কাজ করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে তালেবান। দেশটিতে ছাত্রীদের পাঠদানের জন্য থাকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর বেশিরভাগ আরো আগেই বন্ধ করে দিয়েছে তালেবান। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আফগান নারীদের শিক্ষাগ্রহণ ও কাজের সুযোগ বন্ধ করে দেওয়ার তীব্র সমালোচনা এবং বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও তালেবান প্রশাসনকে তাদের অবস্থান থেকে টলানো যায়নি। নারীদের কাজের সুযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় প্রতিবাদে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংগঠন দেশটিতে তাদের কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে। অথচ, আফগানিস্তানের অর্থনীতি এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে দেশটির অর্ধেকের বেশি মানুষ ত্রাণ উপর নির্ভর করেই বেঁচে আছে।