October 4, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, June 16th, 2023, 8:30 pm

পানি পাচ্ছে না ইউক্রেন, বিশ্বজুড়ে খাদ্য সঙ্কটের শঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক :

ইউক্রেনের কাখোভকায় বিস্ফোরণে বড় একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় নিপ্রো নদীর পানির পানিতে ভেসেছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল। এর প্রভাব পড়ছে কৃষিতে। কৃষিপণ্য রপ্তানিকারক দেশ ইউক্রেনে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সেচের পানির অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘিœত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউক্রেনের কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রায় ছয় লাখ হেক্টর জমিতে সেঁচ দেওয়া হতো কাখোভকা বাঁধের মাধ্যমে। বাঁধটি ধ্বংস হওয়ায় রিজার্ভ পানি নানা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। কৃষিতে খরার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অনেক জমি চাষের অযোগ্য হয়ে পড়বে। এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তায়। ইউক্রেনের কৃষি মন্ত্রণালয়ের দাবি, ওই অঞ্চলের জমিতে চার মিলিয়ন টনের খাদ্যশস্য এবং তেলের বীজ তৈরি হতো। যার বাজারমূল্য সব মিলিয়ে ১.৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। এই বাজারটি এবার সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। পূর্ব ইউরোপের এই অঞ্চলের বেশ অনেকটা অংশ আগেই রাশিয়া দখল করেছিল।

গত দেড় বছর ধরে সেখানে লাগাতার যুদ্ধ চলছে। ফলে বহু কৃষক জমি ছেড়ে পালিয়ে এসেছিলেন। গত বছরেও তারা নিজেদের জমিতে ফসল ফলাতে পারেননি। যুদ্ধের জন্য বহু খেত নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে বিস্ফোরণে বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে অনেকের। খেরসনের এক কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডয়চে ভেলেকে বলেন, নিজের বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন তিনি। কিন্তু তার বাবা-মা এখনো সেখানেই আছেন। তিনি জানান, ২০২২ সালে রাশিয়া আক্রমণ চালানোর কিছুদিনের মধ্যেই তাদের এলাকা রাশিয়ার দখলে চলে যায়। রাশিয়ার সেনা জানিয়ে দেয়, সমস্ত জমি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব করা হবে। অত্যাচারের ভয়ে সে সময়েই তারা পালিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু বৃদ্ধ বাবা-মা-কে নিয়ে আসতে পারেননি। গ্রামে ফিরে যেতে পারলেও তার বিরাট জমিতে এরপর চাষ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। কারণ, সেচের পানি মিলবে না। আর পানি ছাড়া ফসল ফলবে না। পুরো ইউক্রেনের মোট জমির পরিমাণের মাত্র দুই শতাংশ আছে ওই অঞ্চলে।

কিন্তু ইউক্রেনের মোট ফসলের ১২% উৎপাদন হয় সেখানে। খেরসন অঞ্চলে মাটি উর্বর। সেখানে সবচেয়ে ভালো হয় সবজি। ওই অঞ্চলের টমেটো বিশ্ববিখ্যাত। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, আগামী কিছুদিনের মধ্যে এর প্রভাব বোঝা না-ও যেতে পারে। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে ধীরে ধীরে প্রভাব পড়তে শুরু করবে। খাদ্যশস্যের দাম ৩% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। তার চেয়েও বড় সমস্যা, ইউক্রেন পরিমাণমতো খাদ্যশস্য রপ্তানি করতে পারবে না। ফলে আফ্রিকা এবং ইউরোপের দেশগুলো ফের খাদ্য সংকটে পড়তে পারে। কাখোভকা বাঁধে কারা আক্রমণ চালিয়েছিল, তা এখনো স্পষ্ট নয়। দুই দেশই একে অপরের দিকে আঙুল তুলেছে।