অনলাইন ডেস্ক :
সারা বিশ্বের সাবেক-বর্তমান রাষ্ট্রনায়ক, সরকারি কর্মকর্তা, সেনা কর্মকর্তা, বিলিয়নেয়ারসহ আরও অনেকের গোপন সম্পদ ও লেনদেন ফাঁস করে দেওয়া ‘প্যান্ডোরা পেপার্স’ এর তালিকায় এসেছে ক্রীড়া জগতের শীর্ষ সারির দুই জনের নামও। ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচিন টেন্ডুলকার এবং ফুটবলের সাবেক খেলোয়াড় ও বর্তমানের তারকা কোচ পেপ গুয়ার্দিওলার আয় গোপন করার নথি ফাঁস হয়েছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) বলছে, ভারতের রাজ্য সভার সদস্য টেন্ডুলকার ও তার পরিবারের সদস্যরা ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে একটি অফশোর কোম্পানির মালিকানা কিনেছিলেন। প্যান্ডোরা পেপার্সের অংশ হিসেবে পানামা ল ফার্ম অ্যালকোগালের নথিপত্র তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে, সাস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পরিমানের শেয়ার মালিকানা আছে টেন্ডুলকার, তার স্ত্রী অঞ্জলি টেন্ডুলকার ও শ্বশুর আনন্দ মেহতার নামে। অফশোর কোম্পানিটি ২০১৬ সালে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর এর শেয়ারের মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ বুঝে পান শেয়ারহোল্ডাররা। ‘দা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, টেন্ডুলকার ও তার পরিবারের দুজন পান মোট ২৮ শেয়ারের সমপরিমাণ অর্থ।
>> শচিন টেন্ডুলকার (৯ শেয়ার): আট লাখ ৫৬ হাজার ৭০২ মার্কিন ডলার
>> অঞ্জলি টেন্ডুলকার (১৪ শেয়ার): ১৩ লাখ ৭৫ হাজার ৭১৪ মার্কিন ডলার
>> আনন্দ মেহতা (৫ শেয়ার): চার লাখ ৫৩ হাজার ৮২ মার্কিন ডলার
২০০৭ সালের ১০ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত এই অফশোর কোম্পানির শুরুতে মোট ৯০টি শেয়ার বিক্রি দেখানো হয়েছে। এর প্রতিটি শেয়ারের গড় ‘বাইব্যাক মূল্য’ ৯৬ হাজার ডলার। সেই হিসেবে ৯০ শেয়ারের মোট মূল্য ৮৬ লাখ ডলার। অঞ্জলি টেন্ডুলকার প্রথমে ৬০টি শেয়ারের সার্টিফিকেট পান আর তার বাবা পান ৩০ শেয়ারের সার্টিফিকেট। তাদের বাকি শেয়ারের বাইব্যাক মূল্য পাওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। এদিকে, গুয়ার্দিওলার ফাঁস হওয়া আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ২০০৩ থেকে ২০০৫ সালের সময়ের। স্পেনের টিভি চ্যানেল ‘লা সেক্সতা’ ও সংবাদপত্র ‘এল পাইস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১২ সাল পর্যন্ত অ্যান্ডোরায় একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছিল গুয়ার্দিওলার। পরে স্পেনের সাবেক প্রধান মন্ত্রী মারিয়ানো রাহোই ব্রেইয়ের সরকারের সময় ‘কর মওকুফ’ আইনের সুবিধা নিয়ে নিজের ওই আর্থিক জটিলতার ইতি টানেন স্প্যানিশ এই কোচ। এর আগ পর্যন্ত স্পেনের কর কর্তৃপক্ষকে ওই বিশেষ অ্যাকাউন্টের বিষয়ে জানাননি তিনি। ১৯৯০ থেকে ২০০১ পর্যন্ত বার্সেলোনায় খেলার পর পরের ছয় বছরে আরও চারটি ক্লাবে খেলেন এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। ২০০৩-২০০৫ পর্যন্ত খেলেন কাতারের ক্লাব আল আহলিতে। গুয়ার্দিওলার এক ঘনিষ্ঠ সুত্রমতে জানা যায়, ওই ক্লাবে খেলার সময়ে পাওয়া বেতনই তিনি ওই অ্যাকাউন্টে রেখেছিলেন। পরে কর মওকুফের সুবিধা নিয়ে ১০ শতাংশ কর দিয়ে প্রায় পাঁচ লাখ ইউরো বৈধ করেন তিনি। ২০০৭-২০১২ পর্যন্ত সময়ে (বার্সেলোনার কোচ থাকার সময়ে) গুয়ার্দিওলা ‘রিপোক্স ইনভেস্টমেন্ট’ নামে একটি নিবন্ধিত ব্যবসা চালাতেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমানের এই আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস নিয়ে ক্রীড়া বিশ্বে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলেও এ বিষয়ে এখনও কোনোরকম মন্তব্য করেননি বা আত্মপক্ষ সমর্থনে কিছু বলেননি টেন্ডুলকার বা গুয়ার্দিওলা।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা