জেলা প্রতিনিধি:
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দেড় বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিচ্ছে সরকার। ওইদিন থেকেই শুরু হবে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান। প্রথম দিন ৪-৫ ঘণ্টা ক্লাস হলেও পর্যায়ক্রমে ক্লাসের সময় ও সংখ্যা বাড়ানো হবে। গত রোববার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কথায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। তবে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরুর আগে ভাঙন ঝুঁকিতে পড়েছে ফরিদপুরের নদী তীরবর্তী অন্তত পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফরিদপুরে এখন বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যে পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাঙন ঝুঁকির মুখে, সেগুলোর সবকটিই যেকোনো মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ্মা ও মধুমতীর ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা স্কুল পাঁচটি হচ্ছে, আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিম চর নারাণদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গী গ্রামের বালিয়াডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চরহরিরামপুর ইউনিয়নের সবুল্লাহ শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামের সবুল্লাহ শিকদারের ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে টগরবন্দ, গোপালপুর ও পাঁচুড়িয়া ইউনিয়ন। টগরবন্দ ইউনিয়নের চাপুলিয়া, আজমপুর, চর আজমপুর ও চরডাঙ্গা, গোপালপুরের গোপালপুর, দিক নগর, কাতলাসুর ও খোলাবাড়িয়া, পাচুড়িয়ার বাঁশতলা, পাচুরিয়া ও চাঁদরা গ্রামগুলোতে ভাঙন পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। টগরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ইমাম হাসান জানান, তার ইউনিয়নে গত এক সপ্তাহে অন্তত ৪৯টি ভিটাবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া দুই একর ফসলি জমি ভেঙে গেছে। এ পর্যন্ত দুর্গতদের জন্য কোনো ত্রাণ সহায়তা বরাদ্দ না পাওয়া যায়নি। গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান ইকু বলেন, মধুমতি নদী তীর ভাঙতে ভাঙতে বাজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। এরইমধ্যে স্কুল-সংলগ্ন পাকা রাস্তাটি নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। নদী থেকে স্কুলের দূরত্ব মাত্র তিন/চার মিটার। দ্রুত এ ভাঙন রোধ করা না গেলে স্কুলটি যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। গত এক সপ্তাহে ইউনিয়নে অন্তত ১৩টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। চরভদ্রাসন উপজেলা সদরের হাজিডাঙ্গী ভাঙ্গার মাথায় সলেমান শিকদারের বাড়ি-সংলগ্ন এলাকায় শুরু হয়েছে পদ্মা নদীর ভাঙন। ওই এলাকার ৪০ মিটারব্যাপী এলাকাজুড়ে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি বাড়ি। ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহামুদ বলেন, পানি বাড়ার সঙ্গে জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নদীভাঙন রোধে কাজ চলছে। প্রয়োজনে নতুন করে ঝুঁকিপূর্ণ ভাঙনপ্রবণ স্থানে আবারও জিও ব্যাগ ফেলা হবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি