November 7, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, December 25th, 2023, 7:56 pm

ফের সরফরাজের জায়গায় রিজওয়ান

অনলাইন ডেস্ক :

এই তো, একটি সিরিজ আগেই টেস্ট ক্রিকেটে অসাধারণ প্রত্যাবর্তন হয়েছিল সরফরাজ আহমেদের। সুযোগটা পেয়েছিলেন তিনি মূলত মোহাম্মদ রিজওয়ানের টানা ব্যর্থতায়। সেই বাস্তবতা বদলে গেল দ্রুতই। আবারও টেস্ট একাদশে জায়গা হারালেন সরফরাজ। টেস্ট ক্যারিয়ারে নতুন গতি দেওয়ার উপলক্ষ পেলেন রিজওয়ান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বক্সিং ডে টেস্টের জন্য ১২ জনের দল ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। ম্যাচের সকালে ঘোষণা করা হবে একাদশ। তবে পার্থে আগের টেস্ট থেকে মেলবোর্নের একাদশে তিনটি পরিবর্তন নিশ্চিতভাবেই হচ্ছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বদলটি কিপিংয়ে। পার্থে দুই ইনিংসে ৩ ও ৪ রানে আউট হন সরফরাজ। কিপিংয়েও নিজের সেরা চেহারায় ছিলেন না ৩৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।

বিশেষ করে, মিচেল স্টার্কের গতির সামনে বেশ ভুগতে দেখা গেছে তাকে। সেটির খেসারতই দিতে হলো ৫৪ টেস্ট খেলা সাবেক এই অধিনায়ককে। অথচ এক সিরিজ আগেই টেস্ট ক্যারিয়ারের স্মরণীয় পুনরুজ্জীবন হয়েছিল তার। ২০১৯ সালে জায়গা হারিয়েছিলেন তিনি রিজওয়ানের কাছে। সেই রিজওয়ান টানা ১২ ইনিংসে ফিফটি করতে ব্যর্থ হওয়ার পর প্রবল সমালোচনার মুখে তাকে বাদ দেওয়া হয় নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে। প্রায় চার বছর পর টেস্ট খেলতে নেমেই ফেরার ম্যাচে ৮৬ ও ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন সরফরাজ। পরের টেস্টে প্রথম ইনিংসে করেন ৭৮। দ্বিতীয় ইনিংসে পরাজয়ের দুয়ারে দাঁড়িয়ে অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে দলকে সহায়তা করেন ম্যাচ ড্র করতে।

ম্যাচের সেরা ও সিরিজের সেরা, দুটিই ছিলেন তিনি। পরের সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আবার ভালো কাটেনি তার। গলে প্রথম টেস্টে আউট হন ১৪ ও ১ রানে। পরের টেস্টে একমাত্র ইনিংসে ১৪ রান করে অবসর নেন আহত হয়ে। তার ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে ব্যাটিং করতে নেমে রানে ফিরে অপরাজিত ফিফটি করেন রিজওয়ান। এরপর এই অস্ট্রেলিয়া সফর। আস্থা রাখা হয় শুরুতে সরফরাজের ওপরই। তবে প্রথম টেস্টের একাদশে তার জায়গা পাওয়া নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছিল পাকিস্তানের ক্রিকেটে। মূলত বাউন্সি উইকেটে তার ব্যাটিংয়ের সীমাবদ্ধতার কারণেই সমালোচনা হয়েছিল। পার্থে তার পারফরম্যান্সেও তা ফুটে ওঠার পর এবার জায়গা হারাতেই হলো তার। পার্থ টেস্টের পর মেলবোর্নে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে সরফরাজ আউট হন ৩৫ ও ১০ রান করে। ভিক্টোরিয়া একাদশের বিপক্ষে এই ম্যাচে রিজওয়ান করেন অপরাজিত ফিফটি।

তাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া আরেকটু সহজ হয়েছে পাকিস্তানের ম্যানেজমেন্টের জন্য। পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ অবশ্য সরফরাজের ক্ষেত্রে ‘বাদ’ শব্দটি ব্যবহার করতে চান না। “আমাদের মনে হয়েছে রিজওয়ান খেলার জন্য তৈরি আছে এবং সরফরাজকে আমরা খানিকটা বিরতি দিতে পারি, যেন নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে আবার ফিরতে পারে।

মূলত কন্ডিশনের কথা ভেবেই এটা ট্যাকটিক্যাল সিদ্ধান্ত এবং এই কন্ডিশনে প্রতিটি ক্রিকেটারের কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনার ব্যাপার।” এই ধরনের উইকেটে সফরাজের চেয়ে রিজওয়ানের ব্যাটিং বেশি কার্যকর হবে বলেই আশা করছে পাকিস্তান। ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়াতে দুটি টেস্ট খেলেছিলেন রিজওয়ান। ব্রিজবেনে করেছিলেন ৩৭ ও ৯৫, সিডনিতে প্রথম ইনিংসে শূন্যতে ফিরলেও পরের ইনিংসে ৪৫। সেই পারফরম্যান্সও আশা জোগাচ্ছে পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্টকে। একাদশে আর দুটি পরিবর্তনের একটি অবধারিতই ছিল।

পার্থে অভিষেক টেস্টে আলো ছড়ালেও চোটের কারণে সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন পেসার খুররাম শাহজাদ। এছাড়াও সেই টেস্টে ব্যাটে-বলে ব্যর্থতায় একাদশে জায়গা হারিয়েছেন অলরাউন্ডার ফাহিম আশরাফ। এই দুজনের জায়গা নেওয়ার লড়াইয়ে আছেন তিনজন- দুই পেসার হাসান আলি ও মির হামজা এবং অফ স্পিনার সাজিদ খান। পার্থে কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার ছাড়া খেলেছিল পাকিস্তান। মেলবোর্নের উইকেটে সেই সম্ভাবনা সামান্য। সাজিদের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা তাই প্রবল। তবে তুমুল বৃষ্টির কারণে সোমবার অনুশীলন করতে পারেনি পাকিস্তান।

এমনিতে ম্যাচের আগের দিন তাদের একাদশ ঘোষণা করে দেওয়ার রীতি থাকলেও আবহাওয়ার কথা ভেবেই এবার ১২ জনের দল দিয়েছে পাকিস্তান। কন্ডিশন-আবহাওয়া এরকমই থাকলে আবারও চার পেসার খেলানোর কথা ভাববে তারা। সেক্ষেত্রে হাসান ও হামজা, দুজনই খেলবেন। আর শেষ পর্যন্ত সাজিদ একাদশে থাকলে বাকি জায়গাটি নেবেন হাসান ও হামজার মধ্যে একজন। বয়সে ছোট হলেও অভিজ্ঞতায় এগিয়ে হাসান। ২২ টেস্ট খেলে ২৯ বছর বয়সী এই পেসারের শিকার ৭৮ উইকেট। একসময় টেস্ট একাদশে নিয়মিত জায়গা পেলেও এখন অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন ধার হারিয়ে।

সবশেষ ৫ টেস্টে তার শিকার স্রেফ ৬ উইকেট। ৩১ বছর বয়সী হামজা এখনও পর্যন্ত খেলেছেন ৩ টেস্ট। ২০১৮ সালে অভিষেকে আবু ধাবিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষ ১ উইকেট নেওয়ার পর বাদ পড়ে যান। এরপর ২০২২-২৩ মৌসুমে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২টি টেস্ট খেলে নিতে পারেন ১টি উইকেট। আবার জায়গা হারান দলে। এবার আরেকটি সুযোগের হাতছানি তার সামনে আছে। পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ সফল এই হামজা। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার উইকেট ৪১৮টি। ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ২৯ বার, ম্যাচে ৭ উইকেট ১০ বার। প্রথম টেস্টে ৩৬০ রানে জয়ী অস্ট্রেলিয়া কোনো পরিবর্তন আনেনি একাদশে।