ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং সাভার ও তারাবো পৌরসভায় ডেঙ্গুর মতো মশাবাহিত রোগের চিকিৎসা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ সাধারণ অসুস্থতার চিকিৎসা, প্রতিরোধ ও রেফারেলের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবার উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে ২০০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক।
আরবান হেলথ, নিউট্রিশন অ্যান্ড পপুলেশন প্রজেক্ট প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর একটি নেটওয়ার্ক স্থাপন করবে। যা স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং জনসংখ্যা পরিষেবাগুলোকে বিস্তৃত পরিসরে মাধ্যমিক এবং তৃতীয় স্তরের সুবিধাগুলোকে সরাসরি রেফারেল সিস্টেমের সঙ্গে সুযোগ করে দেবে। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত বিবৃতি অনুসারে শহরাঞ্চলে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ২৫ লাখ শিশু এই পরিষেবা পাবে।
ক্রেডিটটি বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে এসেছে, যা রেয়াতি অর্থায়ন প্রদান করে এবং পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ড সহ ৩০ বছরের মেয়াদ রয়েছে।
প্রকল্পটি নারীদের প্রসবপূর্ব পরিষেবাগুলোকে উন্নত করবে। যার লক্ষ্যমাত্রা হলো আড়াই লাখেরও বেশি নারী গর্ভাবস্থায় কমপক্ষে চারটি চেকআপ গ্রহণ করবে৷ এটি হাইপারটেনশন স্ক্রীনিং এবং প্রায় ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্কদের ফলোআপকেও সমর্থন করবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবায় আর্থিক ব্যয় কমাতে প্রকল্পটি সরকারি বহিরঙ্গন চিকিৎসালয় এবং পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক সহ নির্বাচিত বিদ্যমান জনস্বাস্থ্য সুবিধাগুলোকে সংস্কার করবে।
এই প্রকল্পটি পরিবেশগত স্বাস্থ্য এবং প্রতিরোধমূলক পরিষেবাগুলোর উপরও গুরুত্ব প্রদান করবে। যেমন মশা নিয়ন্ত্রণ, চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, এবং অসুস্থতা প্রতিরোধ করতে এবং মানব স্বাস্থ্যের উপর জলবায়ু পরিবর্তন এবং বায়ু দূষণের প্রভাবগুলো প্রশমিত করতে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার জন্য যোগাযোগ আচরনের পরিবর্তনে কাজ করবে।
এটি শহর এবং পৌরসভাগুলোতে সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব পরিচালনা করার জন্য একটি বহু-ক্ষেত্রের কৌশলের উন্নয়ন এবং বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রকল্পটি একটি জলবায়ু-ভিত্তিক ডেঙ্গু প্রারম্ভিক সতর্কতা ব্যবস্থা এবং প্রাদুর্ভাবের প্রতিক্রিয়ার ক্ষমতা চালু করবে এবং সেইসঙ্গে প্রজনন স্থানগুলো পরিষ্কার করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে।
তিনি বলেন,‘কিন্তু শহরাঞ্চলে সীমিত জনস্বাস্থ্য পরিষেবা রয়েছে। তাই, দরিদ্র মানুষ এবং বস্তিবাসীরা প্রায়শই আরও ব্যয়বহুল বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা নিতে বাধ্য হয়। অধিকন্তু, উচ্চ জনসংখ্যার ঘনত্ব, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দ্রুত নগরায়নের সঙ্গে, ডেঙ্গু আক্রান্তের হার বৃদ্ধি, সংক্রামক এবং অসংক্রামক রোগসহ নতুন স্বাস্থ্যঝুঁকি উদ্ভূত হচ্ছে।’
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশন অফিসার এবং প্রকল্পের টাস্ক টিম লিডার ইফফাত মাহমুদ বলেন, মশাবাহিত এবং সংক্রামক রোগের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়। প্রাপ্তবয়স্ক মশা এবং লক্ষ্যবিহীন লার্ভা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশে ফগিং বা স্প্রে করার উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা সম্পদের একটি দক্ষ ব্যবহার নয়।
বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ‘যেহেতু মশার জীবনচক্র জলবায়ু পরিস্থিতির দ্বারা প্রভাবিত হয়, প্রকল্পটি মশা নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগারকে শক্তিশালী করবে এবং উদ্ভাবনী মশা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং অন্যান্য সম্প্রদায়-ভিত্তিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে সক্ষমতা তৈরি করবে।’
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি