গত কয়েকদিন ধরে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের পাঁচটি ইউনিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় রোগীদের চিকিৎসা দিতে সমস্যায় পড়ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
জানা যায়, গত তিন দিন ধরে জি ব্লকের ৩ ও ৪ নং সার্জারি ওয়ার্ড, এ ব্লকের ১ নং সার্জারি ওয়ার্ড (পুরুষ) এবং আই ব্লক (চক্ষু) বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে। অন্যদিকে রেডিওলজি বিভাগ গত ১৮ দিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
হাসপাতালে আসা এক রোগীর আত্মীয় নাইমুল ইসলাম জানান, ‘ওয়ার্ডে আলো না থাকায় আমরা অন্ধকারে টয়লেটে পর্যন্ত যেতে পারছি না। চরম অসুবিধার মধ্যে রয়েছি আজ কয়েক দিন ধরে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।’
আরেক রোগীর স্বজন আরাফাত হোসেন শাওন বলেন, ‘হাসপাতালে ঠিকমত চিকিৎসা পাই না। তারপরও আসতে হয়। কারণ আমাদের যাওয়ার কোন জায়গা নেই। এখন এখানে বিদ্যুৎ পর্যন্ত নেই। এভাবে মনিটরিং ছাড়া হাসপাতাল চলতে পারে না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন নার্স জানান, রাতের অন্ধকারে তারা রোগীদের সঠিকভাবে ইনজেকশন দিতে পারেন না।
ওই নার্স বলেন, ‘আমরা বর্তমানে মোমবাতি ও চার্জার লাইটের সাহায্যে আমাদের কাজ করছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোটি কোটি টাকা খরচ করে গেট নির্মাণ করছে, যা অপ্রয়োজনীয়। বৈদ্যুতিক তারগুলো ঠিক করতে এবং জেনারেটরের মাধ্যমে অবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করতে অর্থ ব্যয় করা উচিত ছিল।’
ওই নার্স আরও বলেন, গেট নির্মাণ না করে কীভাবে রোগীদের আরও কার্যকরভাবে চিকিৎসা দেয়া যায় তার ওপর জোর দিতে হবে।
বিদ্যুৎ সংকটের ব্যাপারে কথা বলার জন্য হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলামকে ইউএনবির পক্ষ থেকে একাধিকবার কল দিলেও, তিনি রিসিভ করেন নি।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মনিরুজ্জামান শাহিন বলেন, ‘বর্তমানে সার্জারি ওয়ার্ডগুলোতে বিদ্যুৎ নেই। আর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রেডিওলজি বিভাগ। এতে করে সরকারিভাবে পরীক্ষা করানো যাচ্ছে না। চিকিৎসকরা সঠিকভাবে চিকিৎসা দিতে পারছে না। নার্সরাও সেবা দিতে পারছে না। রোগীরা বেকায়দায় রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, হাসপাতালটি ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ লাইন মেরামত করা হয়নি। এজন্য বিভিন্ন স্থান থেকে বিদ্যুতের কেবল নষ্ট হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। ’
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি